Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপাতত জেল হেফাজতে পশ্চিমবঙ্গের চার হেভিওয়েট নেতা

কলকাতা হাইকোর্টে আড়াই ঘণ্টা শুনানি : আজ ফের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে শুনানির পর গতকাল দিনের মতো শেষ হয়েছে নারদকাণ্ডের শুনানি। আজ বেলা ২টায় ফের শুনানি হবে। সে পর্যন্ত আপাতত জেল হেফাজতে থাকতে হবে ৪ হেভিওয়েট নেতাকে। গতকাল দুপুর ২টায় কলকাতা হাইকোর্টে শুরু হয় নারদ মামলার শুনানি। একদিকে নারদ-মামলা ভিন্য রাজ্যে সরানোর জন্য সিবিআইয়ের আবেদনের শুনানি ছিল। অন্যদিকে, হাইকোর্টের জামিন স্থগিতাদেশের পুনর্বিবেচনা চেয়ে চার নেতা-মন্ত্রীর আর্জির শুনানিও ছিল। নারদ-মামলায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে পার্টি করে সিবিআই। একইসঙ্গে এই মামলায় পার্টি করা হয়েছিল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

গতকাল হেভিওয়েটের জামিন-স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনার শুনানির শুরুতেই বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জামিন হবে কি হবে না আমরা কেন সিদ্ধান্ত নেব? শুধুমাত্র মানুষের চাপের অভিযোগ ছিল বলে স্থগিতাদেশ দিয়েছি।’ এ প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে এরকম হয়নি।’

এরপর তুষার মেহতার উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘চার্জশিট পেশ করা হয়ে গেছে, এ ৪ জনকে আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাহলে এই করোনাকালে এঁদের শুধুশুধু জেলে রাখার প্রয়োজন আছে কি?‘ ধৃতেরা অসহযোগিতা করেছেন এমন কোনও উদাহরণ আছে কি না, তাও সলিসিটার জেনারেলের কাছে জানতে চান বিচারক।

জবাবে তুষার মেহতা বলেন, অভিযুক্তরা জেলে নেই, তারা হাসপাতালে আছেন। তিনি যোগ করেন, ‘এই আদালত সিবিআইকে নিয়োগ করেছিল। তাদেরকেই কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যাতে ন্যায্য বিচার না হয় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

পাল্টা হেভিওয়েটদের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে অভিষেক মনু সিঙ্গভি বলেন, ‘অভিযুক্তদের না জানিয়ে আদালতে মামলা হচ্ছে। তখন তাদের ন্যায় বিচারের কথা মনে ছিল না?’ তিনি যোগ করেন, ‘ছলে-বলে-কৌশলে তারা এই চারজনকে জেলে ঢোকাতে চাইছে।’

তখন তুষার মেহতা বলেন, ‘নিজাম প্যালেস ঘেরাও হয়েছে, জোর করে ভেতরে ঢুকতে চেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঢুকে তাঁকে গ্রেফতারের কথা বলেছেন।’
‘মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি বিধায়করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিবাদ করেছেন। তারা কোনো অশান্তি করেননি’, আদালতে সওয়াল অভিষেক মনু সিঙ্গভির। তুষার মেহতা শুনানিতে বলেন, ‘নিঃশর্তভাবে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলেছে। সিবিআই অফিসারদের হুমকি দেয়া হয়েছে। এটা পরিকল্পনামাফিক করা হয়েছে।’

অভিষেক মনু সিঙ্গভি পাল্টা সওয়ালে বলেন, ‘২০১১ থেকে তারা মন্ত্রী-বিধায়ক, মাটির সঙ্গে সম্পর্ক। এত পুরনো মামলায় হঠাৎ করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মানুষ সুবিচার পাচ্ছে না বলে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এটা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। সিবিআই পুরো সত্যি না বলেই মামলা করছে।’

তুষার মেহতা শুনানিতে আরও বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো হয়েছে। ৪ জনের মেডিক্যাল করানো যায়নি। শারীরিকভাবে বিচারকের সামনে পেশ করা যায়নি।’
সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী নিজে সারাদিন নিম্ন আদালতে উপস্থিত ছিলেন বহু মানুষকে নিয়ে। এতে বিচারকের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। কেস ডায়েরি পেশ করতে সিবিআইয়ের আইনজীবীদের বাধা দেয়া হয়েছে। তদন্তকারীদের ওপর চাপ তৈরির কৌশল নেয়া হয়েছে।’

‘সোমবার নিজাম প্যালেসের বাইরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে বলবেন? আইনমন্ত্রীর আদালতে অবস্থান নিয়ে কী বলবেন?’, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে প্রশ্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের। ‘পুরোটাই গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ। কাউকে কাজ করতে বাধা দেয়া হয়নি। বিচারব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করা হয়নি।’ আদালতে সওয়াল অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির। সূত্র : এবিপি আনন্দ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ