মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত ২৪ জুন অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকটি আঞ্চলিক দলগুলিকে মোদির শর্ত মেনে ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহন করার বিষয়ে ছিল। নির্বাচনী সীমানা পুনর্র্নিমাণের কাজটি গণতান্ত্রিক বিশ্বের যে কোনও জায়গায় একটি পরিপূর্ণ অনুশীলন। নরেন্দ্র মোদির সরকার জম্মু-কাশ্মীর বা জেএন্ডকে’র অঞ্চল দু’টিতে একটি শক্তিশালী সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে, যা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাবেক রাজ্যটিতে হিন্দুত্ববাদের আদর্শিক ধারায় একটি ‘হিন্দু মুখ্যমন্ত্রী’ দেখতে চায়।
এই সরকার কূটনীতি বা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির দাবির সাথে তার আদর্শিক প্রকল্পগুলির খুব কমই সামঞ্জস্য রেখেছে। সর্বোপরি, তারা রিজিওনাল কম্প্রিহেন্সিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) থেকে বেরিয়ে এসে সমগ্র ভারতকে সাম্প্রদায়িকভাবে মেরুকরণের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (২০১৯) আরোপ করে এবং তারা এর জন্য সাবধানতায় নির্মিত বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতেও প্রস্তুত ছিল। জেএন্ডকে নিয়ে বৈঠকের পর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইট করা তথাকথিত ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ শক্তিশালী করার বিষয়ে আরও দৃঢ় পদক্ষেপের ওপর বিশ্বাস করা যেত, যদি না তারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নাগরিকদের একটি অংশের উপর ইন্টারনেট ব্যবহার ও তথ্য প্রচারের ওপর দীর্ঘতম ও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, এবং সমস্ত বিক্ষোভ বন্ধ করার জন্য হাজার হাজার কাশ্মীরি রাজনীতিবিদকে আগেভাগেই কারাগারে প্রেরণ করত।
মোদির সরকার জেএন্ডকে’র বিষয়ে পরিষ্কার যা জানিয়েছে, তা হল আগে মোদির শর্তে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু প্রথমে অঞ্চলটির পূর্বের রাজ্যাধিকার পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন জেএন্ডকে’র নেতারা। এতে মোদি রাজি হননি এবং কোনও ইতিবাচক প্রতিশ্রুতিও দেননি। তিনি পরে টুইট করেছেন যে, ‘নির্বাচন দ্রুত হতে পারে, তাই জেএন্ডকে একটি নির্বাচিত সরকার পেলে, এর উন্নয়নের গতিবেগ শক্তি পাবে।’ শাহ টুইট করেছেন যে, ‘জাতীয়তা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সংসদে করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অ-সীমানা করণ অনুশীলন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।’
জেএন্ডকে’র প্রতি নতুনভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে সেখানে এমন হিন্দুত্ববাদের প্রক্রিয়ার উপর জোর দিলে হিন্দু-মুসলিম ধারায় আরও বেশি মেরুকরণ, উপত্যকায় আরও সন্দেহ, নির্বাচনের ক্ষেত্রে এক বৃহত্তর অনুরণন বহন করতে পারে, যাতে সম্ভবত আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হবে। তবে, মোদির অন্ধ-বিশ্বাসীদের চক্রের বাইরের লোকরা বিশ্বাস করেন যে, মোদির সরকারের এই ইউ-টার্নের নেপথ্যে আরও কিছু শক্ত কারণ রয়েছে। বিজেপি’র কাশ্মীর নীতি বাস্তবতার নিরেট প্রাচীরে ধাক্কা খেয়েছে এবং তারা অশান্ত আফগানিস্তানের বৃহত্তর পটভূমির বিরুদ্ধে এবং বৈরী প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এখন টিকে থাকার একটি উপায় খুঁজছে।
এই বছরের শেষের দিকে তালেবানদের পাশাপাশি কাবুলের শাসনকার্য পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে, একদিকের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের রেখায় চীনের আধিপত্য এবং অন্য নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধবিরতি জোরদার এবং দু’টি সীমান্তে সম্ভাব্য যুদ্ধ ঠেকাতে সংলাপ শুরু করার প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি, কাশ্মীরকে মার্কিন কংগ্রেসের শুনানির এজেন্ডা থেকে সরিয়ে দেয়া সহ প্রতিরক্ষার কারণগুলির একটি বাধ্যতামূলক প্যাকেজকে মোদির এই আকস্মিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
তবে, গত দু›বছর ধরে দলগুলি তাগাদা দেয়ার পরেও মোদির সরকার সগর্বে বলে যে, এসবে তাদের কিছু যায় আসে না। প্রকৃতপক্ষে, এটাই সত্যি। এই মুহুর্তে মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ নেয়ার কারণ হ’ল, আসন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলিতে বিজেপির বিজয় নিশ্চিত করা, যা মোদির তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য অত্যাবশ্যক।
জেএন্ডকে’র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের এই নতুন পর্যায়ে পাকিস্তান বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে যদি কোনও বার্তা থাকে, তবে তা হ’ল, অঞ্চলটিকে ২০১৯ সালের ৫ আগস্টের পূর্বের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ভারতের সাথে পুনরায় বোঝাপড়া করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখন পাকিস্তানের হাতে। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।