Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জম্মু-কাশ্মীরের সীমানা প্রসারণের কাজ কি আদৌ বাস্তবায়িত হবে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২১, ৮:২৩ পিএম

২০০১ সালের জনগণনার পর ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর লোকসভা আইন প্রণয়ন করেছিল যে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সীমানা প্রসারণ বা পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই আইন রদ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ২০১৯ সালেই ভারতের সংবিধানে জম্মু ও কাশ্মীরের যে বিশেষ মর্যাদা ছিল, তাও বাতিল করে দেয়া হয়েছে। অতীতের এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যখন রাজ্যের ১৪ মুখ্য নেতাদের বৈঠক স্থির করা হল, তখন নতুন করে উঠে এল জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা প্রসারণ বা পরিবর্তনের বিষয়টি। কেন না, এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচন সঙ্ঘটিত হবে এবং তার জন্য রাজ্যের সীমানা বদলের প্রয়োজন রয়েছে।

বস্তুত ভারতের যে কোনও রাজ্যে জনগণনার সূত্র ধরে সময়ে সময়ে সীমানা প্রসারণের কাজটি সঙ্ঘটিত হতে পারে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে যাতে রাজ্যের সব অধিবাসীদের সুযোগ-সুবিধার দিকে দৃষ্টি দেয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই এই সীমানা প্রসারণের কাজটি সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে এই প্রক্রিয়া শুধু সীমানা প্রসারণেই সীমাবদ্ধ থাকে না, একই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় লোকসভার আসন সংখ্যাও। কী ভাবে ক'টি আসন বৃদ্ধি পাবে, সীমানা কতটা প্রসারিত হবে, সেই দায়িত্বে থাকে ডেলিমিটেশন কমিশন; এই ব্যাপারে এই কমিশনের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত বলে মান্যতা দেয়া হয়। জম্মু ও কাশ্মীরে কিন্তু এই সীমানা প্রসারণের কাজ এই প্রথমবার হচ্ছে না। অতীতে ১৯৬৩, ১৯৭৩ এবং ১৯৯৫ সালে তা সঙ্ঘটিত হয়েছে। তবে ১৯৯১ সালের পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জনগণনার কাজ হয়নি। ২০০১ সাল পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে সেই সময়ে রাজ্যে লোকসভায় মোট আসন ছিল ৮৭; ৪৬টি কাশ্মীরে, ৩৭টি জম্মুতে এবং ৪টি লাদাখে। ২৪টি অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত ছিল আজাদ কাশ্মীরের ক্ষেত্রে। সেই সময় থেকেই রাজ্যের জনগণনা এবং সীমানা পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক মহলে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। অনেকেই দাবি করেছেন যে রাজ্যে সুষ্ঠু আইনব্যবস্থা প্রচলিত রাখতে হলে সীমানা পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে।

বিজেপি সরকারেরও অভিমত সেই দিকেই! ফলে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে ডেলিমিটেশন কমিশন স্থাপন করা হয়েছে। যার দায়িত্বে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক রঞ্জন প্রসাদ দেশাই। তার সঙ্গে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ইলেকশন কমিশনার সুশীল চন্দ্র, জম্মু ও কাশ্মীরের স্টেট ইলেকশন কমিশনার কে কে শর্মা। এছাড়া রয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ ফারুখ আবদুল্লাহ, মহম্মদ আকবর লোনি এবং হাসনাইন মাসুদি। আছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের রাজ্যের ইউনিয়ন মিনিস্টার ড. জিতেন্দ্র সিং এবং যুগল কিশোর শর্মা। কথা মতো, ডেলিমিটেশন কমিশনের কাজ শেষ করা উচিত এক বছরের মধ্যেই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ প্রায় কিছুই এগোয়নি। তাছাড়া কে কে শর্মা কমিশনে যোগ দিয়েছেন গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে। সব মিলিয়ে, জম্মু ও কাশ্মীরের নতুন সীমানা নির্ধারণের জন্য কমিশনকে অতিরিক্ত এক বছর মঞ্জুর করা হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই অনেক রাজনৈতিক নেতা এর বিরোধিতা করছেন। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক অধিকার রদ অনৈতিক- এই মর্মে শুরু থেকেই সরব তারা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিশনের প্রথম বৈঠক যখন ডাকা হয়, তখন সেখানে ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদরা কেউ যোগ দেননি। সব মিলিয়ে, বিতর্ক একটা বজায় আছেই, জম্মু ও কাশ্মীরের সীমানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়, তার উত্তর রয়েছে ভবিষ্যতের গর্ভে! সূত্র: নিউজ ১৮।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ