Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুজরাটে অবিরাম জ্বলছে শ্মশান, লাশের স্তূপ

আপনি যেদিকেই তাকান, অ্যাম্বুলেন্স আর লাশ দেখবেন উত্তরপ্রদেশে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

লাশ আসছে আর স্ত‚প করে রেখে দেয়া হচ্ছে। কারণ পোড়ানোর সময় পাচ্ছে না কর্মীরা। বিশেষ করে ভারতের গুজরাটে অবস্থা খুবই করুণ। করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে লাশ পোড়ানোর গ্যাস এবং কাঠের চুল্লিগুলো অবিরাম জ্বলছে। মহামারিতে মৃতদের পোড়াতে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না শ্মশানের কর্মীরা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, চুল্লিগুলোর ধাতব পাতও টানা জ্বলতে জ্বলতে গলে যেতে শুরু করেছে। গুজরাটের সুরাটে শ্মশান পরিচালনাকারী একটি ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট কমলেশ শর্মা বলেন, ‘আমরা শতভাগ সক্ষমতা নিয়ে সময় মতো লাশ পোড়াতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছি।’ করোনাভাইরাসে মৃতদের যে সংখ্যা সরকারিভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে তার সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের শ্মশান কর্তৃপক্ষ ও শ্মশানের কর্মী, স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যের হিসেবে ব্যাপক ব্যবধান দেখা যাচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যানের তুলনায় দেশটির শ্মশানগুলোতে অনেক বেশি সংখ্যক লাশের স্তুপ আকারে পড়ে আছে। শ্মশানে লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ভারতের সরকারি জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, কোভিড-১৯ প্রোটোকল মেনে পোড়ানোর কারণে শ্মশানে লাশের স্তুপ তৈরি হতে পারে। এমনকি করোনা পজিটিভদের মাত্র ০ দশমিক ১ শতাংশ মারা গেলেও সেটি হতে পারে। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা চরম আশঙ্কাজনক অবস্থায় পৌঁছানোর পর হাসপাতালে আসেন এবং পরীক্ষা করার আগেই মারা যান। এমনকি মৃত অবস্থায়ও হাসপাতালে নিয়ে আসার নজির রয়েছে এবং আমরা জানিও না যে তারা আসলে পজিটিভ নাকি নেগেটিভ। অপরদিকে আপনি উত্তর প্রদেশের যেদিকেই তাকান, অ্যাম্বুলেন্স আর লাশ দেখবেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গ চলছে এখন ভারতে। সে দেশের বিভিন্ন রাজ্য এই ধাপের সংক্রমণে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছে। ভারতের জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশও ভোগান্তি পোহাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে উত্তরপ্রদেশ কর্তৃপক্ষ যেমন হিমশিম খাচ্ছে, নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ জনগণ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কানওয়াল জিত সিংয়ের ৫৮ বছর বয়সী বাবা নিরঞ্জন পাল সিং গত শুক্রবার মারা গেছেন। এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে শয্যা না থাকায় পরপর চারটি হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে তাকে। কানওয়াল বলেন, এটা আমার জন্য হৃদয়বিদারক দিন। আমি বিশ্বাস করি, তিনি যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেতেন, তাহলে বেঁচে থাকতেন। কিন্তু পুলিশ, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী কিংবা সরকারের কেউ সাহায্য করল না। উত্তরপ্রদেশে আট লাখ ৫১ হাজার ৬২০ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৯ হাজার ৮৩০ জন। প্রথম ধাপের সংক্রমণে উত্তরপ্রদেশ বিপাকে না পড়লেও দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণে এসে চরম বেকায়দায় পড়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে লখনউ, বারানসি, কানপুর এবং এলাহাবাদের মতো অন্যান্য বড় শহরগুলোতে পরীক্ষাকেন্দ্রে, হাসপাতালগুলোতে, শ্মশানের মাঠে ভিড়ের ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপকহারে উঠে আসছে। বারনসির বাসিন্দা বিমল কুমারের ৭০ বছর বয়সী মা নির্মলা কাপুর গত বৃহস্পতিবার করোনায় মারা গেছেন। বিমল কুমার বলেছেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ। তিনি আরো বলেন, আমি দেখেছি বহু মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে মারা যাচ্ছে। শয্যা না থাকার কারণে হাসপাতাল থেকে রোগী ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং অক্সিজেনের সরবরাহ কম আছে। তিনি আরো জানান, লাশ সৎকারের কাঠের দাম তিনগুণ বেড়ে গেছে। এমনকি লাশ সৎকারের জন্য আগে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হলেও এখন ছয়-সাত ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। আমি এ রকম কিছু আগে দেখিনি। আপনি যেদিকেই তাকান, অ্যাম্বুলেন্স আর লাশ দেখতে পাবেন। এনডিটিভি, বিবিসি।



 

Show all comments
  • salman ২১ এপ্রিল, ২০২১, ৫:০৪ এএম says : 0
    Babri Mosque Vanga, Muslim der Hotta, kurbanikorte na dewaa soho MUSLIM der sathe Onnai kari, Murti Pujari, Cow Mutro khor der UPOR ATA MOHAN ALLAHOR GOZOB.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুজরাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ