Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশি সেনারা ছাড়বে না আফগানিস্তান

ইসলামি সরকার গঠন প্রক্রিয়া ইরান সমর্থন করবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ইরান সফররত তালেবান প্রতিনিধি দল দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে বৈঠক করেছে। রোববার তালেবানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা মোল্লা আবদুল গণি বারাদারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি তেহরানে এ বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে জাভেদ জারিফ ঘোষণা দেন আফগানিস্তানে সব রাজনৈতিক দল এবং গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ইসলামি সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে ইরান সমর্থন করবে। এ সময় তিনি বলেন, আমরা এমন একটি অংশগ্রহণমূলক সরকারকে সমর্থন করব যা আফগানিস্তানের সব জাতি, ধর্ম ও গোত্রের অংশগ্রহণে গঠিত হবে এবং যাকে আফগানিস্তানের জন্য প্রয়োজনীয় বিবেচনা করা হবে। এ ছাড়া আফগানিস্তানে মার্কিন কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করে জাভেদ জারিফ জানান, ওয়াশিংটন কখনোই ভালো মধ্যস্থতাকারী ও শান্তি আলোচক নয়। বৈঠকে দু’পক্ষ আঞ্চলিক চলমান নানা ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করে। পাশাপাশি আফগান পরিস্থিতি ও দেশটির শান্তি প্রক্রিয়া কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানিয়েছে। অপরদিকে, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত রেখেছে তালেবান। তাদের একের পর এক হামলায় বিপর্যস্ত দেশটি। অথচ শান্তিচুক্তি অনুযায়ী কথা ছিল, উগ্রবাদ পরিহার করে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে তালেবান। এরইমধ্যে গত শনিবার তালেবানের আত্মঘাতি হামলায় নিহত হয়েছে ৮ সেনা সদস্য। এমন অবস্থায় চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তান ছাড়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে আন্তর্জাতিক সেনারা। আগামী মে মাসের মধ্যেই তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তালেবানের সন্ত্রাসবাদি কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় এখন তারা আফগানিস্তানেই থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সামরিক জোট ন্যাটোর ৪ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। কাবুল, ন্যাটো ও বিদেশি সংস্থাগুলো বারবার জানিয়েছে, তালেবান তাদের শর্ত মানতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখনো সহিংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে আল-কায়দাসহ অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যদিও তালেবান অস্বীকার করে বলেছে, তাদের সঙ্গে আল-কায়দার কোনো যোগাযোগ আর নেই। তবে শনিবারের আত্মঘাতি বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে উগ্রবাদী সংগঠনটি। এমন প্রেক্ষাপটে বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে চাইছেনা। এরফলে ট্রাম্প প্রশাসনের সময় হওয়া শান্তিচুক্তি হুমকির মুখে পড়েছে। তালেবানের দাবি হচ্ছে, বিদেশি সেনাদের আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে হবে। তবে রয়টার্সকে ন্যাটো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মে মাসের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়ার যে প্রক্রিয়া চলছিল তা আর সম্ভব হবে না। তালেবান শর্ত মানছে না। আবার যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। নীতির পরিবর্তন আসতে পারে সেখানে। তাই তালেবান যদি কথা না শোনে তাহলে শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাতিল করা হতে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন হয়তো তালেবানকে আগের প্রশাসনের মতো করে দেখবে না এই আতঙ্ক পেয়ে বসেছে সংগঠনটিকে। একইসঙ্গে মে মাস নাগাদ বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া যে বাতিল হয়ে যেতে পারে তাতেও উদ্বিগ্ন তালেবান। এ নিয়ে দোহাতে এক তালেবান নেতা বলেন, আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা চুক্তির মর্যাদা রক্ষা করবে। কিন্তু আফগানিস্তানে ভিন্ন চিত্র দেখতে পাচ্ছি আমরা। এ জন্য আমরা নতুন নতুন দেশের কাছে যাচ্ছি। গত সপ্তাহে তালেবানের একটি দল রাশিয়া ও ইরানের কাছে যায়। তাদের নেতারা জানিয়েছে, চীনের সঙ্গেও তারা যোগাযোগের চেষ্টা করছে। ন্যাটোর মুখপাত্র ওয়ানা লাঙেসকু বলেন, ন্যাটোর কোনো সদস্য রাষ্ট্রই প্রয়োজনের বেশি আফগানিস্তানে অবস্থান করতে চাইছে না। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে শর্ত পূরণ না হলে আমরা আফগানিস্তান ছাড়তে পারি না। ন্যাটো অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে এবং এর ভিত্তিতেই তারা আরো হিসেব করে আফগানিস্তান ছাড়ার পরিকল্পনা সাজাবে। তিনি আরো জানান, আফগানিস্তানে এখন ১০ হাজার বিদেশি সেনা রয়েছে। মে মাসেও এই সংখ্যা একই থাকবে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকার তালেবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তি পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। পেন্টাগন স্পষ্ট করেই জানিয়েছে, তালেবান ওয়াশিংটনের শর্ত মানছে না। ফলে ওয়াশিংটনও চুক্তি অনুসরণ করে তাদের সেনাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারছে না। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে সন্ত্রাসবাদ ও যে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। রয়টার্স, আনাদোলু।



 

Show all comments
  • Jack+Ali ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১১:৫৪ এএম says : 0
    May Allah kill all American and NATO army from Afghanistan, so that peace will prevail.
    Total Reply(0) Reply
  • MD IMRAN MIA ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:১৩ এএম says : 0
    ... সাংবাদিক ভাই, কে আপনাকে বলেছে তালেবান আগে আক্রমন করছে, এটা কি আপনাকে অমুস্লিম মিডিয়া বলছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ