মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
স্বাস্থ্যের অবনতি সত্ত্বেও জামিন থেকে বঞ্চিত ভারতের প্রবীণ রাজনৈতিক বন্দী ৮৪ বছর বয়সী পুরোহিত স্টান স্বামীর মৃত্যু আইনজীবী, লেখক, রাজনীতিবিদ এবং নেতাকর্মীদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। ঝাড়খণ্ড রাজ্যের উপজাতি সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্য পাঁচ দশক ধরে লড়াই করা পুরোহিত ও মানবাধিকার কর্মী ফাদার স্ট্যান স্বামী ২০২০ সালের অক্টোবরে গ্রেফতার ও কঠোর সন্ত্রাসবাদের ভীমা-কোরেগাঁও হিংসা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তিনি প্রায় এক বছর জেলবন্দি ছিলেন।
পরিণত পার্কিনসন রোগে স্বামীর দুর্বল অবস্থা সত্ত্বেও গত মাসে তিনি জেলখানার কোভিড-১৯ কারাগারে বন্দী হওয়ার পরে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছিল। আদালতে বারবার তার প্রি-ট্রায়াল জামিন অস্বীকার করা হয়।
আদালতের নির্দেশে স্বামীকে অবশেষে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং একটি ভেন্টিলেটর লাগানো হয়েছিল। তবে একজন চিকিৎসক বোম্বে হাই কোর্টকে জানিয়েছেন, কোভিড-১৯-সংক্রান্ত জটিলতার পরে সোমবার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যগত কারণে পুরোহিতের জরুরি জামিনের আবেদন করার সময় নির্ধারিত ছিল, তবে তা ছিল খুব দেরিতে।
ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা খ্রিস্টান মিশনারি স্ট্যান রোববার থেকেই ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিলেন। সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২৮ মে থেকে মুম্বাইয়ের হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। স্টান স্বামী ও তার সঙ্গীদের আদালতের নির্দেশে নভি মুম্বইয়ের তালোজা জেলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তারা বারবার জেলের অব্যবস্থা ও অপর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থার বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি চিকিৎসা করানোর জন্য বহুবারই জামিন চেয়েছেন। এনআইএ তাকে চিকিৎসা করানোর জন্য জামিন দিতেও নারাজ ছিল। তারা বলেছিল ওঁর কোনো রোগ নেই। যদিও জানা গেছে তিনি পারিকনসন রোগে ভুগতেন। স্টান স্বামীকে তারা মাওবাদী অ্যাখ্যা দিয়ে বলেছিল, তিনি দেশে অস্থিরতা আমদানি করেছেন।
বিরোধী কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ টুইট করেছেন: ‘ভারতের রাষ্ট্র্র যন্ত্রের মধ্যে কে এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হবে? কোনো ভুল করবেন না - এটাই হ’ল ভারতীয় রাষ্ট্র যা ফাদার স্টান স্বামীকে হত্যা করেছে, যিনি সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রবল ক্রুসেডার ছিলেন’। লেখক সোনিয়া ফ্যালারো বলেছেন: ‘ফাদার স্টান স্বামী মারা যাননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। সরকার তাকে হত্যা করেছে, তার সঙ্গে এ আচরণ না করা হলে তিনি বেঁচে না থাকতেন। উচ্চ আদালতের আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন যে, ‘রাষ্ট্রের হাতে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণের জন্য’ ভারতীয় রাষ্ট্র ‘তার প্রিয়জন এবং তার সমস্ত নাগরিকের কাছে’ দায়বদ্ধ। বিজেপির বিরুদ্ধে বক্তব্য রখায় কবি, আইনজীবি, কর্মী ও লেখকাসহ স্বামীর আরও ১৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, হিংসাত্মক মাওবাদী গোষ্ঠীর সাথে যোগসূত্র এবং মোদিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগ তিনি কঠোরভাবেই অস্বীকার করেছিলেন।
তবে, স্বামীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে প্রমাণ ও প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও, জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ), স্বামীর তদন্তকারী ফেডারেল এজেন্সি তার জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেছিল, যদিও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। আর তাদের অনুরোধ সত্ত্বেও, তাকে বাড়িতে সুস্থ হতে দেওয়া হয়নি। এনআইএর অনুরোধে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
কবি ও লেখক মিনা কান্ডসামি বলেছেন: আসুন এটিকে নিছক মৃত্যু না বলি, এটি বিচারিক হত্যা এবং প্রত্যেকেই এতে জড়িত। আইনজীবী ও কর্মী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘আমার জানা একজন সম্ভ্রান্ত ও দয়ালু ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের বিচার ব্যবস্থাও জটিল। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।