মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ‘গুজরাট মডেল’কে সামনে রেখে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চাকরি ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতের শাসন ক্ষমতায় বসেছিলেন। তবে প্রথম ২৪ মাসের পর তিনি কখনও সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। যদিও ভারতের অর্থনৈতিক পতনের জন্য করোন মহামারীকে যথাযথভাবে দায়ী করা হয়েছে, তবে ভাইরাসটি আঘাত হানার আগেই মোদির শাসনের প্রথম দু’বছরে মাথায় দেশটির অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে এবং তারপর ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে।
বর্তমানে, ভারতের ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মধ্যে কমপক্ষে ৭ হ্রাস পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় প্রতিটি অর্থনৈতিক এমনকি সামাজিক সূচকে ভারতের অর্থনৈতিক ধ্বস প্রদর্শিত হয়ে আসছে। কিন্তু বিষয়টি আপামর ভারতীয়দের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলে মোদির ২০১৭ সালের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেতেন না।
ততদিনে ভারতের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে, কর্মহীনতা বেড়েছে এবং বাণিজ্য, গ্রামাঞ্চল ও কৃষকদের নিয়ে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ভারতীয়দেও চোখে ঠুলি পড়ানো বানোয়াট প্রতিটি অর্থনৈতিক সূচক ভুল প্রমানিত হয়ে একটি সত্যতেই অবস্থান নিয়েছে। তা হ’ল, মূল্যস্ফীতি। তবুও, মোদি সেই নির্বাচনে বৃহত্তর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরে এসেছিলেন।
সাধারণ রাজনীতিতে এই নির্বাচন বিরোধীদের জন্য মোদির ওয়াকওভার হয়ে উঠত। তবে, তেমন কিছুই ঘটেনি। কিছু ভোট-ভরা ইভিএম আসামে এক বিজেটি প্রার্থীর গাড়িতে পাচার হয়ো সত্ত্¦েও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মোদি ব্যাপক জনপ্রিয় এবং আবারও নির্বাচন জিতবেন। যদি অর্থনৈতিক সাফল্য নাই থাকে, তাহলে মোদির সাফল্যের নেপথ্যে কী কাজ করেছে? কীভাবে তিনি সবখানে জয়লাভ করছেন? তিনি কীভাবে অর্থলনতিক প্রবৃদ্ধি ছাড়াই এই ম্যাজিক ঘটাতে সক্ষম?
ভারতে ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলারের (২০১৯ সালে) অর্থনীতির প্রায় ৬০ শতাংশই সংকোচনের মুখে রয়েছে। এবং তা থেকে প্ররিত্রানের আপাতত কোনও আশা নেই। এ পরিস্থিতিকে মোদির গালগল্প যে কাজ করছে না, এবং গদি রক্ষা করতে তার নতুন ইস্যু দরকার, তা তিনি বুঝতে পেরেছেন। তিনি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবেন তবে এখন পর্যন্ত তার সাফল্যের পক্ষে যে বিষয়গুলি কাজ করেছে তিনি সেগুলিই আঁকড়ে থাকবেন: দরিদ্রতমদের জন্য বৃহত্তর সেবায় ত্রিমুখি নীতিমালা (শক্তিশালি প্রস্তাব), দৃশ্যমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদ (আরও শক্তিশালী)।
মোদি এতে সফল। প্রশ্নটি হচ্ছে, তার চ্যালেঞ্জাররা কি তাকে ঠেকাতে পারবেন? তাদের বেশিরভাগ আক্রমণ এখনও মোদির অধীনে অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘিরে পরিচালিত হচ্ছে। পরিচয় (যার মধ্যে ধর্ম ও সংস্কৃতি অন্তর্ভুক্ত) এবং জাতীয়তার গর্বেও মতো দুটি বৃহৎ ক্ষেত্রকে তিনি সম্পূর্ণরূপে হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়েছেন। এগুলি জাতীয়তাবাদে ক্ষেত্রে মোদি বিরোধীদের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে। অর্থনৈতিক দুর্দশা নিরাপত্তাহীনতা এনে দেয়, তবে তা পরিচয় বা জাতীয়তার অহঙ্কারের মতো রন্ধ্রগত আবেগের অংশ নয়। এই কারণেই গণতান্ত্রিক বিশ্বে বাগ্মীরা বিজয়ী হয়ে থাকেন। সূত্র : দ্য প্রিন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।