মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মির অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকারি বাহিনীর বেপরোয়া গ্রেফতারি, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও অপহরণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ওই অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করা জাতিসংঘ প্রতিনিধি দল। ভারতীয় সরকারের কাছে ৩১ মার্চ পাঠানো পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের এক চিঠিতে এই উদ্বেগ জানানো হয়। -আনাদুলু এজেন্সি
এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘের পার্লামেন্টারি এসম্বলি অব দ্য ইকোনোমিক কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (প্যাকো)’র সংসদ সদস্যরা ভারত শাসিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। ইসিওর কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তখন ইসিও সংসদের স্পিকাররা উপস্থিত ছিলেন, বর্তমানে যার সদস্য পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক ও আফগানিস্তানসহ ১০টি দেশ। পাকিস্তানের রাজধানীতে এই দুই দিনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসঙ্ঘ ওই চিঠিটি গত সোমবার সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশ করেছে। চিঠিতে ওই অঞ্চলে ' সন্ত্রাস ' দমন করতে গিয়ে মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানানো হয় । চিঠিতে বিস্তারিতভাবে ওয়াহিদ পারা , ইরফান আহমদ দার ও নাসির আহমদ ওয়ানি , তিন কাশ্মিরি বাসিন্দার ঘটনা উল্লেখ করা হয় । জম্মু অ্যান্ড কাশ্মির পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ওয়াহিদ পারা গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে বন্দী রয়েছেন । পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির ( বিজেপি ) সাথে জোটবদ্ধ ছিল । জাতিসঙ্ঘের প্রতিনিধি দল জানায় , নয়া দিল্লিতে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন অ্যাজেন্সির ( এনআইএ ) সদর দফতরে পারাকে নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, 'তাকে শূন্য ডিগ্রি তাপমাত্রার নিচে ভূগর্ভস্থ অন্ধকার কক্ষে রাখা হয়। এছাড়া তাকে ঘুমাতে দেয়া হয়নি, লাথি, চড় ও রড দিয়ে পেটানোসহ মারধর করা হয়েছে , উলঙ্গ করে ফেলে রাখা হয়েছে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।' এছাড়া চিঠিতে ২৩ বছর বয়সী ইরফান আহমদ দারের ঘটনা জানানো হয়। উত্তর কাশ্মিরের সোপুরের দোকানদার এই যুবককে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ( এসওজি ) আটক করে। পরদিন সকালে ইরফানের পরিবার তার মৃত্যুর খবর পায়। তারা জানায় , ইরফানের মুখের হাড় ও সামনের দাঁত ভাঙ্গা ছিল। লাশ দাফনের আগে মাত্র দশ মিনিট পরিবার তাকে দেখার সুযোগ পায় বলে চিঠিতে জানানো হয়। এই হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের পর জেলা প্রশাসন এক তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ইরফানকে পালানোর সুযোগ দিয়ে 'দায়িত্বে অবহেলায়' বহিস্কার করা হলেও তাকে হত্যার জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি বলে চিঠিতে জানানো হয় ।
অপরদিকে শোপিয়ান জেলার বাসিন্দা নাসির আহমদ ওয়ানির বাড়িতে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর ভারতীয় সৈন্যরা অভিযান চালায়। সৈন্যরা তার পরিবারের সদস্যদের এক কক্ষে আটকে রেখে অপর কক্ষে নিয়ে তাকে আধা ঘণ্টার মতো পেটানো হয়। পরে তাকে আটক করে নিয়ে যায় সৈন্যরা । কাছাকাছি শাদিমার্গের সেনা ক্যাম্পে নাসিরের পরিবার তার খোঁজ নিতে গেলে প্রথমে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় নাসিরের বাড়িতে কিছু সেনা কর্মকর্তারা এসে পরিবারকে জানায় , তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে । সেনা কর্মকর্তারা নাসিরকে ছেড়ে দেয়ার কথা বললেও এখনো পর্যন্ত নাসির বাড়িতে ফিরে আসেননি বলে চিঠিতে জানানো হয় ।
চিঠিতে বলা হয় , ' যদিও এই অভিযোগের বিষয়ে আগেই বিচার করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই , এই ঘটনায় আমরা আমাদের গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি। যদি এই ঘটনাগুলো নিশ্চিত হয় , তারা বেপরোয়া গ্রেফতারি ও আটক , নির্যাতন , অপহরণ এবং দারের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যা সংগঠিত করেছেন এবং তার মাধ্যমে ( সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক কনভেন্টের ) ছয় ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে। ' ভারত সরকার এই চিঠির কোনো প্রত্যুত্তর দেয়নি । ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মির অঞ্চল নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।