Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ট্রাক্টর মিছিল, শপিংমল-পেট্রল পাম্প বন্ধেরও হুঁশিয়ারি

কৃষক-সরকার ফের বৈঠক কাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারত সরকারের মুখের কথায় না ভুলে, এবার একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইছেন কৃষকরা। কৃষক নেতারা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, শাহীনবাগের প্রতিবাদীদের মতো তাদের ছত্রভঙ্গ করা যাবে না। ৪ জানুয়ারি দাবি না মিটলে বিরাট ট্রাক্টর মিছিল হবে ৬ জানুয়ারি।
কৃষি আইন বাতিল নিয়ে কেন্দ্রের অনেক ধানাই-পানাই এ ক’টা দিন ধরে তারা সহ্য করেছেন। এ বার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। কেন্দ্রের কথায় না ভুলে আরও বড় আন্দোলনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। ইংরেজি বছরের প্রথম দিন গত শুক্রবার কৃষক নেতারা জানান, ৪ জানুয়ারির বৈঠক পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবেন। ওই দিন সপ্তম দফায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের বৈঠক রয়েছে। বৈঠকের ফল কৃষকদের পক্ষে না গেলে, অর্থাৎ কেন্দ্র কৃষি আইন বাতিল না করলে, তারা এবার দিল্লি সীমানায় আটকে না থেকে বিশাল ট্রাক্টর মিছিল করবেন। ৬ জানুয়ারি ট্রাক্টর মিছিলের দিন ঘোষিত হয়েছে। তার আগে ৪ জানুয়ারির বৈঠক পর্যন্ত তারা চ‚ড়ান্ত ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করবেন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা যশবীর সিং এ মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে শেষ বৈঠকের এজেন্ডায় কৃষকদের তরফে চারটে প্রস্তাব ছিল। তার মধ্যে দু’টি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর মেনে নিলেও মূলত যে দাবির ভিত্তিতে আলোচনা, তা নিয়ে কোনও কথাই হয়নি। কৃষি আইন বাতিলের প্রসঙ্গ কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন কৃষকরা। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি। তার পরেও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই নতুন ইংরেজি বছরের শুরুতে আগামীকাল ফের কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন কৃষকরা। যশবীর সিংয়ের কথায়, ‘কেন্দ্র কৃষকদের হালকাভাবে নিচ্ছে’।

ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের এ নেতা বলেন, ‘ওরা (কেন্দ্র সরকার) শাহীনবাগের প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন ভেবেছে আমাদের সঙ্গেও একই কৌশল নেবে। কিন্তু, সেই দিন কখনও আসবে না’। যশবীরের কথায়, ‘৪ জানুয়ারি সরকার যদি কোনও সিদ্ধান্ত না নেয়, সে ক্ষেত্রে কৃষকদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে’।
তিনি আরও জানান, ৪ জানুয়ারির বৈঠকে আশানুরূপ ফল না হলে, হরিয়ানা-রাজস্থান সীমানায় যে কৃষকরা আন্দোলন চালাচ্ছেন, তারাও এবার দিল্লির দিক রওনা দেবেন। ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লির দিকে এগোনোর চেষ্টা করায়, বছরের শেষ দিন ওই কৃষকদের একাংশকে বেধড়ক পেটায় হরিয়ানা পুলিশ। দাবি না মিটলে হরিয়ানার সমস্ত পেট্রলপাম্প ও শপিংমল বন্ধ করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন কৃষক নেতারা।

সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত স্বরাজ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা যোগেন্দ্র যাদব বলেন, ৫০ শতাংশ ইস্যু মিটে গেছে বলে কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, তা আসলে মিথ্যে। আমাদের মূল দুটো দাবি, নয়া তিন কৃষি আইন বাতিল ও ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি নিশ্চয়তার বিষয়টি এখনও মেটেনি।

আরো এক কৃষকের মৃত্যু
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় আন্দোলনরত আরও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মনোহর সিং নামে ৫৭ বছর বয়সি ওই কৃষকের হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে কৃষক সংগঠনের তরফে শনিবার জানানো হয়েছে। মৃত কৃষকের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বাগপত জেলার ভগবানপুর নাঙ্গাল গ্রামে। শুক্রবার তিনি অসুস্থ বোধ করলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানান, মনোহর সিং নামে ওই কৃষক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।

ডাক্তারি রিপোর্টের উল্লেখ করে ইন্দিরাপুরমের ডিএসপি অংশু জৈন সংবাদ সংস্থাকে জানান, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে কৃষকের। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি রাজবীর সিং এদিন বলেন, আন্দোলনরত অবস্থায় মৃত কৃষকদের অবশ্যই ‘শহিদ’ হিসেব ঘোষণা করতে হবে। গাজিপুরে মৃত এই কৃষকে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের পতাকায় মুড়ে শেষশ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন রাকেশ টিকাইত। গাজিপুরে অবস্থানরত কৃষকরা মৃতের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে মোমবাতি মিছিলও করেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ