মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে আন্তঃধর্মীয় প্রেমকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা ধর্মান্তরবিরোধী বিতর্কিত নতুন আইন দেশটির হিন্দু-মুসলিম দম্পতিদের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এখন তারা কেবল তাদের পরিবারই নয়, রাষ্ট্রীয় রোষের শিকার হচ্ছে। আইনটি চরমপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর ইসলামবিদ্বেষী প্রচরণা ‘লাভ জিহাদ’-এর ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র তত্ত¡কে ইঙ্গিত করে, যাতে বলা হয়ে থাকে যে, মুসলিমরা হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার একমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ভারতের উত্তরপ্রদেশ এ আইন পাসকারী প্রথম রাজ্য, যারা জোর করে জালিয়াতিমূলক উপায়ে বা বিবাহ দ্বারা ধর্মান্তরকে বেআইনী এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অধ্যাদেশ জারি করে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত এ রাজ্যে এ আইনের ফলে একাধিক মামলা ও গ্রেফতার হয়েছে। বিজেপি-শাসিত আরেকটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ ইতোমধ্যে একই আইন পাস করেছে এবং গুজরাটসহ অন্যরাও তাই করছে। তাই আন্তঃধর্মীয় দম্পতিরা এখন এসব রাজ্য ছেড়ে দিল্লির মতো অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত জায়গাগুলোতে বিয়ে করছেন।
ভিন্ন ধর্মের নারী পুরুষের মধ্যে বিয়ের ঘটনা বিরল। এক সমীক্ষা বলছে, এরকম বিয়ের সংখ্যা মোট বিয়ের দুই শতাংশ। তবে, কট্টর হিন্দু দলগুলো বেশ অনেকদিন ধরে এই লাভ-জিহাদ তত্ত¡ ছড়িয়ে বলছে যে, মুসলিম পুরুষরা হিন্দু নারীদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্যে প্রেমের ছল দেখিয়ে তাদের বিয়ে করে। এ তত্ত¡ এখন সত্যিকার অর্থেই ভারতের ভিন্ন ধর্মের নারী-পুরুষের মধ্যে প্রেমকে চরম হুমকিতে ফেলেছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের শিক্ষক চারু গুপ্ত যিনি গবেষণা করে ‘মিথ অব লাভ জিহাদ‘ নামে একটি বই লিখেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম নারী হিন্দু কোনো পুরুষকে বিয়ে করে তখন হিন্দু এ গোষ্ঠীগুলো তাকে দেখায় প্রেম হিসাবে। যখন তার উল্টোটা ঘটে তখন সেটা হয়ে যায় প্রতারণা-জবরদস্তি।’
আন্তঃধর্মীয় দম্পতির মধ্যে বিবাহ সহজতর করার জন্য কাজ করে থাকে ধানাক। প্রধানত হিন্দু-মুসলিম এসব দম্পতি যখন বিয়ে করতে গিয়ে পরিবার ও সমাজের কাছ থেকে বাধার সম্মুখীন হন তখন এরা ধানাক নামে এই এনজিও’র কাছে সাহায্য চাইতে আসেন। এসব দম্পতির বয়স সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর। তারা চান ধানাক যেন তাদের বাবা-মার সাথে কথা বলে তাদের রাজি করায়। এতে ব্যর্থ হলে, আইনি সহযোগিতা চায় তারা। ধানাকের কাছে যারা আসেন, তাদের ৫২ শতাংশ হিন্দু নারী যারা মুসলিম পুরুষকে বিয়ে করতে চান। আর ৪২ শতাংশ মুসলিম নারী যারা হিন্দু প্রেমিককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ধানাকের প্রতিষ্ঠাতা আসিফ ইকবাল বলেন, উত্তর প্রদেশে নতুন ধর্মান্তরবিরোধী আইন পাস হওয়ার পর থেকেই বিবাহ করতে চাইছেন এমন দম্পতিদের কাছ থেকে অনেক কল আসছে। বিবিসিকে ধানাকের প্রতিষ্ঠাতা আসিফ ইকবাল বলেন, ‘হিন্দু পরিবার বলুন আর মুসলিম পরিবারই বলুন তারা কেউই চায় না তাদের সন্তানরা অন্য ধর্মের কাউকে বিয়ে করুক। বিয়ে ঠেকাতে পরিবারগুলো যে কোনো পন্থা নিতে প্রস্তুত। তারা এমনকি তাদের নিজেদের মেয়ের দুর্নাম ছড়াতেও পিছপা হয় না, যাতে মেয়ের প্রেমিক পিছিয়ে যায়। তথাকথিত এ লাভ-জিহাদ এ ধরনের আন্তঃধর্ম প্রেম আটকানোর আরেক চেষ্টা।’
ভারতে আন্তঃধর্মীয় বিবাহগুলো বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে নিবন্ধিত রয়েছে, যা ৩০ দিনের সময়কালের আদেশ দেয়। কিন্তু দম্পতিরা এ সময়ের মধ্যে প্রতিশোধ এবং প্রতিহিংসার শিকার হওয়ার ভয়ে জীবন যাপন করে এবং এখন এ আইনের কারণে তার রেশ আরও অনেক বেশি। বেশিরভাগ দম্পতি আত্মগোপনে থাকাকালে তাদের চাকরি হারায়। তারা চিন্তিত এবং ভীত-সন্ত্রস্ত। তবে তারা বলে যে, একে অপরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখেছে এবং প্রতিক‚লতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, প্রেম অন্ধ নয়, বরং ঘৃণা অন্ধ। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।