নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অটোরিকশাচালক বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে ক্রিকেটার হবে। ভারতীয় দলের জার্সিতে একটি টেস্ট হলেও খেলবে। হায়দরাবাদের হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সিরাজ পূরণ করেছেন লক্ষ্য। তবে তার বাবা মোহাম্মদ ঘাউস তা দেখে যেতে পারেননি। গত নভেম্বর মাসে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন তিনি। স্বপ্নকে সত্যি করতে বাবা-ছেলের সংগ্রামের গল্প ভারতীয় গণমাধ্যমকে শুনিয়েছেন সিরাজের শৈশবের কোচ কে. সাইবাবা।
গতকাল মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে ২৬ বছর বয়সী সিরাজের। সাদা পোশাকে প্রথম দিনেই আলো ছড়িয়েছেন তিনি। আগে একটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ফাস্ট বোলার ৪০ রান খরচায় নিয়েছেন ২ উইকেট। মারনাস লাবুশেনকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে শুভমান গিলের ক্যাচে পরিণত করার পর তিনি এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ক্যামেরন গ্রিনকে।
সিরাজ ভারতের একাদশে জায়গা করে নেওয়ার পর সাইবাবা বলেছেন, ‘আমার হাতে সিরাজকে তুলে দিয়ে ঘাউস বলেছিলেন, ছেলে যেন অন্তত একটি টেস্ট খেলতে পারে দেশের হয়ে। কথা দিয়েছিলাম, আমি সিরাজকে তৈরি করবই। শনিবার ঘাউস ও আমার স্বপ্ন প‚রণের দিন। আমি চাই, সকলে ওকে (সিরাজকে) আশীর্বাদ করুন। সিরাজ যেন প্রমাণ করতে পারে, ক্রিকেটার হওয়ার জন্য সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানোর প্রয়োজন নেই।’
সিরাজের প্রতিভার কদর বুঝে তাকে স্থানীয় একটি ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করে দিয়েছিলেন ঘাউস। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে খরচ চালাতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। সেসময়ে এগিয়ে আসেন সাইবাবা। তিনি সিরাজকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেন। এরপর কেবলই তরতর করে সামনে এগিয়ে চলা। ২০১৭ সালে ভারতের টি-টোয়েন্টি জার্সি গায়ে চাপানোর পর গত বছর আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলার স্বাদও পেয়ে যান সিরাজ।
পরম তৃপ্তিতে সবই দেখেছেন ঘাউস। কিন্তু ছেলের টেস্ট অভিষেকের মুহ‚র্তে তিনি আর বেঁচে নেই। গত মাসের শেষদিকে ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। সিরাজ তখন অস্ট্রেলিয়াতে। তাকে দেশে ফেরার সুযোগ দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু সিরাজ ভারতের টেস্ট জার্সিতে খেলেই বাবাকে সম্মান জানাতে চেয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন সাইবাবা, ‘বাবার আকস্মিক প্রয়াণের পরে কিন্তু চাইলেই ও দেশে ফিরতে পারত। বাবা ছিলেন ওর প্রিয় বন্ধু। ওকে হারানোর পরে ওর মনের মধ্যে কী চলতে পারে, তার আন্দাজ করতে পেরেছিলাম। কিন্তু দেশে ফিরে এলে এই ম্যাচটি কি ও খেলতে পারত? অস্ট্রেলিয়ায় থেকে গেল বলেই না বাবার ইচ্ছা পূরণের সুযোগ পাচ্ছে।’
ঘাউস একবার সারারাত অটো চালিয়ে ছেলের জন্য একজোড়া জুতা কিনে দিয়েছিলেন। সেই জুতা পরে অনূর্ধ্ব-১৯ প্রতিযোগিতায় ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সিরাজ। এমন লড়াইয়ের গল্প আরও আছে। তাই সাইবাবার প্রত্যাশা, সিরাজ-ঘাউসের সাধনার কীর্তিতে অনুপ্রাণিত হবে আরও অনেক উঠতি ক্রিকেটার, ‘সিরাজের কাহিনী প্রত্যেককে অনুপ্রাণিত করে। আমি চাই, ক্ষুদে ক্রিকেটারেরাও শিখুক, মনের জোর কোথায় পৌঁছে দিতে পারে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।