Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দিনে লক্ষাধিক আক্রান্তের দ্বারে ভারত

দৈনিক সংক্রমণে বিশ্বে শীর্ষে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে আমেরিকা-ব্রাজিলকে টপকে শীর্ষে চলে গিয়েছে ভারত। মোট সংক্রমণের নিরিখে অবশ্য আমেরিকা শীর্ষে, তার পরে ব্রাজিল, তৃতীয় স্থানে ভারত।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, মোট সংক্রমণে বাইডেনের দেশ শীর্ষে থাকলেও, দৈনিক সংক্রমণ তারা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। পেরেছে ব্রাজিলও। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটু পিছিয়েই পড়ল ভারত। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী ভারতে শুক্রবার এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ১২৯ জন। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯৩ হাজার ২৪৯ জন কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। সেখানে ব্রাজিলে ৭০ হাজার ২৩৮ জন। আমেরিকায় আক্রান্ত ৬৯ হাজার ৮২২ জন। তবে গত এক সপ্তাহে গড় দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে ব্রাজিলই।

একদিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি! আর মৃতের সংখ্যা একদিনে ৭১৪! ভারতে করোনা-গ্রাফে এই বিপুল লাফ গত সাড়ে ছ’মাসে দেখা যায়নি। যদিও কেন্দ্রের দাবি, মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু পুরোনো মৃত্যুর নথিভুক্তিকরণ শনিবার হয়েছে বলে সংখ্যাটা এত বেশি। তবে, সরকারি যাই বেলুক, প্রতিদিনের রেকর্ড সংক্রমণ ভয় ধরানোর মতোই। শুধুমাত্র মহারাষ্ট্রেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ হাজার ৪৪৭, যার মধ্যে বাণিজ্যনগরী মুম্বাইয়ে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯০ জন! করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে এমন রেকর্ড সংক্রমণ দেখেনি মুম্বই!

শুধু মহারাষ্ট্র বা ভারতের ১০টি শহর বলে নয়, করোনার থাবা চওড়া হচ্ছে সব ক্ষেত্রেই। সচিন তেন্ডুলকর, বাপ্পি লাহিড়ি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে, আলিয়া ভাট থেকে ভরত কল - সংক্রমণ বাড়ছে বলিউড ও টলিউডে। তার মধ্যেই শনিবার দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্রিকেটার অক্ষর প্যাটেল, গ্রাউন্ড স্টাফ ও আইপিএলের ইভেন্ট স্টাফ মিলিয়ে প্রায় ১৭ জন পজিটিভ। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের মধ্যে একাধিক প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাও সংক্রমণের কবলে।

সরকারি তরফে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা এখনও স্বীকার করা না হলেও তথ্য তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। আর সেই সঙ্গে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি)-র গবেষণা রিপোর্ট। সেই রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ যে গতিতে বাড়ছে, সেই ধারা বজায় থাকলে মে মাসের শেষের দিকে ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখ পেরিয়ে যাবে (এখন মোট আক্রান্ত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ)। এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনা সংক্রমণ পৌঁছে যেতে পারে শিখরে আর সেক্ষেত্রে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছতে পারে ৭ লাখ ৩০ হাজারের কাছাকাছি! আর সংক্রমণের গতি আরও বাড়লে মে মাসের শেষে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২০ লাখের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়!

ভারতে চিকিৎসার পরিকাঠামো নিয়ে ইতিমধ্যে সঙ্কট দেখা দিচ্ছে বলেই প্রশাসনের তরফে বার বার কোভিড বিধি মেনে চলার পর জোর দেয়া হচ্ছে। জনগণ কোভিড-বিধি মানলে এবং আগামী কয়েক মাস নিরবিচ্ছিন্ন টিকাকরণ চললে করোনার এই বিপুল সংক্রমণে কিছুটা রাশ টানা যাবে বলে আশাবাদী আইআইএসসি-র গবেষকরাও। যেমন গত দু’দিনে রোজ ৩০ লাখের বেশি টিকা দেয়া হয়েছে নাগরিকদের। কিন্তু মহারাষ্ট্রের মতো বেলাগাম সংক্রমণই মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শনিবারের দৈনিক সংক্রমণের ৮১ দশমিক ৪২ শতাংশই মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, ছত্তিসগড়, দিল্লি, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং মধ্যপ্রদেশের। যে ১০টি জেলায় চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার বেশিরভাগই মহারাষ্ট্রের। এই পরিস্থিতিতে মানুষ সচেতন হয়ে কোভিড-বিধি না মানলে লকডাউনই একমাত্র পথ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তবে, শুধু মহারাষ্ট্র নয়, সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কায় সচেতন হচ্ছে অন্যান্য রাজ্যও। ওড়িশার ১০টি জেলায় শনিবার থেকে নাইট কারফিউ জারি করতে চলেছে প্রশাসন। সূত্র : টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ