প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
দেশের চলচ্চিত্র এখন স্থবির। নতুন এবং দর্শকগ্রহণযোগ্য সিনেমা নির্মাণ বলতে কিছু নেই। মাঝে মাঝে কিছু সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হলেও তা এক পর্যায়ে ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। দুয়েকটি সিনেমা নির্মিত হলেও তা কোনোভাবেই চলচ্চিত্রের বাজার চাঙ্গা করার জন্য যথেষ্ট নয়। এ প্রেক্ষিতে, চলচ্চিত্রের দুর্দশা থেকে পুনরুদ্ধারে ধারাবাহিকভাবে মানসম্পন্ন সিনেমা নির্মাণের বিকল্প নেই। এজন্য চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালকদের সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পপির সঙ্গে আলাপকালে চলচ্চিত্রের উত্তরণে কি করা উচিৎ তার একটি চিত্র উঠে এসেছে। পপি জানান, একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী হিসেবে চলচ্চিত্রের দুরবস্থা আমাকে কষ্ট দেয়। কারণ, এই চলচ্চিত্রের জন্যই আমি আজকের পপি। যে সময়টায় চলচ্চিত্রে আমার যাত্রা শুরু, সে সময়ে সিনেমার গল্পে বৈচিত্র ছিল। বিভিন্ন ধরনের গল্পের সিনেমা নির্মিত হতো। আমি ভাগ্যবান, ঐ সময়ে ভাল গল্পের সিনেমা দিয়ে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। দর্শক গ্রহণ করেছিল। এর কারণ, সে সময়কে ধারণ করে দর্শকের চাহিদা মতো সিনেমা নির্মাতারা নির্মাণ করেছেন। বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা অনেক শক্তিশালী ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে এ ধারার পরিবর্তন হয়। একটি ধারার সিনেমা দেখতে দেখতে দর্শকের বিরক্তি সৃষ্টির আগেই তার পরিবর্তন ঘটিয়ে ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হতে হয়। সামাজিক, পারিবারিক, অ্যাকশন, রোমান্টিক ধারার গল্পের সাথে ফোক-ফ্যান্টাসি কিংবা কল্পিত ধারার থ্রিলিং গল্পের সংযোজন করতে হয়। আমার সময়ে সিনেমার এমন বহুমুখী ধারা ছিল। একটি ধারার সিনেমা না চললে নির্মাতারা আরেকটি ধারা ধরতেন। এভাবে ধারা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সিনেমা এগিয়েছে এবং দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছে। হঠাৎ করেই যেন সিনেমার এই বহুমুখী ধারাটি থেমে গেল। বলতে গেলে কোনো ধারাই বহমান থাকেনি। বিচ্ছিন্নভাবে সিনেমা নির্মিত হতে থাকে। বিশ্বের যেকোনো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সেখানে একবার এক ধরনের সিনেমা নির্মাণ করে দর্শককে মাতিয়ে রাখার সাথে সাথে নির্মাতারা ভিন্ন ধারার দিকে ধাবিত হয়। আমাদের দেশে এখন এ ধারাটি নেই। দর্শক উপযোগী সিনেমাও নেই, ধারাও নেই। পপি বলেন, প্রযুক্তির এ যুগে আমাদের নির্মাতারা তাল মেলাতে পারেননি। এখন আর প্রথাগত গল্প ও নির্মাণ দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করলে চলবে না। সারাবিশ্বেই সিনেমার ধরণ বদলে গেছে। এখন আমরা যদি সেই আগের চেনা-জানা গল্পের সিনেমা নির্মাণ করতে থাকি, তাহলে দর্শক গ্রহণ করবে কেন? প্রযুক্তিগত সক্ষমতার অভাব থাকলেও কিভাবে গল্প প্রধান সিনেমা নির্মাণ করা অসম্ভব নয়। আমরা দেখেছি, কম বাজেটেও গল্প প্রধান সিনেমা নির্মাণ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়। গল্প যখন নানা রহস্য আর উত্তেজনা নিয়ে এগিয়ে যায়, তখন দর্শকের অন্যদিকে মনোযোগ দেয়ার সুযোগ থাকে না। সে গল্পের মধ্যে ঢুকে তার চরিত্রের সাথে তালমিলিয়ে চলে। মনে করে, সেও এই নিজেকে সিনেমার চরিত্র ভাবা শুরু করে। সিনেমা তো এমনই হওয়া উচিৎ। দর্শক যদি সিনেমার গল্পের সাথে একাত্ম হতে না পারে কিংবা তাকে যদি একটি স্বপ্নের মধ্যে ঢুকিয়ে না দেয়া যায়, তবে সে কেন সেই সিনেমা দেখবে? আমাদের নির্মাতাদের বর্তমান প্রজন্মের দর্শকের এই চাহিদা ধরতে হবে। যত বড় বাজেট হোক না কেন, তা দিয়ে প্রথাগত সিনেমা নির্মাণ করলে দর্শক গ্রহণ করবে না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের উচিৎ হবে, সিনেমাকে কিভাবে জাগিয়ে তোলা যায়, এ পরিকল্পনা করা। বসে থাকলে হবে না। সিনেমা চলে না, হল নেই-এ অজুহাত বছরের পর বছর ধরে দিলে হবে না। একের পর এক দর্শক পছন্দের গল্প এবং সুনির্মিত সিনেমা হলে এমনিতেই বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠবে। বন্ধ সিনেমা হল খুলে যাবে। সংকটও দূর হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।