Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কৃষি আইন নিয়ে বিতর্কের মুখে ভারতের দুই শীর্ষ ধনী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভারতের মোদি সরকারের জারি করা বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। এর মধ্যেই ভারতের দুই শীর্ষ ধনী ব্যক্তি কৃষি আইন নিয়ে অসম্ভব বিতর্কিত হয়ে উঠেছেন। তারা প্রতিবাদকারীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তাদের সুবিধা করে দিতেই কৃষি আইনগুলো জারি করা হয়েছে বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন কৃষকরা।
কয়েক সপ্তাহ ধরে কয়েক হাজার কৃষক ভারতে রাজধানীর বাইরে শিবির স্থাপন করেছেন ও কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন। তাদের দাবি, মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানির মতো শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ীদের কৃষিতে প্রবেশের সুযোগ দেয়ার জন্যই এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। যদিও ওই ব্যবসায়ীরা বলছেন যে, এ নিয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। কিন্তু তারপরেও গত মাসে আম্বানির ফোন কোম্পানীর দেড় হাজারের বেশি টাওয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে এবং কিছু কৃষক তাদের ব্যবসা বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সরকার ও কৃষকদের মধ্যে লড়াই মোদির জন্য একটি অন্যতম রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। তিনি ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্নভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আনছেন বলে তার সমালোচকরা দাবি করেন। যদিও করোনা মহামারির মধ্যে ভারতের লাখ লাখ মানুষ কাজ হারালেও তাদের দু’জনের সম্পদের পরিমাণ যৌথভাবে প্রায় ৪১০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ বিষয়ে মুম্বাইয়ের ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম আইআইএফএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক সঞ্জীব ভাসিন বলেন, ‘অর্থনৈতিক চাপের সময় ধনী ব্যক্তিদের সবাই ঘৃণা করতে পছন্দ করে।’ তিনি বলেন, ‘সামাজিক অসমতা নিয়ে লোকেরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এই বিশাল সংঘবদ্ধ বিক্ষোভ নতুন ব্যবসায়ের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। অর্থনীতি যখন বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে তখন সমস্ত গোলমাল মিটে যাবে।’ বৈষম্যের কথা তুলে ধরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অক্সফামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের সবচেয়ে ধনীতম ১ শতাংশ মানুষ গরীব দারিদ্রসীমার মধ্যে থাকা ৭০ শতাংশ অর্থাৎ, ৯৫ কোটি ৩০ লাখ মানুষের মোট সম্পদের থেকেও চারগুণ বেশি সম্পদ নিজেদের দখলে রেখেছেন। অসমতার বিরুদ্ধে কাজ করে এমন অলাভজনক সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের শীর্ষ নয়জন ধনকুবেরের সম্পদ গরীবতম ৫০শতাংশ জনগণের মোট সম্পদের সমপরিমাণ।

প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরে গৃহীত নতুন কৃষি আইনটি বেসরকারী সংস্থাগুলোকে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য ক্রয়ের অনুমতি দেবে। এর ফলে ন্য‚নতম সমর্থক মূল্যের গ্যারান্টিযুক্ত রাষ্ট্র পরিচালিত পাইকারি ক্রেতা এবং বাজারের কয়েক দশকের পুরাতন ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। উত্তর পাঞ্জাব রাজ্যের বেশিরভাগ কৃষকরা আশঙ্কা করছেন যে, রাষ্ট্রীয় সহায়তা অপসারণ তাদের বাজার পরিচালিত দামের ওঠানামায় ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। সরকারী নিশ্চয়তা সত্তে¡ও যে ন্য‚নতম সমর্থক মূল্যের নিরাপত্তা উঠে যেতে পারে। ভারতের প্রায় ১৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ৮০ কোটি মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভর করে। সূত্র : টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ