Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিন প্রতিশ্রুতি পালনে উদ্যোগী মমতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২১, ৭:২১ পিএম

প্রচুর জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এর মধ্যে তিনটি প্রতিশ্রুতি পালনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এই তিন প্রতিশ্রুতি হলো, দুয়ারে রেশন পৌঁছে যাবে। গরিব পরিবারকে মাসে ৫০০ টাকা, দলিত ও আদিবাসী পরিবারকে এক হাজার টাকা দেয়া হবে এবং ছাত্রছাত্রীদের দেশে বা বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য ক্রেডিট কার্ড দেয়া হবে, তাতে খুব কম সুদে ঋণ নেয়া যাবে।

সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই তিন প্রতিশ্রুতি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার জন্য সচিবদের নিয়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কলকাতা পুলিশে দুই হাজার ৫০০ কর্মী নিয়োগ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। বিধানসভা ভোটের কিছুদিন আগে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প নিয়েছিলেন মমতা। সেখানে দুয়ারে সরকারের ভ্যান পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে গ্রামে ঘুরত। তাতে স্বাস্থ্যবিমা করা যেত, অন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করা যেত। সরকারি কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতেন। তার সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে নেয়া হচ্ছে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। চাল, গম, তেল তোলার জন্য আর রেশন দোকানে গিয়ে লাইন দেয়ার প্রয়োজন নেই। রেশন চলে আসবে বাড়িতে। ডিজিটাল কার্ড মেশিনে দেখিয়ে, টাকা দিয়ে বাড়িতে বসেই রেশন পাবেন মানুষ।

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যৌনকর্মী, রূপান্তরকামী, হকার, রিকশা ও ঠেলাওয়ালাদের কাছে চাল পৌঁছে দেয়া হবে। তাদের পাঁচ কেজি করে চাল দেয়া হবে। করোনালকডাউনের ফলে তাদের রোজগার কমে গেছে। তাই তাদের কাছে চাল পৌঁছে দেয়া হবে, যাতে আয় কমলেও তাদের ভাতের অভাব যেন না হয়। গরিব পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেয়া ছিল এবার মমতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি। সেটাও প্রথমেই রূপায়ণ করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিভাগীয় সচিবদের নিয়ে কমিটি করে দিয়েছেন মমতা। তারাই এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকবে।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা দেবে সরকার। মাত্র ৪% সুদে পড়াশোনার জন্য ঋণের সুবিধা দেয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ছাত্রছাত্রীরা ১০ বছর সময় পাবেন। চাকরি পেয়ে তারা ধীরে ধীরে চার শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন।’ মমতার এই সিদ্ধান্তের থেকে দুইটি বিষয় উঠে আসছে বলে মনে করেন প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ‘মমতা এখন আগের থেকে অনেক সতর্ক ও দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আর তার প্রশাসন নির্ভরতা বাড়ছে। সেকারণেই তিনি সচিবদের টাস্ক ফোর্স করে এই প্রতিশ্রুতি রপায়ণের দায়িত্ব দিয়েছেন। একটা সময় দলের বিরুদ্ধে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তিনি সতর্ক হয়েছেন।’

আরেক প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত মনে করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব মুখ্যমন্ত্রীই এখন জনমোহিনী প্রকল্প রূপায়ণের দিকে ঝুঁকছেন। মমতাও একই পথে হাঁটছেন। গতবারও তিনি বেশ কিছু জনমোহিনী প্রকল্প নিয়েছিলেন। এবার ক্ষমতায় আসার পরই প্রতিশ্রুতি পূরণ করছেন। এই সব প্রকল্প দীর্ঘস্থায়ী হলে তা অবশ্যই ভাল হবে।’ সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ