মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে একটি কোম্পানির তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ব্যবহারে ট্রায়াল সম্পূর্ণ হবার আগেই যেভাবে সরকারি অনুমোদন দেয়া হয়েছে - তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভ্যাক্সিন নামের এই টিকাটিকে ভারতে সরকারি অনুমোদন দেয়া হয় রোববার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর পর ঘোষণা করেন, এই ভ্যাকসিন হবে এক ‘গেম-চেঞ্জার’। এদিকে, আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকেই ভারতে শুরু হতে পারে করোনার টিকাকরণ। গতকাল এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। একই সঙ্গে এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, ভ্যাকসিন রপ্তানির উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন দেবার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান অল ইন্ডিয়া ড্রাগ এ্যাকশন নেটওয়ার্ক বলেছে, ব্যাপারটায় তারা ‘স্তম্ভিত।’ প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ভ্যাকসিনটি কতটুকু কার্যকর সে ব্যাপারে কোন উপাত্ত নেই এবং এ ব্যাপারে স্বচ্ছতারও অভাব রয়েছে - যা গুরুতর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এর ফলে উত্তরের চেয়ে বেশি প্রশ্ন তৈরি হবে এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা বাড়বে না। এই বিবৃতির আগে ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ভি জি সোমানি জোর দিয়ে বলেন, কোভ্যাক্সিন ১০০ শতাংশ নিরাপদ এবং এটা মানবদেহে শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটি সীমিত ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে এবং ‘এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অন্য সব টিকার মতই - যেমন সামান্য জ্বর, ব্যথা এবং এ্যালার্জি।’ কিন্তু অল ইন্ডিয়া ড্রাগ এ্যাকশন নেটওয়ার্ক বলছে, যে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে তাকে এভাবে অনুমোদন দেবার বৈজ্ঞানিক যুক্তি তারা বুঝতে পারছেন না। ভারতের অগ্রগণ্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একজন ডক্টর গগনদীপ কাং বলেন, এরকম ঘটনা তিনি আগে কখনো দেখেননি। তিনি বলেন, এ টিকাটির কার্যকারিতা কতখানি সে ব্যাপারে কোন উপাত্তই নেই যা প্রকাশ বা উপস্থাপন করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমেও অনেকে বলেন যে ট্রায়াল সম্পন্ন হবার আগে টিকা অনুমোদন করে দেয়াটা উদ্বেগজনক - এমনকি পরে যদি এটা কার্যকর বা নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয় তাহলেও। দিল্লি থেকে বিবিসির বিকাশ পান্ডে জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবক ভারত বায়োটেক বলছে টিকাটির প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়ালে ভালো ফল পাওয়া গেছে, সরকারি কর্তৃপক্ষও একে নিরাপদ ও কার্যকর বলে মত দিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেহেতু টিকাটির কার্যকারিতার উপাত্তগুলো অন্য বৈজ্ঞানিকদের যাচাই করে দেখার জন্য প্রকাশ করা হয় নি - সেটাই এ উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিকাশ পান্ডে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই কোভ্যাক্সিনকে ‘আত্মনির্ভর ভারতের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন কিন্তু টিকাটি নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠছে তা এ প্রচারণার জন্য অনুকুল হবে না। তা ছাড়া অনেকের মতে সরকারকে টিকা অনুমোদনের প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আরো স্বচ্ছতা দেখাতে হবে, কারণ কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য নির্ভর করছে জনগণের আস্থার ওপর।
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবের তরফে জানানো হয়েছে. কলকাতা, কার্নাল, মুম্বাই এবং চেন্নাইতে ভ্যাকসিন মজুত করার জন্য চারটি প্রাইমারি স্টোর তৈরি করা হয়েছে। গোটা দেশে মোট ৩৭টি স্টোর তৈরি করা হচ্ছে। এই স্টোরগুলিতেই বিপুল সংখ্যায় ভ্যাকসিন মজুত করে রেখে সেখান থেকে তা সরবরাহ করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মী এবং করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করছেন যারা, তাদের ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করার প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাদের করোনার টিকা দেয়া হবে তার ডেটাবেস তৈরি করেছে কেন্দ্র। অন্যদিকে, কোভিড প্রতিষেধক দেয়ার কাজ মসৃণ ভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ও ভারত বায়োটেক। সিরামের কর্ণধার আদার পুনাওয়ালা ও ভারত বায়োটেকের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার কৃষ্ণা এল্লা যুগ্নভাবে বিবৃতি দিলেন গতকাল। দুই কোম্পানির তরফে বলা হয়েছে, ‘দুই করোনা টিকাকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে ভারতে। এখন আমাদের ফোকাস উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিতরণ। যাতে মানুষ সবচেয়ে উন্নত মানের, নিরাপদ ও কার্যকারী ভ্যাকসিন পায়। উভয় সংস্থাই পুরোপুরি ভাবে এই ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে নিযুক্ত। টিকাকরণের কাজ মসৃণ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা দেশ এবং বিশ্বের কাছে দায়বদ্ধ বলে মনে করি। এই দুই সংস্থা পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের কোভিড ভ্যাকসিন উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মানুষ এবং দেশগুলির জন্য এই ভ্যাকসিনগুলির গুরুত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন। আমরা যৌথভাবে অঙ্গীকার বদ্ধ হচ্ছি ভ্যাকসিনগুলির জন্য বিশ্বব্যাপী সরবরাহের জন্য সচল রাখতে পারি।’ সূত্র : বিবিসি, নিউজ ১৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।