চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
ফলে তার মধ্যে একটি রূহানী বা আধ্যাত্মিক শক্তি থাকে, যা তাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর নারীরা যখন রশি ছেড়া হয়ে যায়, আবরণ মুক্ত হয়, তখন তার মধ্যে তার প্রবৃত্তি শক্তিশালী হয়- যা তাকে সৌন্দর্য প্রদর্শন ও অবাধ মেলা-মেশার প্রতি আকৃষ্ট করে।
সুতরাং, একজন মানুষের সামনে দুটি পথ খোলা থাকে। যখন সে দ্বিতীয়টির উপর সন্তুষ্ট থাকে, তখন তাকে অবশ্যই প্রথমটিকে কুরবান দিতে হবে। আর তখন তার অন্তরে আত্ম-মর্যাদাবোধ বলতে কোন কিছু থাকবে না। তখন সে অপরিচিত পুরুষদের সাথে মেলা-মেশা সহ যাবতীয় সব ধরনের অপকর্মই করতে থাকবে। আর এ ধরনের মেলা-মেশার ফলে মানব প্রকৃতি ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। লজ্জাহীনতা বৃদ্ধি পাবে, আত্ম-মর্যাদা ও সম্মানবোধ আর বাকী থাকবে না। মানুষের মধ্যে অনুভূতি থাকবে না এবং তার জ্ঞান-বুদ্ধির অপমৃত্যু ঘটবে।
নারীরা তাদের প্রতি পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার লক্ষ্যে নিষিদ্ধ সাজ-সজ্জা গ্রহণে ও উলঙ্গপনায় পরস্পর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। ব্যাপারটি আজ এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, মনে করা হচ্ছে যেন- যে নারী যত বেশি দেহ থেকে পোশাক খুলতে পারবে; সে নারী তত বেশি মূল্যায়িত হবে। তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শনের জন্য নিত্য নতুন পন্থা অবলম্বন করছে। এর ফলে তারা একদিকে তাদের চরিত্রকে কলঙ্কিত করছে, অনুরূপভাবে তারা তাদের অনেক পয়সাও এ পথে ব্যয় করছে। যার ফলশ্রæতিতে নারীরা বর্তমান সমাজে নিকৃষ্ট ও পঁচা-গন্ধ পণ্যে পরিণত হয়েছে; আবার নিজেদের ঠিকানা জাহান্নামের অতলে নির্ধারণ করছে। নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শন ও পর্দাহীনতার কারণে সামাজিক যে অবক্ষয় সৃষ্টি হচ্ছে, তা হল- ১. সৌন্দর্য প্রদর্শনের ফলে পুরুষদের চরিত্র ধ্বংস হয়। বিশেষ করে যুব সমাজ ও প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেরা সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী নারীদের কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয় এবং তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কাজ ও অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়। ২. পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস হয় এবং পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, পরকীয়া থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ অহরহ ঘটে থাকে এই পর্দাহীনতার দ্বারা। ৩. সামাজিক ব্যাধির সাথে সাথে সমাজে বিভিন্ন ধরনের মহামারি ও রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। রাসূল সা. বলেন, “কোন কওমের মধ্যে কোন অশ্লীল কর্ম ও ব্যভিচার দেখা দেয়ার পর তারা যখন তা প্রচার করে, তখন তাদের মধ্যে এমন মহামারি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, যা তাদের পূর্বে যারা অতিবাহিত হয়েছে তাদের মধ্যে দেখা যায়নি”। [শুআবুল ঈমান বায়হাকী- ৩৩১৪]
৪. চোখের ব্যভিচার ব্যাপক হারে সংঘটিত হয় এবং যে কারণে চোখের হেফাজত করা যাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা কঠিন হয়ে যাবে। রাসূল সা. বলেন, “চোখ দুটির ব্যভিচার হল দৃষ্টি”। [সহীহ মুসলিম] ৫. আসমানি মুসিবতসমূহ নাযিল হওয়ার উপযুক্ত হবে। এমন এমন বিপদের সম্মুখীন হতে হবে, যেগুলো ভূমিকম্প ও আণবিক বিস্ফোরণ হতেও মারাত্মক। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন কারীমে এরশাদ করে বলেন, “আর যখন আমি কোন জনপদ ধ্বংস করার ইচ্ছা করি, তখন তার সম্পদশালীদেরকে (সৎকাজের) আদেশ করি। অতঃপর তারা তাতে সীমালঙ্ঘন করে। তখন তাদের উপর নির্দেশটি সাব্যস্ত হয়ে যায় এবং আমি তা সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করি।” [সূরা আল-ইসরা: ১৬]
হে সম্মানিতা মা ও বোনেরা! দুনিয়ায় নিজেদের সম্মান, ইজ্জত-আবরুর ও অধিকার রক্ষায় এবং নিরাপত্তা ও সুস্থতার সাথে জীবন যাপন করতে, পরিশেষে পরকালীন নাজাতের জন্য পর্দার হুকুম মেনে চলুন। আল্লাহ আমাদেরকে সফলতার পথে চলার তৌফিক দান করুন এবং ধ্বংসের পথ থেকে দূরে রাখুন। আমিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।