Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুম্বাইয়ে টিকার বদলে লবণ পানি দেয়ার ঘটনায় যা জানা গেল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২১, ৭:২২ পিএম

করোনা মহামারির মধ্যেই গত সপ্তাহে ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাইয়ে প্রায় ২ হাজার লোককে জাল ভ্যাকসিন দিয়ে ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল। মোট সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে এই ঘটনায়। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪ জনকে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে এক মহিলাও।

গত দু’মাস ধরে মুম্বাইয়ের প্রায় এক ডজন বেসরকারী টিকাদান সাইটগুলোতে ভ্যাকসিন ডোজের পরিবর্তে লবণ পানির ইনজেকশন সরবরাহকারী একটি চক্রে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। কর্তৃপক্ষের মতে, চিকিৎসক পেশাদারসহ জড়িতরা নকল ডোজ প্রতি ৮৫০ থেকে ১ হাজার টাকা চার্জ আদায় করেছেন। সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে ২০ হাজার ডলারের বেশি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মুম্বইয়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা বিশাল ঠাকুর বলেছেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।’

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন শট নিতে মুম্বাইয়ের শিবিরগুলোতে ২ হাজারেরও বেশি লোক গিয়েছিলেন। অনেকেই জানান, তারা ভারত সরকারের অনলাইন পোর্টাল ট্র্যাকিংয়ে ভ্যাকসিনগ্রহীতাদের মধ্যে নিজেদের নাম দেখতে না পেয়ে এবং সংস্থাটি যে হাসপাতাগুলোর অধিভুক্ত বলে দাবী করেছিল, তাদের প্রাপ্ত টিকা সনদের সাথে সেই নামগুলো না মিলায় তারা সন্দেহ করা শুরু করে। এই কেলেঙ্কারির একজন শিকার নেহা আলশি টুইটারে বলেন, ‘আমাদের আসলে কোভিশিল্ড দেয়া হয়েছে, নাকি কেবল গ্লুকোজ বা মেয়াদোত্তীর্ণ/বাতিল ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ মুম্বাইয়ের উচ্চ আদালতে জনস্বার্থের মামলা দায়ের করা আইনজীবী সিদ্ধার্থ চন্দ্রশেখর এই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ‘হৃদয়বিদারক’। আদালত বলেছিল যে, এটি সত্যিই মর্মান্তিক যে জাল টিকা দেয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মুম্বাই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) বিশ্বাস নাংরে পাটিল জানিয়েছেন, প্রতারণার ফাঁদ পেতে সংগৃহীত ১২ লাখ ৪০ হাজার রুপি উদ্ধার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত মণীশ ত্রিপাঠী ও মহেন্দ্র সিংহের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, আটটি ভুয়া ভ্যাকসিন শিবিরের আয়োজন করেছিল অভিযুক্তেরা। পুলিশের দাবি, এক অভিযুক্ত জানিয়েছে, মুম্বাইয়ের এক হাসপাতাল থেকে তারা কোভিশিল্ডের ভায়াল জোগাড় করেছিল। কোভিশিল্ডের নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউট এই ঘটনার পরে বৃহন্মুম্বাই পুরসভাকে (বিএমসি) জানিয়েছে, ভায়ালগুলির ব্যাচ নম্বর চিহ্নিতকরণের কাজে সাহায্য করবে তারা।

তবে মেডিকেল কেলেঙ্কারি ভারতে নতুন কিছু নয়। সেখানে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় মুনাফাকারীরা নকল ওষুধ এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে। স্থানীয় আইন প্রণেতাসহ শতাধিক লোক সেখানে নকল ভ্যাকসিন পেয়েছিল কিনা তাও তদন্ত করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুলিশ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা প্রকল্প অনুসারে, ভারত ৩৪ কোটি ডোজেরও বেশি ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছে, তবে জনসংখ্যার ৫ শতাংশেরও কম সম্পূর্ণরূপে টিকা পেয়েছে। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার নতুন কেস এবং প্রায় এক হাজার কোভিড মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই সংখ্যা দু’মাস আগের তুলনায় অনেক কম হলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের সরকারী পরিসংখ্যানের তুলনায় প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ