মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনা মহামারির প্রভাবে ভারতের মন্দা এখন দৃশ্যমান। পরপর দুই প্রান্তিকে জিডিপিতে সঙ্কোচন দেখল দেশটি। গেল জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে (ত্রৈমাসিক হিসাব) ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭.৫ শতাংশে সঙ্কুচিত হয়েছে। শুক্রবার ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরের সময়কালে মোট জিডিপি ৪.৪ শতাংশ বেড়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি এবং ফলস্বরূপ লকডাউনের কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আর্থিক বৃদ্ধি ২৩.৯ শতাংশ কমে যায়। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে (প্রথম চতুর্থাংশে) ভারতের জিডিপি ৭.৫ শতাংশে পৌঁছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম পরপর দুই প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি সঙ্কুচিত হলো। পরপর দুই মাস জিডিপির সঙ্কোচন ঘটলে তাকে ‘টেকনিক্যাল রিসেশন’ বা আপাত মন্দা বলা হয়। ১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম এমন আর্থিক সঙ্কোচনের মুখে পড়তে হলো ভারতের অর্থনীতিকে। অর্থাৎ ২৪ বছর পর মন্দার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশটিতে।
এর আগে একাধিক অর্থনীতিবিদ ও রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দ্বিতীয় চতুর্থাংশে ফের নিচে নেমেছে অর্থনীতির সূচক, যা ভারতকে এক অভ‚তপূর্ব মন্দার দিকে ঠেলে দেবে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্রের নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া অর্থবছরের চতুর্থাংশে তাদের জিডিপি ৮.৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হতে যাচ্ছে। সেখানে আরও বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে টেকনিক্যাল রিসেশন অর্থাৎ মন্দায় প্রবেশ করেছে। কোভিড-১৯’র ধ্বংসাত্মক পতন থেকে চীন বেরিয়ে এসেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাপান ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তবে, নতুন পরিসংখ্যানগুলো দৃঢ়ভাবে বিশ্বের সবচেয়ে মন্দাকবলিত অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থানকে দৃঢ় করেছে। মুম্বাই-ভিত্তিক সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি জানিয়েছে যে, মার্চে করোনাভাইরাসে লকডাউনের ফলে ১শ’ ৪০ মিলিয়ন লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। লকডাউন শিথীল হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে অনেকে আবার কাজে ফিরে গেলেও চাকরি হারানো ৬ মিলিয়নেরও বেশি লোকের নতুন কর্মসংস্থান হয়নি। অল ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারার্স অর্গানাইজেশনের জুনের সমীক্ষা অনুযায়ী, ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায় ব্যাপক ধস ছিল নজিরবিহীন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে দাঁড় করানোর জন্য মূলত রিজার্ভ ব্যাংকের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে সরকারকে। অর্থমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেননি। মোদি ভারতের শিল্প নীতিকে ক্রমবর্ধমানভাবে অন্তর্মুখীতে পরিণত করেছেন, যা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এর ফলে ঋণচ্যুত সংস্থাগুলিকে আরও ঋণ নিতে হবে। করোনার আগে যে ৬.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করা হয়েছিল, তার বিপরীতে আগামী পাঁচ বছরে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে ৪.৫ শতাংশ। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের সম্ভাব্য ঋণাত্মক প্রভাবের কারণ উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ড. আনবুমোজি বলেছেন, ‘সবচেয়ে খারাপটি ঘটার অপেক্ষায় রয়েছে।’ সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।