মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
একদিকে করোনার দুর্ভোগ। অন্যদিকে তা ঘিরে ইউরোপ জুড়ে একের পর এক কনস্পিরেসি থিওরি বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। যত দিন যাচ্ছে ইউরোপে দক্ষিণপন্থিরা নানারকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে আনছে। বাড়ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষভাব।
সমাজবিজ্ঞানীদের ধারণা, করোনা পরবর্তী সময়েও এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো ইউরোপের সমাজে প্রাধান্য পাবে। শরণার্থী, মুসলিম, উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরো বাড়বে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে দক্ষিণপন্থি মতবাদের রমরমা। ইউরোপ জুড়ে ইতিমধ্যেই তার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্বে করোনার প্রকোপ চলছে। ইউরোপের বহু দেশে এখনো লকডাউন অব্যাহত। কবে লকডাউন উঠবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কার্যত ঘরবন্দি হয়ে বসে আছেন সাধারণ মানুষ।
আর তার জেরেই বাড়ছে ক্ষোভ। বেশ কিছু গোষ্ঠী করোনার বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন। এই বক্তব্য সামনে রেখে রাস্তায় নেমেছেন বহু মানুষ। নেদারল্যান্ডস, ইটালি, জার্মানিতে বিক্ষোভ হয়েছে। কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অনেকে। দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলো বহু ক্ষেত্রেই এই বিক্ষোভগুলিকে সমর্থন জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, জার্মানি, সুইডেন এবং যুক্তরাজ্যের তিনটি সংগঠন একসঙ্গে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ইউরোপের আটটি দেশে ওই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। কথা বলা হয়েছে ১২ হাজার মানুষের সঙ্গে। সমীক্ষার ফালফল আসঙ্কাজনক। রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনা চলে গেলেও ষড়যন্ত্রের তত্ত্বের প্রাদুর্ভাব কমবে না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কমবে না। এবং সব চেয়ে বড় কথা ইউরোপ জুড়ে শরণার্থী, উদ্বাস্তু এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে মনোভাব আরো শক্ত হবে।
সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ফ্রান্স, ইটালি, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির মানুষ মনে করেন করোনাকালে দেশের সরকার সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ভেঙে পড়েছে। জার্মানি এবং সুইডেনে এমন মনোভাবের সংখ্যা সামান্য কম হলেও তা প্রায় এক তৃতীয়াংশের কাছাকাছি। প্রায় প্রতিটি দেশেই শরণার্থী বিরোধী মনোভাব বাড়ছে। আটটি দেশে একত্রে শরণার্থী বিরোধী মনোভাবের সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ। কিন্তু হাঙ্গেরিতে সেই সংখ্যাটি ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ, ৬০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, দেশে শরণার্থীদের আর জায়গা দেয়া ঠিক নয়। যারা আছেন, তাদেরও ফেরত পাঠানো দরকার।
আর এই মনোভাবেরই সুযোগ নিচ্ছে দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলো। নানাবিধ ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে এনে তারা মানুষের মনে বিদ্বেষ ভাব আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনাকালে দক্ষিণপন্থিদের বাড়বাড়ন্ত যতটা হবে বলে মনে করা হয়েছিল, এখনো পর্যন্ত তা ততটা চোখে পড়েনি। কিন্তু দক্ষিণপন্থিরা সিস্টেমেটিক ভাবে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে। সেইটাই আশঙ্কার জায়গা। বস্তুত, ইউরোপ জুড়ে লকডাউন, শাটডাউন, কার্ফিউয়ের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে, সেখানে দক্ষিণপন্থিদের ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলি ইন্ধন দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দক্ষিণপন্থিরা তাদের তত্ত্ব প্রকাশ করছে। তারা নিজেরা হামলার পরিকল্পনা করছে না। কিন্তু মানুষের মনে তারা এমন ভাবে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে, যে হামলার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, আগামী কিছুদিনে ইউরোপে দক্ষিণপন্থিদের হামলার সম্ভাবনা অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে। দিকে দিকে উদ্বাস্তু, মুসলিম, শরণার্থীদের উপর হামলার চেষ্টা হবে। ফলে সরকার যদি এখনই সতর্ক না হয়, তা হলে বড়সড় বিপদের আশঙ্কা আছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।