মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের মহারাষ্ট্রে ক্ষমতাসীন এবং হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত শিবসেনা পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতার কথা ঘোষণা করেছে। শিবসেনা এর আগেও যদিও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে লড়েছে, বিজেপির সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক বিচ্ছেদের পর এই প্রথম তারা পশ্চিমবঙ্গে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, হিন্দুত্ববাদী ভোটে ভাগ বসিয়ে নির্বাচনী লড়াইতে বিজেপিকে বিপাকে ফেলাই তাদের উদ্দেশ্য।
তবে পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু তাদের সংগঠন ও নেতৃত্ব খুবই দুর্বল, তাই শেষ পর্যন্ত শিবসেনা আদৌ সে রাজ্যের ভোটে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে কি না, তা নিয়েও অনেকে সন্দিহান।
বস্তুত বিজেপির অন্যতম পুরনো রাজনৈতিক শরিক শিবসেনার সঙ্গে তাদের বিচ্ছেদ সম্প‚র্ণ হয়েছে ২০১৯য়ে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের পরই।
শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এখন কংগ্রেস ও শরদ পাওয়ারের দল এনসিপির সমর্থন নিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, আর বিজেপি ওই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল।
গত কয়েক বছরে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মধ্যে আলাদা বৈঠকও হয়েছে একাধিকবার।
এ পটভ‚মিতেই রবিবার রাতে শিবসেনার প্রধান মুখপাত্র তথা সিনিয়র এমপি সঞ্জয় রাউত ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে টুইটারে ঘোষণা করেন : দলীয় প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে শিবসেনা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মুম্বাইয়ের সাংবাদিক হরিশ নাম্বিয়ার বহু বছর ধরে শিবসেনার রাজনীতি ফলো করছেন, তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন কেন শিবসেনা এই সিদ্ধান্ত নিল।
মি নাম্বিয়ারের কথায়, ‘শিবসেনা বেশ কিছুদিন ধরেই আশঙ্কা করছিল বিজেপি তাদের ক্রমশ গিলে খেতে চাইছে এবং তাতে মহারাষ্ট্রেও তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে’।
‘খেয়াল করে দেখবেন, মহারাষ্ট্রে ২০১৪তে তারা বিজেপির সঙ্গে মিলে সরকার গড়লেও আগাগোড়া সেখানে বিরোধী দলের ভ‚মিকাই পালন করে গেছে’।
‘আর এখন বিজেপির আগ্রাসী রাজনীতির জবাব তারা দিতে চাইছে আরও আক্রমণাত্মক রাজনীতি করে’।
‘পশ্চিমবঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাদের সর্বভারতীয় আকাঙাক্ষার কোনও সম্পর্ক আছে বলে মনে করি না, বরং তারা আসলে চাইছে যেখানে যেভাবে পারে বিজেপির সম্ভাবনাকে ব্যাহত করতে’।
অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটে ভাগ বসিয়ে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি যেভাবে বিজেপির সুবিধে করে দিতে পারেন বলে বলা হচ্ছে - ঠিক সেভাবেই শিবসেনাও যদি এক-দেড় শতাংশর মতো অল্প কিছু হিন্দুত্ববাদী ভোটও কাটতে পারে তাতে লাভবান হবে তৃণমূল কংগ্রেস।
তবে কলকাতায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিখা মুখার্জি বলছেন, ওই রাজ্যে শিবসেনার শক্তি একেবারেই নগণ্য - ফলে তারা ভোটে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে তা নিয়ে তার ঘোরতর সন্দেহ আছে।
মিস মুখার্জি বিবিসিকে বলছিলেন, ‘শিবসেনা এ রাজ্যে একেবারেই অপরিচিত দল। একে তো দলটা মহারাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ, তার ওপর পশ্চিমবঙ্গ তাদের নেতা, নেতৃত্বই বা কোথায়’?
‘একেবারে নির্বাচনের মুখে এসে তারা লড়ার ঘোষণা দিল। কিন্তু এ রাজ্যের ভোটে প্রার্থী দিলেও তারা শেষ পর্যন্ত কতটা কী করে উঠতে পারবেন সেটা নিয়ে আমার প্রশ্ন থাকছেই’।
‘এক-দেড় শতাংশ ভোট পেতে গেলেও একটা ন্য‚নতম সাংগঠনিক শক্তি কিন্তু লাগেই। যতই হোক, এটা হল নির্বাচনের লড়াই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে শিবসেনার সেই ধরনের অর্গানাইজেশন বা নেতৃত্ব কোনওটাই নেই’!
কিন্তু তার পরেও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে এবার এতটাই গুরুত্বপূর্ণ, বিজেপি যেভাবে সেখানে জেতার জন্য সর্বশক্তিতে ঝাঁপিয়েছে - তাতে শিবসেনার মতো দলও সেই নির্বাচনকে উপেক্ষা করতে পারছে না।
শিখা মুখার্জির কথায়, ‘দেশের প্রতিটা রাজনৈতিক দল কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ এটা শুধু একটা রাজ্যের ভোটের লড়াই, এর একটা বৃহত্তর জাতীয় তাৎপর্যও আছে’।
‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে এবার সফল হয় কি হয় কি না, তার একটা বড় অভিঘাত কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতেও পড়বে’।
‘কারণ সেই গত সত্তর বছর ধরেই পশ্চিমবঙ্গই দেশে একমাত্র রাজ্য যেখানে সেকুলার ঐক্য আর সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রাখার ব্যাপারে একটা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়ে আছে। সেটা বজায় থাকবে কি না, এবারের ভোট তারও পরীক্ষা’!
ফলে পশ্চিমবঙ্গে শিবসেনার মূল উদ্দেশ্য হবে যে কোনও মূল্যে বিজেপির উত্থান ঠেকানোয় একটা ভূমিকা রাখা - তা সে যতই সামান্য হোক।
তবে দলের একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা রাজ্যের কতগুলি আসনে লড়বেন বা কোথায় কোথায় লড়বেন তার কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।