Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চোখের উপকারী শাকসবজি ফলমূল

| প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

চোখ সুস্থ রাখতে হলে দরকার অতি প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন ‘এ’। নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় ‘এ’ ভিটামিনযুক্ত খাবার অবশ্যই থাকা উচিত। সঠিক পরিমাণে এই ভিটামিন যুক্ত খাবার না খেলে রাতকানা রোগ এবং চোখের অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ‘এ’র প্রধান উৎস প্রাণিজ প্রোটিন। যেমন- যকৃত, ডিমের কুসুম, দুধ, মাখন, পনির ও মাছ। ছোট মাছ বা মলা, ঢেলা, পুঁটিমাছ খেলে চোখ ভালো থাকে, রাতকানা রোগ হয় না এ কথা ছোট বেলায় সকলেই শুনে থাকে। সস্তা এবং সহজলভ্য রঙ্গিন ফলমূল, শাকসবজি থেকেও প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। এসব খাবার টাটকা এবং সহজপাচ্যও বটে। গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, কচুশাক, সজিনাশাক, পালংশাক, লাউশাক, নটেশাক, পুঁইশাক, শীম, বরবটি, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পাকা আম, পেঁপে, তরমুজ, কাঁঠাল ইত্যাদি এ জাতীয় খাবার যারা নিরামিষ ভোজী চোখ ভালো রাখার জন্য ছোট বেলা থেকেই সব ধরনের শাকসবজি, ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।

অল্প সেদ্ধ বা কাঁচা সালাদ, ফল ও ফলের রসের সঙ্গে অবশ্যই দুধ, দই, ছানা খাওয়া উচিত। সয়াবিন ভিটামিন ‘এ’র আরেকটি ভালো উৎস। বিভিন্নভাবে সয়াবিন রান্না করে খাওয়া যায়। ভিটামিন ‘এ’র অভাবে অন্ধকারে দেখার উপযোগী চোখের রডকোষগুলোর কর্মদক্ষতা আস্তে আস্তে কমে যেতে থাকে। ফলে শিশু রাতের বেলায় কোন জিনিস খুঁজতে গিয়ে হাত বাড়িয়ে ঘুরতে থাকে এবং কোন জিনিসে বাধা পেলে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যায়। বাচ্চা জন্মের সময় তার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘এ’ থাকায় মাতৃদুগ্ধ পান করা পর্যন্ত এই ভিটামিনের অভাবজনিত সমস্যা হয় না। কিন্তু শিশুর যখন বাড়তি খাবার প্রয়োজন হয় তখন এই ভিটামিনের অভাব হলে চোখের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। শিশুদের চোখের যে সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায় তা হলো- বিটট স্পষ্ট। এতে অক্ষি শুষ্কতার পর চোখের বাইরের আবরণে কিছু ছোট ছোট দাগ পড়ে। ফলে কর্নিয়া অস্বচ্ছ ও ঘোলাটে দেখায় এবং কর্নিয়ার অনুভূতি কমে যেতে থাকে। এর ফলে দেখতে অসুবিধা হয়। পরে কর্নিয়াতে সংক্রমণ হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তখন শুধু ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার খেলেই চলবে না নিয়মিত ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল থেকে দিতে হবে। বয়স্কদের ছানি পড়া বিলম্বিত করতে ভিটামিন ‘এ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সঠিকভাবে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার নিয়মিত না খেলে নির্ধারিত সময়ের আগেই চোখের আলো ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।

আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ গরিব, অশিক্ষিত এবং পুষ্টি সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান নেই বরং রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার। ফলে দারিদ্র্যতা ছাড়াও অজ্ঞতার কারণে এই সমস্ত ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার নির্বাচন করা এবং সঠিকভাবে রান্না করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ভিটামিন ‘এ’র সস্তা ও সহজ উৎস সম্পর্কে পিতামাতার অজ্ঞতা শিশুদের ভিটামিন ‘এ’র অভাব ঘটায়। সাধারণ স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পুষ্টিজ্ঞান নেই বলে আমাদের দেশে অধিকাংশ লোক জানে না কিভাবে স্বল্পমূল্যে সুষম খাদ্য পাওয়া যায়, কোন খাদ্য পাওয়া যায়, কোন খাদ্যে কি ধরনের ভিটামিন রয়েছে এবং কিভাবে রাধলে ভিটামিন নষ্ট না হয়ে অক্ষুণ্ণ থাকে। স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানের অভাব শিশুর অন্ধত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই চোখ ভালো রাখতে প্রতিদিনই আমাদের পর্যাপ্ত টাটকা শাকসবজি ফলমূল খেতে হবে।

ডা. জোৎাস্না মাহবুব খান
মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চোখ

১৮ অক্টোবর, ২০২২
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন