নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিভিন্ন সময়ে নানা সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে নিয়মিত বলা হচ্ছিল, কোথাও যাচ্ছেন না লিওনেল মেসি, থাকছেন বার্সেলোনাতেই। তারপরও ক্লাব সমর্থকদের মনে দুর্ভাবনা তো ছিলই, কারণ কিছু জটিলতাও যে ছিল। তবে সেসব নিমিষে মিলিয়ে গিয়েছিল জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকা জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছুটি কাটিয়ে বার্সেলোনায় ফেরায়। হঠাৎই যেন পরিস্থিতি পুরো ১৮০ ডিগ্রি বদলে গেল! বার্সেলোনার সঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করতে বেতন অর্ধেক কমিয়ে নিচ্ছেন মেসি- এমন খবর কদিন আগেই নিশ্চিত করে জানিয়েছিল ইউরোপের প্রায় সংবাদমাধ্যম। কিন্তু বার্সেলোনার আর্থিক অবস্থার জটিলতার কারণে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হচ্ছিল না। সেই আর্থিক জটিলতাই শেষ পর্যন্ত শেষ টেনে দিল মেসি আর বার্সার সম্পর্কের।
নানারকম বাধার কারণে ক্লাবের ইতিহাসে সেরা খেলোয়াড়কে নতুন চুক্তিতে ফেরাতে পারল না বার্সেলোনা। নিজেদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ সময় গতপরশু মধ্যরাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতালান ক্লাবটি। হৃদয় ভাঙা সেই বিবৃতিতে তারা লিখেছে, ‘বার্সা এবং লিও মেসির মধ্যে সম্মতি এবং দুই পক্ষের মধ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিষ্কার ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও (স্প্যানিশ লা লিগার নিয়মে আরোপ করা) আর্থিক ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতার কারণে দুই পক্ষের এই সম্মতিকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’ পরে বাংলাদেশ সময় গতকাল বিকেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেছেন ক্লাব সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা, ‘অত্যান্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে, লিওকে (মেসি) আর আমাদের দলের সঙ্গে রাখতে পারছি না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। সে ক্লাবের ইতিহাসের সেরা ফুটবলার, বিশ্বেরও। ক্লাবের জন্য, ফুটবলের জন্য তার যে অবদান সেটি আজীবন মনে রাখবে বার্সা। সে সবকিছু পাওয়ার যোগ্য দাবীদার। সে এখানে (ন্যু ক্যাম্পে) থাকতে চেয়েছিল, আমরাও রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারলাম না। সবকিছুর উপরে ক্লাবই যে বড়। তার সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা।’
মাত্র ১৩ বছর বয়সে যে ঠিকানায় নাম লিখিয়ে ক্রমেই হয়ে ওঠেন সবার সেরা, ক্লাবের মধ্যমণি। হয়ে ওঠেন ফুটবলের মহাতারকাদের একজন। স্পেনের ক্লাবটির হয়ে সব শিরোপাই জিতেছেন অন্তত তিনবার করে। এই ক্লাবের হয়েই আলো ছড়িয়ে জিতেছেন ছয়টি ব্যালন ডি’অর। সেই প্রিয় ক্যাম্প ন্যু মেসি কখনও ছাড়তে পারেন- এমন ভাবনা অনেকের কাছেই ছিল অসম্ভব। কিন্তু ২০২০ সালের অগাস্টে সেই অভাবনীয়কেই সামনে আনেন আর্জেন্টাইন তারকা। বলে দেন, ‘আর নয়’। চুক্তির একটি ধারা কার্যকর করে ফ্রি ট্রান্সফারে ছাড়তে চেয়েছিলেন বার্সেলোনা। কিন্তু ওই ধারা কার্যকরের সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, যেতে হলে রিলিজ ক্লজের পুরো অর্থ দিয়েই যেতে হবে। অনেক টানাপোড়েনের পর অনিচ্ছায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মেসি।
এরপর নানা জটিলতায় পদ ছাড়তে বাধ্য হন ওই সময়ের ক্লাব সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউ। হুয়ান লাপোর্তা ভোটে জিতে দায়িত্ব নিয়েই ঘোষণা দেন, মেসিকে ধরে রাখাই তার মূল এজেন্ডা। কিন্তু দুই পক্ষের আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় সময় পেরিয়ে যায়; গত ৩০ জুন ফ্রি এজেন্ট হয়ে যান রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার। পরিস্থিতি পাল্টানোয় এবার থেকেই যেতে চেয়েছিলেন। বাধ্য হয়েই মেসিকে এখন খুঁজে নিতে হবে নতুন ঠিকানা।
চুক্তি শেষের সময় মেসির ভাবনায় অবশ্য সেসব কিছু ছিল না। তখন যে তিনি ব্যস্ত ছিলেন জাতীয় দলের হয়ে স্বপ্ন পূরণের মিশনে। গত ১০ জুন ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা উৎসব করে আর্জেন্টিনা, জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা খরা কাটে ফুটবল মহাতারকার। এর চার দিন পরই স্পেনের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর আসে, বার্সেলোনার সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে রাজি হয়েছেন মেসি। আগের দিন রাতে মার্কা, মুন্দো দিপোর্তিভো, স্পোর্তসহ স্পেনের বেশ কয়েকটি পত্রিকা সূত্রের বরাত দিয়ে তাদের প্রতিবেদনে বলে- আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির চুক্তি আনুষ্ঠানিক রূপ পাবে। তবে পরশু স্থানীয় সময় বিকেল থেকে হঠাৎ দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করে। লা লিগার নিয়ম-কানুনের জটিলতায় মেসির চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। ইচ্ছে থাকা সত্তে¡ও প্রিয় ক্লাবে আর থাকা হলো না ক্লাবটির ইতিহাসের রেকর্ড শিরোপাজয়ী ও রেকর্ড গোলদাতা মেসির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।