বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে পাহাড়ি অঞ্চলের দুই সহস্রাধিক নারী-পুরুষ মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে। বৃহস্পতিবার উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নে গোড়াই-সখিপুর সড়কের খলিলুর রহমান কলেজের সামনে বাঁশতৈল ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণের পক্ষে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বিভিন্ন প্লেকার্ড বহন করেন তাতে লেখা ছিল “গৃহহীনকে গৃহ দিবেন, আমাদের কেন উচ্ছেদ করবেন” “পাখির বাসাও মানুষ ভাঙে না, আমাদের বাসা কেন ভাঙবেন” “বন বিভাগের গৃহ উচ্ছেদ মামলা প্রত্যাহার কর, করতে হবে” বন বিভাগের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর, করতে হবে”।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯২০ সালে সেটেলমেন্ট রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পর তৎকালীন সরকার ১৯২৭-২৮ সালের গেজেট মূলে জেলার মির্জাপুর, সখিপুর, মধুপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার একর ভূমি বন বিভাগের কাছে ন্যস্ত করে। ১৯৮২ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকার আটিয়া অধ্যাদেশ জারি করে বসতবাড়িসহ ১৯৬২ সালের রেকর্ডভুক্ত জমিও এই অধ্যাদেশের অন্তর্ভূক্ত করে। এই অধ্যাদেশের আওতায় বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার একর ভূমি রয়েছে বলে জানা গেছে। অধ্যাদেশের ফলে এসব এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাপ দাদার ভিটে বাড়ির মালিকানাও হারাতে বসেছে। বনবিভাগের লোকজন তাদের নামে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানিসহ ঘরবাড়ি উচ্ছেদের জন্য নোটিশও দেয়। ভিটে মাটি রক্ষার দাবিতে বেলা এগারটা থেকে বাঁশতেল ইউনিয়নের গায়রাবেতিল, বালিয়াজান, মোতারচালা, আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা, চিতেশ্বরী, বেলতৈলসহ কয়েকটি গ্রামের দুই সহস্রাধিক নারী-পুরুষ গোড়াই-সখিপুর সড়ক অবরোধ করে শান্তিপূর্ন মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। ঘন্টাব্যাপি চলা এই কর্মসূচীর কারনে গোড়াই- সখিপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আল আজাদের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও বিআরডিবির চেয়ারম্যান জহিরুল হক, বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুই চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু ও শামসুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আদিবাসী নেতা সুনীল সারথি বর্মণ, বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম, শমসের আলী মাষ্টার প্রমুখ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেয়া বাশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের নব্বই বছর বয়সী মজিবুর রহমান, গায়রাবেতিল গ্রামের পচাত্তর বছর বয়সী জসিম দেয়ান একই গ্রামের গফুর সিকদার, তেলিনা গ্রামের সত্তর বছর বয়সী আফতাব ভানু ও তার পুত্র বধু সাজিনা বেগম জানান, আটিয়া অধ্যাদেশের কথা বলে তিন পুরুষের ভিটি বাড়ি উচ্ছেদের জন্য বন বিভাগের লোকজন হুমকি দিচ্ছে। তারা এই কালো আইন বাতিলের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান।
টাঙ্গাইল জেলা বন কর্মকর্তা ড. জহিরুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আটিয়া বন অধ্যাদেশ আওতার বাইরে কোন ঘর বাড়ি উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়নি। তবে এই অধ্যাদেশের আওতাভুক্ত সব জমিই বন বিভাগের বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।