মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উত্তর গোলার্ধটি এ মুহূর্তে চরম শীত বিরাজ করছে। দিনের আলো নেই বললেই চলে। তবে আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম জায়গায় লোকেরা কীভাবে বাস করে?
বিশ্বের শীতলতম স্থান যেখানে জানুয়ারির গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং চোখের চার দেয়াল থেকে পানি বেরিয়ে আসার সাথে সাথে বরফ হিম হয়ে যায়। পানি জমে বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কায় এখানে বাড়িতে পাইপ স্থাপন করা হয়নি। যেমন পেট্রল যাতে জমতে না পারে সেজন্য যানবাহন সার্বক্ষণিক চালু থাকে। এটি রাশিয়ার সাইবেরিয়া রাজ্যের ওমিয়াকন, যেখানে ২০১৮ সালে একটি থার্মোমিটার মাইনাস ৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দেখিয়েছিল। এটি এমনই এক গ্রাম যেখানে মাইনাস ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও স্কুল খোলা থাকে।
১৯২০ এবং ১৯৩০-এর দশকে এসব এলাকায় কোনো জনবসতি ছিল না। তবে বসন্তে পরিব্রাজকরা কদাচ এখানে অবস্থান করতেন। সোভিয়েত সরকার এটিকে স্থায়ী জনবসতিতে রূপান্তরিত করে।
১৯৩৩ সালে এখানে মাইনাস ৬৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা উত্তর গোলার্ধের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসাবে স্বীকৃত। এখানকার ঠান্ডা চোখের পাতাকে হিমশীতল করে দিলেও দৈনন্দিন জীবন থেমে থাকে না।
এখানকার গড় তাপমাত্রা সাধারণত মাইনাস ৪০-এর কাছাকাছি থাকে, ঠান্ডা বিবেচনা করে এখানে একটি মানুষের বসতি স্থাপনের ধারণাটি অবিশ্বাস্য মনে হয়, তবে লোকেরা এখনও সেখানে বাস করে। মস্কো থেকে ৭ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিশ্বের শীতলতম গ্রামটিতে ৫০০ জন লোকের বসবাস রয়েছে। পশুপাখি এবং মাছ ধরা এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। খামারে গরু রয়েছে, তবে তারা কেবল জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুধ দেয়। বল্গাহরিণ একমাত্র প্রাণী যা এখানে পালন করা হয়। এখানকার বাড়িগুলো শীত প্রতিরোধী হিসেবে তৈরি করা হয়, কারণ বেশিরভাগ মানুষের সময় বাড়ির ভিতরেই কাটে।
মাছ পানি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ২০ সেকেন্ডের মধ্যে হিমশীতল হয়ে যায় এবং বাতাসের তাপমাত্রা মাছের ক্ষতি করে না বলে তাদের নিরাপদ রাখতে কোন ফ্রিজের প্রয়োজন হয় না।
তবে যারা এ কাজের অংশ তাদের নিজেদের যতটা সম্ভব উষ্ণ রাখা দরকার। এক সাংবাদিকের মতে, সেখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের চিত্রগ্রহণের সময় আমার হাতগুলো হিম হয়ে গিয়েছিল এবং এতে ব্যথা করতে শুরু করে। তবে মাছ বিক্রেতারা সেখানে সারাদিন দাঁড়িয়ে ছিল। কীভাবে তারা নিজেদের উষ্ণ রাখছে সাংবাদিক তা ভেবে পাচ্ছেন না।
ফটোগ্রাফাররা এ চরম ঠান্ডা সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করেন। তারা মাইনাস ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়েও চিত্র ধারণ করেন এবং কোনো ধরনের ফটোশপ ব্যবহার ছাড়াই সেগুলো মূর্ত হয়ে ওঠে।
তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণ হ’ল সমুদ্র থেকে দীর্ঘ দূরত্ব, যখন মানুষ বছরের বেশিরভাগ জায়গায় কেবল কয়েক ঘণ্টা সূর্যের আলো উপভোগ করার সুযোগ পান। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা মাঝে মাঝে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। সবচেয়ে মজার বিষয় হ’ল শীতের কারণে সবকিছু হিমশীতল হয় সেই গ্রামের নাম ‘ওমিয়াকন’ মানে এমন পানি যা কখনই জমে না। তবে কিছু সূত্র বলেছে যে, নামের উচ্চারণটি সঠিক নয়, এটি ‘হিউয়াম’ যার অর্থ হিমায়িত হ্রদ। এটি সমুদ্রতল থেকে ৭৫০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। লোকেরা এ জায়গাটিকে উত্তর মেরু ঠান্ডা বলে অভিহিত করেছে। এ শীত এই পুরো গ্রামকে শীতের আশ্চর্য ভূমিতে পরিণত করেছে।
ডিসেম্বর মাসে সূর্যের আলো কেবল ৩ ঘণ্টা স্থায়ী হয়, তবে জুনে এটি ২১ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কিন্তু এসব অসুবিধা সত্তে¡ও শীতকালে অনেক পর্যটক তার সৌন্দর্য দেখতে আসেন এবং চোখের পলকে জমে যাওয়ার কোনো পরোয়া করেন না। সূত্র : ডন নিউজ অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।