বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নগরীতে স্বামী- স্ত্রীসহ ৪ সদস্যের একটি ছিনতাইকারী চক্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮ পিস ডায়মন্ড, বিভিন্ন সময় ছিনতাই করা ১৬টি ভ্যানিটি ব্যাগ, ছিনতাইকৃত ভিভো, অপ্পো, রেডমি, এমআইসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১১টি মোবাইল সেট, নগদ ২০ হাজার টাকা এবং সিএনজি অটোরিকশার হুড কেটে নেওয়ার একটি কাটার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন - ছিনতাইকারী চক্রের প্রধান মোঃ আকাশ (২৪), তার স্ত্রী তানিয়া বেগম (২৫), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (৪৫) এবং মোঃ তাজুল ইসলাম (৪০)। আনোয়ার নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দেয়।
গ্রেফতারকৃত আকাশ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৩ টি মামলা রয়েছে।
গত রমজানে এক তরুণী গন্তব্যে যাওয়ার সময় সিএনজির পর্দা কেটে তার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে পালিয়ে যায় আকাশ। তখন থেকেই তাকে ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। অবশেষে গতকাল রাতে আকাশকে তার বাকি সদস্যসহ গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায় অভিনব পন্থায় ভয়ঙ্কর ছিনতাই এরা। অভিনব পন্থায় ভয়ঙ্করভাবে ছিনতাই করে আকাশ। তার প্রধান টার্গেট সিএনজি অটোরিকশা । চলন্ত অটোরিকশায় সে অভিনব পন্থায় সে পেছনে উঠে যায় । এরপর সেকেন্ডের মধ্যেই পর্দা কেটে ভেতরে থাকা যাত্রীর ব্যাগ, মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।পুরো ঘটনা ঘটাতে তার সময় লাগে সাকুল্যে ২০ সেকেন্ড। এর পাশাপাশি গাড়ির জানালার পাশে বসা যাত্রীদের মোবাইল ছিনিয়ে নিতেও সিদ্ধহস্ত আকাশ। জানালার পাশে বসা কোন যাত্রী ফোনে কথা বললে চোখের পলকেই সেটা নিয়ে হাওয়া হয়ে যায় আকাশ।
আকাশ ছিনতাই করে ১০ বছর ধরে। আগে সে নারী ছিনতাইকারী ফারজানার গ্রুপে কাজ করত। পরে ফারজানার গ্রুপ থেকে বের হয়ে এখন নিজেই করে এ কাজ। গত ৩ বছরেই ২ শতাধিক ছিনতাই করে সে। ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা পর্যন্ত তার মূল অপরাধ সীমানা। সে একদিনে একটি ছিনতাইই করে। ভাল আয় হলে কয়েকদিন চুপ থাকত। কিন্তু খারাপ হলে একইদিনে একাধিক ছিনতাইও করত। সে একসময় বন্দরে শ্রমিকের চাকুরি করত। তখন বন্দরে চলাচলরত গাড়িগুলো থেকে কৌশলে ড্রাইভারের মোবাইল ছিনিয়ে নিত।
গ্রেফতারকৃত তানিয়া আকাশের স্ত্রী। তিনি আকাশ সম্পর্কে সবই জানেন। সব জেনেই বিয়ে করেন কম বয়সী আকাশকে। শুধু জেনেই বসে থাকেন নি, স্বামীর অপকর্মে সহযোগিতাও করেছেন সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে। আকাশ ছিনতাইয়ের পর সব মালামাল জমা রাখতেন স্ত্রীর কাছেই। আবার স্বামী ধরা পড়লে আদালত পাড়ায় ছুটতেন স্ত্রী তানিয়া। আকাশ এর আগেও ৩ বার গ্রেফতার হয়। প্রতিবারই জামিন করান স্ত্রী তানিয়া। সর্বশেষ এপ্রিলেও গ্রেফতার হয় আকাশ। জেলও খাটে। তাকে আবারও জামিন করান তানিয়া। কিন্তু জামিনে বের হয়ে আবারও একই কাজে নেমে এবার ধরা পড়ে যায়।
ছিনতাই শেষেই অধিকাংশ মালামাল 'চোরাই' মার্কেটে বিক্রি করে আকাশ। কিছু কিছু মালামাল আবার ফেরি করেও বিক্রি করে। তাই শুধুমাত্র মোবাইল, ব্যাগ আর টাকা ছাড়া বাকি জিনিসপত্র ফেলে দেয় আকাশ। ছিনতাইকৃত একটি ব্যাগ থেকে হীরা পায় সে। কিন্তু সেগুলো পাথর মনে করে রাস্তায় ফেলে দেয় সে। পরে তাজুল ও আনোয়ারের কাছে জানতে পারে এগুলো হীরা। সাথে সাথেই আবার কুড়িয়ে নেয় সে। শুধু এই হীরার ক্ষেত্রেই নয়; অজ্ঞতার কারণে আরও অনেক মূল্যবান জিনিসই কম দামে বিক্রি করে দেয় সে। এর মধ্যে লাখ টাকার আইফোন বিক্রি করে মাত্র ৬৫০ টাকায়। ৯০ হাজার টাকা মূল্যের এস৮+ মোবাইল বিক্রি করে ২ হাজার টাকায়।
ছিনতাই করে আকাশ, ভাগ পায় তাজুল-আনোয়ার
গ্রেফতারকৃত আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দেয়। আর তাজুল সম্পর্কে আকাশের মামা। এই পরিচয়ের সুবাদেই ছিনতাইকৃত মালামালের চার ভাগের তিন ভাগই তাদের দিতে হয়। মোঃ আকাশ জানায়, ছিনতাই কাজের একটি ভাগ প্রতি সপ্তাহেই কথিত এই ২ সোর্স তাজুল ও আনোয়ারকে দিতে হয়। পুলিশের অভিযানেও এই তথ্যের সত্যতা মেলে। উদ্ধারকৃত ৮ টি ডায়মন্ডের মাত্র দুইটি পাওয়া গেছে আকাশের স্ত্রী তানিয়ার কাছে। বাকি ৬ টি ডায়মন্ডের ৩ টি উদ্ধার করা হয়েছে আনোয়ারের কাছ থেকে এবং বাকি তিনটি তাজুলের কাছ থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।