মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর পুরো দেশ রয়েছে ঝুঁকিতে। মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভিকে পাল। তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মিডিয়ার সামনে ব্রিফিং করছিলেন। এ সময় ভিকে পাল বলেন, আমরা ভয়াবহভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধির মোকাবিলা করছি। কোনো কোনো জেলায় এই পরিস্থিতি আরো খারাপ। আর পুরো দেশ কার্যকরভাবেই ঝুঁকিতে। এই ভাইরাসকে নির্ম‚ল করা প্রয়োজন। খবরে বলা হয়, ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের জাতীয় গড় পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি হলেও, শুধু মহারাষ্ট্র রাজ্যেই সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার প্রায় ২৩ শতাংশ। পাঞ্জাব, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশেও বিরাজ করছে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। রাজ্যগুলোতে এই হারে সংক্রমণ ঘটলে ভারতে করোনা পরিস্থিতি অচিরেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিনোদ পল গতকাল মঙ্গলবার জানান, গত কয়েক সপ্তাহে পরিস্থিতি খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে। করোনাভাইরাস দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবলভাবে সক্রিয় আছে। যখনই মনে করা হচ্ছে করোনার সংক্রমণকে কাবু করা গেছে, ঠিক তার পরেই সংক্রমণ প্রবল শক্তিতে ফিরে এসেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার এ খবর জানিয়েছে। তবে, ভারতে যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের স্ট্রেইন পাওয়া গেছে, তা নিয়ে বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেই মনে করছেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ভারতের করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কার শিকার হয়েছে ম‚লত মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও দিল্লির মতো রাজ্যগুলো। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়েছে সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকা মৃত্যুর সংখ্যাও। তাই গতকাল সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের কাছে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভ‚ষণ করোনায় সংক্রমিতদের মৃত্যুহার কমানোর ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, যেসব এলাকা ও হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর তথ্য বেশি আসছে, প্রশাসনকে সেগুলো প্রথমেই চিহ্নিত করতে হবে। পরবর্তী ধাপে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে- কেন মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হচ্ছে। রাজেশ ভ‚ষণ বলেন, সংক্রমিত ব্যক্তিকে দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে আসার কারণে মৃত্যু ঘটছে কি না, তা সবার আগে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। যদি তা-ই হয়, তা হলে ধরে নিতে হবে, নজরদারি করার ক্ষেত্রে রাজ্যের গাফিলতি রয়েছে। রাজেশ ভ‚ষণ আরও বলেন, সংক্রমিতকে দেরিতে হাসপাতালে ভর্তির অন্য একটি কারণ হলো, চিকিৎসকদের কাছে থেকে দেরিতে সুপারিশ। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা যথাযথ প্রোটোকল মেনে চলছেন কি না, সংক্রমিত ব্যক্তি হাসপাতালে ঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না, বিশেষ করে একজন করোনা রোগীর চিকিৎসার প্রশ্নে ন্য‚নতম যে প্রোটোকলগুলো— যেমন অক্সিজেন, শয্যা, অক্সিজেনযুক্ত শয্যা ইত্যাদি রয়েছে কি না, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কি না, এ সবই পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। করোনার সংক্রমণের হার কমাতে টিকা দেওয়ার ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সব ভারতবাসী কোভিডের টিকা নিতে পারবেন। যে জেলাগুলোতে সংক্রমণের হার বেশি, সেখানে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের শতভাগ টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্র। এ ছাড়া করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কন্টেইনমেন্ট জোন গঠনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিটি কন্টেইনমেন্ট জোনকে পরিবর্তন সক্ষম হতে হবে, প্রয়োজনে যাতে তার আকার বড় বা ছোট করা সম্ভব হয়। প্রতিটি কন্টেইনমেন্ট জোনে সংক্রমিত এলাকার যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক বাসা-বাড়িকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে অন্তত ১৪ দিন কন্টেইনমেন্ট জোনে অপ্রয়োজনীয় গতিবিধি নিষিদ্ধ করতে হবে। কন্টেইনমেন্ট জোন এবং তার বাইরের এলাকায় প্রতিদিন কত নতুন সংক্রমণ হচ্ছে, রাজ্যগুলোকে সে তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যদি কন্টেইনমেন্ট জোনের বাইরে সংক্রমণ বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে তার পরিধি বড় করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তারা ছাড়া সংক্রমিত এলাকায় আর কারও প্রবেশ-বের হওয়া বন্ধ করায় নজরদারি করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলোকে। উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যসচিব চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, বহু জেলায় গত আগস্ট-নভেম্বরে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছিল। সেই জেলাগুলোতে আবার সংক্রমণ বাড়ছে। একই সঙ্গে এবার সংক্রমণের শিকার হয়েছে নতুন-নতুন জেলা, যেখানে প্রথম পর্বে সংক্রমণ ছিল না। এই প্রবণতা মোকাবিলায় রোগীপিছু অন্তত ২৫-৩০ জনকে চিহ্নিত করার ওপর জোর দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভ‚ষণ বলেন, ‘এখানে সংক্রমিতের পরিবারের সদস্যেরা ছাড়াও তিনি কার সঙ্গে চা খেয়েছেন, কার সঙ্গে গল্প করেছেন, কোন দোকান থেকে পণ্য কিনেছেন— তাদেরও খুঁজে বের করতে হবে সংক্রমণের তিন দিনের মধ্যে। এদের চিহ্নিত করা না গেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকানো কঠিন।’ এবিপি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।