মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ধর্মীয় উন্মাদনার ভিডিও যারা ভাইরাল করছে, তারা উলু-খাগরা। সাম্প্রদায়িকতায় উসকানি দিচ্ছে ভারতের রাজনৈতিক আবহ। কয়েক বছর আগে দিল্লির অদূরে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল মোহাম্মদ আকলাখকে। ফ্রিজে গরুর মাংস আছে, এই সন্দেহে। গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল সেই ঘটনার পরে।
দাদরির পর উত্তর ভারত জুড়ে অসংখ্য দাদরি হয়েছে। কোথাও মুসলিম বৃদ্ধের দাড়ি কেটে নেওয়া হয়েছে। কোথাও পেটানো হয়েছে গাছে বেঁধে। কোথাও খুন করা হয়েছে। ভাইরাল ভিডিও-তে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি উঠেছে। মুসলিম ব্যক্তিকে বলতে বাধ্য করা হয়েছে সেই সেøাগান। ভারতে একের পর এক এমন ঘটনা কার্যত স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার কানপুরে যা ঘটেছে, তা নিয়ে এখন আর তেমন কারও মাথা ব্যথা নেই। এক মাঝবয়সি মুসলিম ব্যক্তিকে মেয়ের সামনে মারা হয়েছে কানপুরে। মেরেছে বজরং দলের কর্মীরা। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করার পরে বজরং সমর্থকরা থানা ঘেরাও করে। ভিডিওতে নয় জনের ছবি দেখা গেলেও সকলকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
বামদের অসংখ্য ভুলের মাসুল এখনো দিতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের দুই প্রজন্মকে। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে গোটা ভারতে যখন দাঙ্গার আগুন জ্বলছে, পশ্চিমবঙ্গ তখন সম্প্রীতির উদাহরণ তৈরি করেছিল। ধর্মীয় উসকানির সামান্য আশঙ্কা থাকলেও কড়া ব্যবস্থা নিত প্রশাসন।
ধর্মনিরপেক্ষতার নিয়মানুবর্তিতা তৈরি হয়েছিল সমাজে। সে কারণেই গুজরাট দাঙ্গায় সব হারিয়ে কুতুব উদ্দিন পশ্চিমবঙ্গে এসে নিজের আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিল। ভারতের অনেকেই জানতো, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরালায় অনেক সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু ধর্মীয় বিদ্বেষ নেই।
এই বাতাবরণ তৈরির কাজটা আসলে অভিভাবকের। একটি রাজ্যের অভিভাবক তার শাসক এবং বিশিষ্টজনেরা। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার সেই বীজটি পুঁতে দিতে পেরেছিলেন সেখানকার অভিভাবকরা।
বর্তমান ভারতের যারা অভিভাবক, তারা ঠিক তার উল্টো কাজটি করছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার মন্ত্র থেকে সরতে সরতে তারা এক অসহিষ্ণু সাম্প্রদায়িক বাতাবরণ তৈরি করে ফেলেছেন। ধর্মের নামে এখানে লাভ জিহাদ বিল হয়। ধর্মের নামে তৈরি করা হয় নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খুল্লামখুল্লা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন।
অভিভাবকের আচরণ যখন এমন হয়, তখন তার সন্তানদের পক্ষে যা করা সম্ভব, গোটা উত্তর ভারত জুড়ে ঠিক সেই ঘটনাই ঘটছে। আইন হাতে তুলে নিয়ে ধর্মের জিগির তুলে রাস্তায় নেমে পড়েছে ধর্মোন্মাদের দল। তারা মারধর-খুন করছে, ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করছে।
ভারতীয় সংবিধানে ধর্মের নামে উস্কানি ছড়ালে কড়া শাস্তির বিধান আছে। কিন্তু সেই আইন তখনই প্রয়োগ করা যায়, পুলিশ যখন সেই মোতাবেক চার্জশিট সাজায়। যে পশ্চিমবঙ্গের কথা একটু আগে হচ্ছিল, সেখানে পুলিশ ঠিক সেই কাজটিই করতো। কিন্তু উত্তর ভারতের বহু জায়গায় পুলিশ সেই কাজটি করছে বলে মনে হচ্ছে না। লঘু ধারায় চার্জশিট বানিয়ে তারা অপরাধীদের জামিনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পুলিশ এ কাজ করছে কারণ, তাদের উপর রাজনৈতিক চাপ আছে। আইন যদি ব্যবহারই করা না হয়, তাহলে অপরাধীর শাস্তি হবে কী ভাবে? কীভাবে সভ্য হবে সমাজ?
ধর্ম নিয়ে যে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি চলছে এখন ভারতে, বিরোধীরা তার উল্টো দিকে ঢাল তৈরি করতে পারতেন। কিন্তু বাস্তবে তারা তা করছেন না। ধর্মোন্মাদ মানুষের মন পেতে তারাও ধর্মের তাস খেলছেন। ফলে সার্বিক ভাবে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সমাজ। একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। সূত্র : ডয়েচেভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।