Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মের চেয়ে মৃত্যুহার বাড়ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৭:১০ পিএম

২০২০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় যত শিশুর জন্ম হয়েছে তার চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন ঘটনা দেশটিতে এই প্রথম। দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এটা এক ধরনের সতর্কতা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার খাতায় অনেক আগেই নাম লিখিয়েছে।

জরিপ বলছে, দেশটিতে ২০২০ সালে জন্ম নিয়েছে দুই লাখ ৭৫ হাজার ৮০০টি শিশু। আর মৃত্যু হয়েছে তিন লাখ ৭ হাজার ৭৬৪ জন মানুষের।

জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ফলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের বেশ কিছু নীতিমালায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। একটি দেশে ক্রমাগত জনসংখ্যার নিম্নহার সে দেশের জন্য বড় ধরনের চাপ তৈরি করে।

একটি দেশে তরুণদের তুলনায় বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বেড়ে গেলে জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও পেনশনের চাহিদার মতো ব্যয় বৃদ্ধি পায় যা সে দেশের সরকারের ওপর এক ধরণের চাপ সৃষ্টি করে। অপরদিকে তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমে গেলে তা শ্রম সঙ্কট তৈরি করে, যা সরাসরি দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলে।

গত মাসে জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কিছু নীতিমালা ঘোষণা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জ্যা ইন। দেশটিতে দম্পতিদের সন্তান নেওয়ার প্রতি উৎসাহিত করতে নগদ অর্থ প্রদানের পরিকল্পনাও নেয়া হয়েছে।

নতুন প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সাল থেকে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশু ২ মিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা ১ হাজার ৮৫০ ডলার নগদ অর্থ পাবে। এটা তাদের লালন-পালন বাবদ তাদের বাবা-মা’কে প্রদান করা হবে। শিশুর বয়স এক বছর না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে তার বাবা-মা ৩ লাখ ওন নগদে পাবেন। ২০২৫ সাল থেকে এই প্রণোদনা বাড়িয়ে প্রতি মাসে ৫ লাখ ওন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

জন্মহার কমার জন্য সরকারের একটি কমিটি দীর্ঘ কাজের সময়কেই দায়ী করেছে। বলা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর দিনের বেশিরভাগ সময় কর্মস্থলে কেটে যাচ্ছে। ফলে তারা পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাড়াকে অনেকটা ঝামেলা হিসেবেই দেখে। দায়িত্বশীল মা-বাবা হিসেবে তারা সন্তানকে ঠিকভাবে সময় দিতে পারবেন না বলে পরিবার বড় করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তারা সন্তানদের প্রতি অবিচার করতে চান না।

তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় নারীদের একটি বড় অংশই কর্মজীবী। কর্মক্ষেত্র এবং অন্যান্য চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করতে গিয়ে নারীদের বেশ যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
আবাসন-সহ বিভিন্ন জিনিসের মূল্য বৃদ্ধিও এক্ষেত্রে একটি বড় কারণ। ক্রমাগত সম্পদের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কম বয়সী দম্পতিরা পরিবার বড় করার বিষয়ে অনুৎসাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘পরিবারে সদস্য বাড়াতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই নিজের একটি বাড়ি প্রয়োজন। কিন্তু কোরিয়ায় এই স্বপ্ন পূরণ করা অসম্ভব।’

সরকার যে প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়েছে সে বিষয়েও ইতিবাচক কিছু দেখছেন না বলে জানিয়েছেন হিয়ন ইউ কিম। তার মতে, কোরিয়ায় সন্তান পালন করা বেশ ব্যয়বহুল। সরকার যা দেবে তা সন্তান লালন-পালনের জন্য যথেষ্ট নয়। সূত্র: দ্য কোরিয়া টাইমস



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণ কোরিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ