মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনাতেও জট না কাটার ইঙ্গিত। গতকাল দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীয‚ষ গয়াল এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী সোম প্রকাশ। নয়া কৃষি আইন বাতিল দাবিতে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ আন্দোলনে গত কয়েক দিন ধরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি পাঞ্জাব-হরিয়ানায়। এ অচলাবস্থা কাটাতে সোমবার কৃষকদের আলোচনায় আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। তাতে সাড়া দিয়ে গতকাল দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকে বসে দু’পক্ষ। দুপুর ৩টা নাগাদ বৈঠক শুরু হয়।
কেন্দ্র যে তিনটি কৃষি আইন কোনোভাবেই প্রত্যাহার করতে রাজি নয়, সে কথা কৃষকদের জানিয়ে দেয়া হয় কেন্দ্রের তরফে। তবে কৃষকদের সব সমস্যা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয়া হয়। অন্যদিকে আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় রয়েছেন কৃষকরাও।
জনসমুদ্রে অসহায় সরকার। প্রায় ১২ লাখ কৃষক কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লি ঘেরাও করেছেন। বাম সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভা (এআইকেএস)সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে গত ৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ রাজধানী। পরিস্থিতি ঘোরতর বুঝে কোনো শর্ত ছাড়াই আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে তৈরি হয় এনডিএ সরকার।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। অন্যদিকে বারাণসী থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার্তা দেন, কৃষি আইনে কৃষকদের ক্ষতি হবে না। তবে তার বার্তা উড়িয়ে দেন বিক্ষোভকারী কৃষকরা।
বিজেপি নেতৃত্বে চলা এনডিএ সরকারের কৃষি আইন কৃষকদের জন্য সর্বনাশ -এমনই দাবি বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের। তাদের আরো অভিযোগ, আইন করে বেসরকারি সংস্থার কাছে দেশের কৃষি ক্ষেত্রকে বিকিয়ে দিয়েছে সরকার। এ আইন বাতিল দাবিতে দিল্লি ঘেরাও করেছেন লাখ লাখ কৃষক। মূলত পশ্চিম ও উত্তর ভারতের বিরাট কৃষি এলাকা এ বিক্ষোভে সামিল। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ থেকে ইতোমধ্যেই ১২ লাখ কৃষক মিছিল করে দিল্লি অবরোধে যাচ্ছেন। এখনও দিল্লিতে সেই বিক্ষোভ ঢোকেনি। তার আগেই দিল্লির সঙ্গে হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। খাদ্য সঙ্কট শুরু হতে চলেছে রাজধানীতে। এতেই দিল্লির বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন। দাম বাড়ছে হু হু করে। অন্যদিকে আন্দোলনকারী কৃষকদের জন্য হরিয়ানার কৃষকরা লরি লরি ফুলকপি, মুলোসহ সবজি পাঠাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি সরকার আইন বাতিল না করলে আগামী ৬ মাস দিল্লি ঘেরাও করা হবে।
বিরোধী কংগ্রেস, সিপিআইএম, সিপিআইসহ বিভিন্ন বাম দল ও একাধিক বিরোধী দল কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। এ আন্দোলনে সামিল এনডিএ জোট ত্যাগ করা শিরোমনি আকালি দল। তারাও সরকারের কৃষি নীতির প্রবল বিরোধিতা করে জোট ছাড়ে। গতকাল হরিয়ানায় মনোহরলাল খট্টর সরকারের থেকে সমর্থন তুলে নিলেন নির্দল বিধায়ক সোমবীর সাঙ্গোয়ান। কৃষক বিদ্রোহের আবহেই হরিয়ানায় বিজেপি সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন তিনি। এর আগে, হরিয়ানায় পশুধন উন্নয়ন পর্ষদের (লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট বোর্ড) চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি।
হরিয়ানা বিধানসভার স্পিকারকে চিঠিতে সাঙ্গোয়ান লিখেছেন, যে সরকার কৃষকদের বিরুদ্ধে, সেই সরকারকে তিনি সমর্থন করতে পারবেন না। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাঙ্গোয়ান বলেছেন, ‘দাদরি থেকে ট্রাক্টরে করে দিল্লি সীমানায় গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে যোগ দেব’। তিনি আরও বলেছেন, ‘তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আমি’।
উল্লেখ্য, কৃষি আইন ঘিরে কৃষক বিদ্রোহের আবহে এবার কার্যত এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরতে চলেছে আরেক শরিক রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির (আরএলপি)। টুইটে আরএলপি প্রধান হনুমান বেনিওয়াল লিখেছেন, ‘আরএলপি এনডিএ-র শরিক। কিন্তু আমাদের দলের শক্তি হলেন কৃষক জওয়ানরা। যদি এ ব্য়াপারে কোনও ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে কৃষকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এনডিএ-র সহযোগী দল হিসেবে থাকব কিনা পুনর্বিবেচনা করব’।
কেন্দ্রের নতুন কৃষি নীতি প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিলের সমর্থনে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও চলছে কৃষক বিক্ষোভ। বাম কৃষক সংগঠনের পাশাপাশি এতে সামিলার এআইকেএসসিসি, আরকেএমএস, বিকেইউ (রাজেওয়াল), বিকেইউ (চাদুনি)সহ অন্যান্য কৃষক সংগঠন।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে ট্রুডো উদ্বিগ্ন
ভারতের নতুন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। গুরু নানকের ৫৫১তম জন্মদিন উপলক্ষে অনলাইনে কানাডার শিখ স¤প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, অধিকারের জন্য ভারতের কৃষকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সব সময় পাশে থাকবে কানাডা। ট্রুডোই বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি ভারতের কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে ট্রুডোর এ বক্তব্য ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে প্রকাশ করা হয়। সেখানে ট্রুডো বলেন, ভারত থেকে কৃষকদের প্রতিবাদের যেসব খবর আসছে, তা স্বীকার না করলে আমার অনুশোচনা হবে। পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগের। আমরা সবাই ওদের পরিবার ও বন্ধুদের জন্য চিন্তিত।’ তিনি বলেন, অধিকার রক্ষায় কৃষকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য সব সময় পাশে থাকবে কানাডা। আমরা আলোচনায় বিশ্বাস রাখি। সে জন্যই এ উদ্বেগের বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে সরাসরি জানাব।’ তবে এ বিষয়ে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। সূত্র : এবিপি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।