মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের বিহারে করোনায় মৃতের সংখ্যা হালনাগাদ করার পর নতুন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শঙ্কা জাগছে দেশটিতে করোনার তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। নতুন কয়েকটি জরিপ ও গবেষণার প্রতিবেদনও এই আশঙ্কাকে সমর্থন করছে। এসব গবেষণায় ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা অন্তত ৬ গুণ বেশি। ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনোমিস্ট-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ তথ্য। -দ্য ইকোনোমিস্ট
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির ক্রিস্টোফার লেফলারের এক সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃত্যুর পরিসংখ্যান করে এক খসড়া প্রাক্কলন করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১৮ লাখ থেকে ২৪ লাখ হতে পারে। এমনিতেই লকডাউন থেকে দেশটির বেরিয়ে আসা খুব সহজ নয়। মে মাসের মাঝামাঝিতে সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে দেশটিতে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সত্য যে এখন সেই সংখ্যা কমে আসছে। কিন্তু যেসব তথ্য-উপাত্ত সামনে আসছে তাতে সরকারি মৃতের সংখ্যাকে অনেক কম মনে হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানে কম হওয়াতে শুধু ভারতের দুর্ভোগের প্রকৃত মাত্রা জানা যায়নি তা নয়, এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যেমন, এতে করে কর্তৃপক্ষ অক্সিজেন ও ওষুধের চাহিদা সম্পর্কে ভুল প্রাক্কলন করেছেন।
সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিস্টসহ স্বতন্ত্র এডিডেমিওলজিস্টরা ধারণা করছেন, ভারতে করোনায় মৃতের সরকারি সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা পাঁচ থেকে সাতগুণ বেশি হতে পারে।তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওপর আরেকটি সাম্প্রতিক গবেষণা করা বিমার দাবির ওপর ভিত্তিতে। এতে উঠে এসেছে, সরকার মৃতের সংখ্যা যে পরিমাণ বলছে প্রকৃতপক্ষে তা ছয় গুণ বেশি। এমন প্রাক্কলনের এলেমোলো, অনির্ভরযোগ্য স্থানীয় সরকারের তথ্য, কোম্পানির তথ্য যেমন, কর্মীদের মৃত্যুর কথা থেকে শুরু করে শোক সংবাদ পর্যালোচনা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সূত্র, জনমত জরিপেও মৃতের সংখ্যা বেশি বলে উঠে আসছে।
একটি নতুন জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থা প্রশ্নম-এর পরিচালিত মে মাসের একটি জরিপে ১৫ হাজার মানুষকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তর ভারতে হিন্দী ভাষাভাষীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের পরিবারের বা প্রতিবেশী কারও করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা। জবাবে প্রতি ছয় জনে একজন (১৭ শতাংশ) জবাব দিয়েছেন ‘হ্যাঁ’। প্রশ্ন-এর প্রতিষ্ঠাতা রাজেশ জৈন যুক্তরাষ্ট্রে একই প্রশ্ন করা একটি জরিপের সঙ্গে তাদের ফলাফল তুলনা করেন। মার্চে পরিচালিত ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর জরিপে ১৯ শতাংশ বলেছিলেন তাদের আত্মীয় বা ঘনিষ্ঠ কারও মৃত্যু হয়েছে করোনায়। ফলাফলের এই সামঞ্জস্য বিবেচনা রাজেশ বলছেন, ভারতের মৃত্যুর হার যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি হবে, অর্থাৎ প্রতি দশ লাখে ১ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু। সরকারি হিসাবে যা এখন প্রতি দশ লাখে ২৩০ জন। রাজেশ বলেন, ভারতের হার যদি যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি হয় তাহলে দেশে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৫ লাখ হওয়ার কথা।
গত বছরের জুন থেকে অপেক্ষাকৃত পুরনো জরিপ সংস্থা সিভোটার ভারতের দশটি ভাষাভাষী মানুষের করোনায় মৃত্যুর তথ্য প্রতিদিন সংগ্রহ করছে। প্রশ্ন-এর চেয়ে ভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে একটি জরিপ চালায় সিভোটার। তাদের প্রশ্ন ছিল, পরিবারের একেবারে কাছের কারও করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা। গত বছর সেপ্টেম্বরে এই প্রশ্নের ‘হ্যাঁ’ জবাব দেওয়া মানুষের সংখ্যা চিল প্রায় ১ শতাংশ। কিন্তু এই বছরের এপ্রিল ও মে মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৪ শতাংশ। সিভোটারের চেয়ার যশবন্ত দেশমুখ জানান, তাদের হিসাবে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ভারতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৮ লাখ হতে পারে। সরকারি তথ্যের সঙ্গে জরিপে উঠে আসা মৃতের ট্রেন্ড লাইনের মিল রয়েছে। এতে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, জরিপটি মোটামুটি সঠিক। ভারতের সরকারি তথ্যে মৃতের সংখ্যা কম থাকার কারণ সম্পর্কে যশবন্ত জানান, এটি সামর্থ্যের বিষয় না, অভিপ্রায়। এছাড়া এটি কেন্দ্রীয় সরকার বা নির্দিষ্ট দলের বিষয় নয়। এটি প্রতিটি পর্যায়ে তথ্য চেপে যাওয়ার প্রবণতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।