Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কৃষি বিল ও শরিকি কোন্দলে জর্জরিত বিজেপি, ভাঙনের‌ মুখে জোট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:১৭ পিএম | আপডেট : ৫:৪২ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০

ভারতের একাধিক রাজ্যেই জোট গড়ে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। কিন্তু ধীরে ধীরে গেরুয়া শিবিরের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে শরিক দলগুলো। বিহারে জেডিইউ–এর মতোই দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুতেও বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করতে চাইছে তাদের আরেক জোট শরিক এআইএডিএমকে। গত শনিবারই বির্কিত কৃষি আইনের প্রতিবাদে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি।

২০২১ সালেই তামিলনাড়ুতে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কোনও জাতীয় রাজনৈতিক দলের স্বৈরাচারী মনোভাব কোনওভাবেই মানবে না এআইএডিএমকে। প্রয়োজনে জোট হবে না। রোববার নাম না করেই বিজেপিকে এভাবে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এআইএডিএমকে’‌র সাংসদ কেপি মুনুস্বামীর। যিনি আবার রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের ডেপুটি কো–অর্ডিনেটরও। সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশে নিজের শরিকেরই ঘর ভেঙেছে বিজেপি। অরুণাচল বিধানসভায় নির্বাচিত জেডিইউয়ের ৬ বিধায়ক একসঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। ফলে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে প্রধান বিরোধী দলের উপাধী হারিয়েছে নীতীশ কুমারের দল। আপাতত নীতীশের দলের হাতে রয়েছে একজন মাত্র বিধায়ক। আর এই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে বিহারে। নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী চেয়ার থেকে সরে যাবেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী কে হবে?‌ কার্যত সেই প্রশ্নেই বিরোধ বেঁধেছে এআইএডিএমকে ও বিজেপি’‌র মধ্যে। প্রথম থেকেই পালানিস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছে এআইএডিএমকে। কিন্তু বিজেপিও ধারে–ভারে বুঝিয়েছে, এখনই তারা এ ব্যাপারে জোটসঙ্গীদের সবুজ সংকেত দেবে না। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, তা এড়িয়েই যান তিনি। এরপরই রোববার সাংসদ কেপি মুনুস্বামী স্পষ্ট জানান, ‘কোনও জাতীয় দল যদি স্বৈরাচারী মনোভাব দেখায়, তাহলে তাদের জোটে না থাকাই উচিত।’‌ তার এই বক্তব্য যে বিজেপিকে উদ্দেশ্য করেই তা আর বুঝতে বাকি নেই। প্রসঙ্গত, আগামী বছর এপ্রিল–মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের মতো তামিলনাড়ুতেও বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জোট শরিক বিজেপির রাজ্যে একজনও বিধায়ক বা সাংসদ নেই। তাই কোনওরকম সমঝোতাতেই হাঁটবে না প্রয়াত সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার দল। ফলে বিহারের মতো দক্ষিণের এই রাজ্যেও বিপাকে বিজেপি।

এদিকে, কৃষকদের দাবি পূরণ না হলে, বিজেপি'র সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি। কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদেই রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি এনডিএ ছেড়েছে, শনিবার তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে তারা। রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির প্রধান হনুমান বেনিওয়াল শনিবার নিজেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। একই দিনে লোকসভার সাবেক সাংসদ হরিন্দর সিং খালসাও পদত্যাগ করে বিজেপি’র সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। কারণ হিসেবে জানান, আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যে ‘অসংবেদনশীল’ আচরণ করছেন, তা মন থেকে তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তাই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতেই তিনি ইস্ততা দিয়েছেন। হরিন্দর সিং খালসা বলেন, ‘কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে পরিবার-বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে কৃষকরা আজ রাস্তায় নেমে এসেছেন। এই ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন। কেন্দ্র তবু নির্বিকার। কৃষকদের প্রতি কেন্দ্রের এই অসংবেদশীলতা তাকে ব্যথিত করেছে। তাই বিজেপি থেকে ইস্তফা দিলেন।’ আম আদমি পার্টির প্রতীকে ফতেহগঢ় সাহিব থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন খালসা। আপ তাকে সাসপেন্ড করলে, তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।

কয়েক মাস আগেই বিজেপির পুরনো সহযোগী, এনডিএ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আকালি দল কৃষি আইন ইস্যুতে বেরিয়ে গিয়েছে। এনডিএ’র শরিকরা একে একে জোট ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ায়, এদিন বিজেপি’র কঠোর সমালোচনা করে শরদ পাওয়ারের এনসিপি। বিজেপিকে কটাক্ষ করে এনসিপির মুখপাত্র মহেশ তপসে বলেন, ‘কেন্দ্রের কৃষি আইনগুলি স্বভাবে কঠোর। একে একে এনডিএর শরিকরা ছেড়ে যাবে।’ সূত্র: টিওআই, টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ