মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জল্পনা চলছিল গত কয়েক মাস ধরেই। পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করে মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোটে ভাঙন ধরাতে চেষ্টা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের কয়েক দফায় দিল্লি যাত্রা এবং নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক সেই জল্পনায় আরও ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু শিবসেনার চালে বিজেপির সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে।
কিন্তু সোমবার বিধানসভার কার্যনির্বাহী স্পিকারকে হেনস্থার অভিযোগে ১২ জন বিজেপি বিধায়ককে ১ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার ঘটনায় আপাতত সেই আশঙ্কার সমাপ্তি ঘটেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। পাশাপাশি, তাদের ধারণা এই পদক্ষেপের ফলে পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেবে শিবসেনা নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের অবস্থান আপাতত ‘নিরাপদ’। জোট সরকারের দ্বিতীয় প্রধান শরিক এনসিপি-র প্রধান শারদ পাওয়ার সম্প্রতি জাতীয় রাজনীতিতে ফের ‘তৎপর’ হয়েছেন। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর এবং একাধিক বিরোধী নেতার সঙ্গে তার বিভিন্ন বৈঠকে স্পষ্ট, জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী একটি মঞ্চ গড়তে শরদ সক্রিয়। বিজেপি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে মহারাষ্ট্রে ‘রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ’ ফিরে পেতে চাইছে দল। কারণ, জনসংখ্যার হিসেবে ভারতের বৃহত্তম রাজ্যে বিজেপি বিরোধী তিন দল এক হলে লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে পদ্মশিবির।
যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে এর কোনও সমর্থন কোনও তরফেই মেলেনি। তবুও ওই সূত্রের দাবি, মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা পুনর্দখলের জন্য একাধিক সম্ভাবনা যাচাই করেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা। তার মধ্যে প্রাথমিক ভাবে ছিল, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে ফের সরকারের প্রধান করে শিবসেনাকে উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব দেয়ার প্রস্তাব। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর নভেম্বরে একই প্রস্তাব খারিজ করেছিল শিবসেনা। এ বারও তা-ই করেছে বলেই সূত্রের দাবি। ওই সূত্রের আরও দাবি, দ্বিতীয় বিকল্প ছিল, শিবসেনার ফডণবীসকে ‘অপছন্দ’ হওয়ায় তাকে রাজ্যের রাজনীতি থেকে দিল্লি পাঠিয়ে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে জোট সরকার গড়ার প্রস্তাব। তৃতীয় বিকল্প হিসেবে আলোচনা চলছিল, পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে মুখ্যমন্ত্রী করার। সে ক্ষেত্রে লাভ দু’টি। প্রথমত, ইউপিএ জোটে ভাঙন ধরানো সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, শারদের সাহায্যে বিদর্ভ এবং কোঙ্কণ উপকূলের পর পশ্চিম মহারাষ্ট্রেও বিজেপি’র শক্তিবৃদ্ধির সুযোগ।
বিধায়ক সংখ্যার হিসেবে শিবসেনা বা এনসিপি, কোনও একটি দলকে পাশে পেলেও মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গড়তে পারত বিজেপি। ২৮৮ বিধায়কের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। বিজেপি-র বিধায়ক সংখ্যা ১০৬। যদিও সোমবার ১২ জন বিধায়কের সানপেনশনের জেরে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪। শিবসেনার ৫৬, এনসিপি-র ৫৪ এবং কংগ্রেসের ৪৪ জন বিধায়কের পাশাপাশি ৮ সতন্ত্র এবং কয়েকটি ছোট দলের সমর্থন রয়েছে ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’ সরকারের উপর। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীসকে সমর্থনের ক্ষেত্রে অবশ্য বিজেপি’র অন্দরেই মতবিরোধ রয়েছে। বিজেপি’র সাবেক পরিষদীয় দলনেতা একনাথ খাড়সে কয়েকমাস আগেই ফড়ণবীসের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী রাজনীতির করার অভিযোগ তুলে এনসিপি-তে যোগ দিয়েছেন। মহারাষ্ট্র বিজেপি-র একাংশের মতে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই এনসিপি-র সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হয়েছে তাদের।
সোমবার স্পিকারের আসনে বসে বিধানসভা অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন শিবসেনা বিধায়ক ভাস্কর যাদব। অভিযোগ, সে সময় বিজেপি’র ১২ জন বিধায়ক তাকে হেনস্থা করেন। এর পরেই দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব পেশ করে সরকারপক্ষ। তা মঞ্জুরও করেন কার্যনির্বাহী স্পিকার যাদব। গত ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভার স্পিকার পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নেন কংগ্রেসের নানা পাটোলে। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই নতুন স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার কথা। জল্পনা ছিল, সরকারপক্ষকে চাপে ফেলতে স্পিকার পদে লড়তে পারে বিজেপি। কিন্তু ১২ বিধায়ক সাসপেন্ড হওয়ায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সংখ্যার লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: এবিপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।