নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গত কয়েক বছরে খানিক উন্নতি ঘটেছে। একটা সময় বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা মানেই ছিল একপেশে লড়াই। বাংলাদেশ পাত্তাই পেত না। লঙ্কানরা জিততো এক তরফা। পরিসংখ্যান সে সত্যই জানান দিচ্ছে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা মোট ৪৮ বার মুখোমুখি হয়েছে। শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৩৯টিতে। সাফল্য ৮১.২৫%। অন্যদিকে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা মোটে ৭টি। সাফল্য ১৪.৫৮ ভাগ।
ইতিহাস জানাচ্ছে, এশিয়া কাপ ও অন্যান্য বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এখন পর্যন্ত ৮টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে। সেখানেও লঙ্কানদের সুস্পষ্ট প্রাধান্য। শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৬ সিরিজ। দুটি সিরিজ ১-১ এ অমিমাংসিত থেকে গেছে। আর ৫ বার সিরিজে টাইগারদের হোয়াইটওয়াশ (৩-০ তে) করেছে লঙ্কানরা। এছাড়া একটি মাত্র সিরিজে বাংলাদেশ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ২-১ এ হার মানে। সেটা ২০০৬ সালে দেশের মাটিতে।
সেবার মাহেলা জয়বর্ধনে (অধিনায়ক), সনৎ জয়সুরিয়া ও কুমারা সাঙ্গাকারার শক্তিশালি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাবিবুল বাশারের বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে।
এছাড়া দুটি সিরিজ ১-১ এ অমিমাংসিত থেকে গেছে। দুটিই ছিল তিন ম্যাচের। বৃষ্টিতে একটি করে ম্যাচ ধুয়ে যাওয়ায় দুই খেলায় ফল নিষ্পতি হয়। দুটিই শ্রীলঙ্কার মাটিতে। প্রথমটি ২০১৩ সালের মার্চে। হাম্বানতোতায় প্রথম ম্যাচে ডিএল মেথডে শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেটে জিতলেও একই ভেন্যুকে দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। পরে ক্যান্ডিতে শেষ ম্যাচের ভাগ্যও নির্ধারিত হয় ডিএল মেথডে। সে ম্যাচে বাংলাদেশ জয়ী হয় ৩ উইকেটে।
এরপর ২০১৭ সালে আবারো শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের সাথে ১-১ এ সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। মাশরাফির নেতৃত্বে ওই বছর মার্চে ডাম্বুলায় প্রথম ম্যাচে ৯০ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। একই মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। তাসকিন আহমেদের অনবদ্য হ্যাটট্রিকের পরও আগে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কা ৩১১ রানের বড়সড় পুঁজি গড়ে বসে। লঙ্কান ইনিংস শুরুর পর লাঞ্চে বৃষ্টি নামে। এরপর আর খেলাই শুরু করা যায়নি।
শেষ ম্যাচে আবারও ৭৫ রানের বড় জয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনে উপুল থারাঙ্গার দল। তারপর অবশ্য আর একটি মাত্র সিরিজ হয়েছে। সেটি ২০১৯ সালে। ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে হওয়া বিশ্বকাপের ঠিক পরপরই জুলাইতে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা যায় বাংলাদেশ। ওই সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়ে আসে বাংলাদেশ।
এবার আবারও সেই তামিম ইকবালের নেতৃত্বে ঘরের মাঠে লঙ্কানদের সামনে বাংলাদেশ। এবার কী ইতিহাস বদল হবে? অনেকেরই মত এবার ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের হাতছানি তামিম বাহিনীর সামনে।
কারণ, এ দলটি ঠিক শ্রীলঙ্কার পুরো শক্তির ওয়ানডে দল নয়। মূল দলের কয়েকজন সিনিয়র সদস্য নেই। ১৮ জনের দলে চারজন (শিরান ফার্নান্ডো, বিনুরা ফার্নান্ডো, চামিকা করুনারত্নে ও রমেশ মেন্ডিস) একদম নতুন, ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায়। এছাড়া দলটির আরও ৪ জন ক্রিকেটার (আসান বান্দারা ৩, আসিতা ফার্নান্ডো ২, পাথুম নিশাঙ্কা ৩) আছেন যারা নামমাত্র ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।
শুধু অধিনায়ক কুশল পেরেরাই কেবল ১০০’র বেশি (১০১) ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। আর কুশল মেন্ডিসের আছে ৭৬ ওডিআইয়ের অভিজ্ঞতা। বাকিদের কেউ পঞ্চাশটি ম্যাচও খেলেননি।
সেখানে বাংলাদেশ দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। চার সিনিয়র ক্রিকেটারে প্রায় সবাই দু’শর কাছাকাছি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯৪, তামিম ইকবাল ২১৩, মুশফিকুর রহীম ২২৪ এবং সাকিব আল হাসান ২০৯টি ম্যাচ খেলেছেন। এছাড়া মুস্তাফিজ (৬৪), সৌম্যও (৬১) পঞ্চাশের ওপরে ম্যাচ খেলেছেন। মেহেদি হাসান মিরাজের ম্যাচ সংখ্যা ৪৭। লিটন দাস ৪২, পেসার তাসকিন ৩৬, অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক ৩৫ ও মিঠুন ৩০টি করে ম্যাচ খেলেছেন। সব মিলে প্রতিপক্ষর তুলনায় অনেক অভিজ্ঞ ও পরিণত দল বাংলাদেশ। ম্যাচ জেতানো পারফরমারও অনেক বেশি।
ঘরের মাঠ, চেনা জানা পরিবেশ। আর প্রতিপক্ষ তারুণ্যনির্ভর, অভিজ্ঞতায় পরিষ্কার ঘাটতি। এতগুলো অ্যাডভান্টেজ নিয়ে বাংলাদেশ অবশ্যই ফেবারিট এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের এটাই মোক্ষম সুযোগ তাদের সামনে।
তামিম, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, মুস্তাফিজরা কী তা পারবেন? সেটাই দেখার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।