মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়ন ও এতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে কদিন ধরেই। তিনদিনব্যাপী সেই আলোচনা সব মহলকে বেশ আশাবাদী করে তুলেছে। এ কদিনের বৈঠকে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় পরাশক্তি দেশের জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জ্যাকোপা) নামে যে পরমাণু চুক্তিটি হয়েছিল, সেটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি হয়েছে। ইরান ও ছয় দেশের ক‚টনৈতিক প্রতিনিধিরা এই তথ্য জানিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ভিয়েনায় জ্যাকোপার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে এক বৈঠকে বসেছিলেন ইরান, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য। শনিবার বৈঠক শেষ হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী অন্যতম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকশেষে ইরানের প্রতিনিধি দেশটির উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাঘশি বলেন, বৈঠকে ম‚ল আলোচ্য বিষয় ছিল দু’টি। প্রথমটি হলো- যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করেছে সেগুলো কবে নাগাদ তোলা হবে এবং দ্বিতীয়টি- জ্যাকোপা ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিকে কতদূর পর্যন্ত অনুমোদন দেবে। তিনি বলেন, একটি বৈঠকে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এখনও কিছু গুরুতর বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের; তবে তারপরও আমি বলব বৈঠক ফলপ্রস‚ হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত রাশিয়ার প্রতিনিধি মিখাইল উলিয়ানভও জানিয়েছেন, বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা হলেও অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিভাগের উপপ্রধান এনরিক মোরাও বৈঠক সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়া— বিশ্বের এই ছয় পরাশক্তি রাষ্ট্রের সঙ্গে ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তি বা জ্যাকোপা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইরান। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী- ইরান ধীরে ধীরে পরমাণু প্রকল্প থেকে সরে আসবে- এর পরিবর্তে দেশটির বিরুদ্ধে যেসব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে- সেগুলোও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, ইরান যদি ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্প বন্ধ করে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আবার জ্যাকোপাতে ফিরবে। অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিই জ্যাকোপাতে ফিরতে চায়, সেক্ষেত্রে প্রথমে তাকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে হবে। এর আগে বলা হয়, ইরান ৬০ ভাগ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পরমাণু চুক্তিকে লঙ্ঘন করেছে। তিনি শনিবার ওয়াশিংটনে জাপানি প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদা সুগার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় তিন বছর ধরে পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন করে গেলেও সে বিষয়টি চেপে গিয়ে বাইডেন বলেন, ইরান শতকরা ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিক পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, আমরা এ বিষয়টিকে সমর্থন করি না। ৬০ ভাগ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কারো লাভ হবে বলে মনে হয় না। তবে ইরান যে আলোচনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে তাতে আমরা খুশি। বাইডেন দাবি করেন, ইরান ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করায় ভিয়েনা বৈঠকের ক্ষতি হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করার সময় এখনো আসেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি গত শুক্রবার বলেন, ইরান ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার যে ‘উসকানিম‚লক’ পদক্ষেপ নিয়েছে তাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে আমেরিকা। তিনি বলেন, ইরান যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে আলোচনার ব্যাপারে দেশটির সদিচ্ছার ঘাটতি ধরা পড়েছে। তিনি ভিয়েনা আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ইউরোপীয় দেশগুলোকে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান। রয়টার্স, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।