মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে তার পাসপোর্ট ও ভিসা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল শনিবার বাংলাদেশের ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়িতে যখন মতুয়া স¤প্রদায়ের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মোদি, তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের সভা থেকে তাকে এমন আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য ভোট ‘চাইতে’ গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। মমতা বলেন, বাংলায় ভোটের সময় আপনি বাংলাদেশে কেন? আপনি যদি ভোট চলাকালীন বাংলাদেশে একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য ভোট চাইতে যান, তাহলে আপনার ভিসা-পাসপোর্ট কেন বাতিল হবে না?
নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করব। কখনও বলছে বাংলাদেশ থেকে মমতা সব অনুপ্রবেশ করিয়েছে, আবার কখনও বাংলাদেশে গিয়ে মার্কেটিং করছে। কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল, তার জবাব চাই। নইলে যতদূর যাওয়ার আমরা যাব। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি অভিনেতা ফেরদৌসের ভিসা বাতিলের প্রসঙ্গও টেনে আনেন মমতা। তিনি বলেন, ফেরদৌস নামে এক বাংলাদেশি ফিল্মস্টার ২০১৯ লোকসভায় আমাদের একটা র্যালিতে যোগ দিয়েছিল। বিজেপি এসে সরকারের সঙ্গে কথা বলে ওর ভিসা বাতিল করে দিল। আর প্রধানমন্ত্রী ভোট নোটিফিকেশন হওয়ার পরে বিদেশে গিয়ে ভোট নিয়ে কথা বললে কী হয়? আপনার জন্য সব ছাড়। আর অন্যদের জন্য নয়।
শুধু বাংলাদেশ নয়, মার্কিন নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠান নিয়েও তোপ দাগেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথম দফাতেই দফারফা বিজেপি’র : মমতা
প্রথম দফা ভোটের মাঝে গতকাল চুটিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনিটি সভা করেন তিনি। নারায়ণগড়ে, খড়্গপুর ও পিংলায় পরপর সভা করেন তিনি। খড়্গপুরের সভায় তিনি ইভিএম কারচুপি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। রাজ্যে তিরিশটি বিধানসভা আসনে ভোট হয় এদিন। সেখানে বেশ কিছু বুথে অশান্তির খবর পাওয়া গেছে।
সেসব কথা উল্লেখ করে খড়্গপুরের জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি ইভিএমে কারচুপি করেছে। সকালের দিকে কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভার মাজনা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলে যারা ভোট দিচ্ছেন সেই ভোট বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। এ অভিযোগের পর কিছুক্ষণের জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয় সেখানে। সেই কথা উল্লেখ করে খড়্গপুরের জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি ইভিএমে কারচুপি করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরের জনসভা ছিল পিংলায়। কিন্তু সেখানে তিনি ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ আর আনেনি। বরং, এই সভায় তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখায়। তিনি বলেন, প্রথম দফার ভোটে দফারফা হয়ে যাবে বিজেপির।
পিংলার সভাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রথম দফায় বিজেপির দফারফা হয়ে যাবে। ভাগ্য লেখা হয়ে যাচ্ছে বিজেপির। কোনও কোনও জায়গায় বিজেপির লোক একটু বেশি। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বড় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। ওরা জানে ওদের হার নিশ্চিত। তাই এত কিছু ভাবার দরকার নেই। একইসঙ্গে পিংলার সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী আরও বলেন, ওই যে গদ্দাররা, দুধ কলা দিয়ে কেউটে সাপ পুষেছিলাম। তারা এখন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। আমার দোষ, আমি বুঝিনি। গতকাল রাতেও টাকা বিলি করেছে। তৃণমূল নেত্রীর এই অভিযোগের নিশানায় যে শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রধানমন্ত্রীর বর্ধমান দাড়ির আনুপাতিক বিপরীতে ভারতীয় অর্থনীতি : মমতা
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরে জনসভা থেকে নাম না করে মোদিকে কটাক্ষ করেন মমতা। তিনি বলেন, তার দাড়ি বাড়লেও আনুপাতিক বিপরীতে দেশের অর্থনীতি নিম্নগামী। তিনি বলেন, দাড়ি থাকলেই সবাই রবীন্দ্রনাথ হয় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি সকলকে চোর বলে বেড়ান। নিজেরা ডাকাতদের ঠাকুর্দা।’
এদিন তিনটি জনসভায় আগাগোড়া বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের অনুমতির জন্য অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান না হলে তিনি মোদির অফিসে ধর্না দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। নন্দীগ্রামে আঘাত পাওয়ার প্রসঙ্গ জনসভায় তুলে আনেন তিনি। তিনি বলেন, শুরুতেই নন্দীগ্রাম থেকে আঘাত পেয়েছেন। তবে শারীরিক নয়, মানসিকভাবে তিনি আঘাত পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। বিজেপি বার বার সা¤প্রদায়িক বিভাজনের চেষ্টা করছেন বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘বøাড ব্যাঙ্ক থেকে যখন রক্ত নেওয়া হয়, তখন কি কেউ জানতে পারেন, রক্তটা কোনও হিন্দুর না মুসলিমের।’ পায়ের আঘাত নিয়ে বার বার তিনি বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মা, বোনেদের পা আমার অনুপ্রেরণা।’
বিজেপি ‘ভোট লুটের জন্য বাইরে থেকে বর্গীদের’ নিয়োগ করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বর্গি হ’ল মারাঠা সাম্রাজ্যের একশ্রেণীর সৈন্য যারা অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাংলায় মারাঠা অভিযানের ব্যাপক লুণ্ঠন চালিয়েছিল।
দাসপুরের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হায়দরাবাদ থেকে বেশ কিছু গাদ্দার এসেছে সংখ্যালঘুদের ভোট কাটতে।’ তিনি বলেন, ‘বিজেপি আসতে আসতে সব বিক্রি করে দিচ্ছে। আর রাজ্যে এসে প্রতিনিয়ত মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা সব ধর্মকে সম্মান জানানো। বিজেপির নেতারা অন্য ধর্মের লোকদের বাড়িতে খান না। আমাকে হিন্দু ধর্ম শেখাতে আসবেন না। রাজ্যে এসে বিজেপি মূর্তি ভাঙছে। তারা আবার বড় বড় কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেন মমতা।’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দুস্তান টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।