বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মোটা অংকের মুক্তিপণের জন্য মা ও ছেলেকে অপহরণকারী সিআইডি’র একজন এএসপি, এস আই ও কনস্টবল ও তাদের সহযোগী মাইক্রোবাসের চালককে পুলিশ জনতা আটক করেছে। তাদের বুধবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত তাদেরকে অপহৃত ও অপহরণকারীদের দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে সিআইডি রংপুর অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, দিনাজপুরে আটককৃত সিআইডি রংপুর অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তবে তারা অফিসিয়ালী কোন এসাইনমেন্টে যায়নি। যদি ঘটনা সঠিক হয়ে থাকে তবে তার দায় ভার তাদের ব্যাক্তিগত। সিআইসি’র নয়।
জানা গেছে, সোমবার দিনগত রাত ১২ টার দিকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ৫নং আবদুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের সোলেমান শাহ মহল্লার জনৈক লূৎফর রহমানের বাসায় ১০ থেকে ১২ সাদা পোষাকধারী প্রবেশ করে। এসময় তারা তাদেরকে সিআইডি পরিচয় দেয়। এসময় তারা বাড়ীর আলমারী ভাংচুর করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে নেয়। যাওয়ার সময় তারা বাসায় থাকা লুৎফর রহমানের স্ত্রী জহুরা বেগম (৪৫) ও ছেলে জাহাঙ্গীর (২৬) নিয়ে যায়। বরকা পড়তে দেরী হওয়ায় অপর আরেকজন মহিলাকে তারা ছেড়ে চলে যায়। পরে বাসার লোকজন স্থানীয় থানা, দিনাজপুরের ডিবি অফিসে খোজ নিয়ে জানতে পারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন কোন অভিযান চালানো হয়নি।
এভাবে রাত গড়িয়ে সকাল হলে অপহ্রত জাহাঙ্গীরের মোবাইল নম্বর থেকে বাসায় ফোন করে অপহরনকারীকা। তারা ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। টাকা না দিলে অপহৃতদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দর কষাকষির এক পর্যায়ে ৮ লক্ষ টাকায় রফাদফা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে প্রথমে রানীরবন্দর, পরে ১৩ মাইল গড়েয়া এভাবে স্থান পরিবর্তন করতে থাকে অপহরনকারীরা। এর মধ্যে বাসার লোকজন পুলিশ প্রশাসনকে জানালে তারা মুক্তিপনের টাকা দেয়ার সময় তাদেরকে আটকের পদক্ষেপ নেয়।
শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে টাকা নিয়ে আসতে বলা হয়। এসময়ে পুলিশের পাশাপাশি অপহৃদের স্বজনেরা মটর সাইকেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তাসহ পূরো এলাকায় অবস্থান নেয়। সন্ধার আগে কালো রংয়ের মাইক্রোবাস নিয়ে টাকা নিতে আসে অপহরনকারীরা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করলে ওৎ পেতে থাকা স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে ১০ মাইল এলাকায় তাদের আটক করে। উত্তম মধ্যম দেয় অপহরনকারীদের। মাইক্রোবাস থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত জোহরা বেগম ও জাহাঙ্গীরকে। পরে তাদের চিরিরবন্দর থানায় নিয়ে যাওয়া। প্রাথমিকভাবে অপহৃত তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তারা হলেন রংপুর সিআইডি অফিসের এএসপি সারোয়ার কবির সোহাগ, এসআই হাসিনুর রহমান ও কনষ্টবল আহসানুরল হক। এ ব্যাপারে রংপুর সিআইডি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আতোহার রহমান জানান, এএসপি সোহাগ সর্বশেষ ২৩ আগষ্ট অর্থাৎ অপহরনের দিন অফিস করেছেন। এসআই হাসিনুর ও কনষ্টবল আহসানুল ২১ আগষ্ট থেকে ছুটিতে রয়েছেন। এছাড়া এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন থানায় মামলা নেই এবং অফিসিয়ালি কোন এসাইনমেন্টও ছিল না। বিষয়টি তাদের ব্যাক্তিগত। এর দায় সিআইডি’র নয়।
তবে অপর একটি সুত্র দাবী করেছে গত মার্চ মাসে শফিউল আলম সিআইডি রংপুর কার্যালয়ে অপহৃত জোহরা বেগমের স্বামী লুৎফর রহমানকে দেয়া ৩০ লক্ষ টাকা ফেরত না দেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন। তবে এই অভিযোগটি অফিসিয়ালী রিসিপ্ট বা ডোকেট করা হয়নি বলে সিআইডি’র সুত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া থানায় এজাহার দাখিলের পর প্রসিডিয়র মেনটেন্ট করে যে কোন মামলার ছায়া তদন্ত বা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে পারে। তদন্তের ভার না থাকলে স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে অভিযুক্তদের আটক করতে পারে। মামলা ছাড়া সিআইডি’র কোন কর্মকর্তা নিজ উদ্যোগে কাউকে গ্রেফতার করার বিষয়টি এখতিয়ার বহিভ‚ত বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মত প্রকাশ করেছে।
অপরদিকে লুৎফর রহমানকে ৩০ টাকা প্রদানের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেননা লুৎফর রহমান একজন ভাঙ্গা লোহা লংকর ব্যবসায়ী। ফলে এর পিছনে বড় ঘটনা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।