Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিংবদন্তি অভিনেতা করোনার কাছে হার মানলেন

৪০ দিনের লড়াই শেষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

কোলকাতার টালিগঞ্জের বাংলা বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই। গতকাল রোববার কলকাতার বেলভিউ নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। তার মৃত্যুতে কোলকাতা ও ঢাকার সাংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। নায়ক, অভিনেতা, আবৃত্তিকার, কবি সৌমিত্রের আদিবাড়ি বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায়।
বাংলার সিনেমার বর্ষীয়ান এই অভিনেতার শরীর গত ১ অক্টোবর থেকে বাড়িতে ভালো যাচ্ছিল না। প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকের পরামর্শে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৫ অক্টোবর তার কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ৬ অক্টোবর তাকে ভর্তি করানো হয় বেলভিউ নার্সিং হোমে। এখানে সর্বশেষ ১৪ অক্টোবর তার করোনার নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপরই সৌমিত্র সুস্থ হতে থাকেন। চিকিৎসা চলছিল।
২৪ অক্টোবর রাত থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর ধীরে ধীরে তিনি চেতনাহীন হয়ে পড়েন। তাঁকে সুস্থ করার জন্য গত বৃহস্পতিবার প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়। এর আগে বুধবার কিডনির ডায়ালাইসিস করা হয়। শুক্রবার তার হৃদস্পন্দন হঠাৎ করে বেড়ে যায়, রাতে চেতনা স্তর ৫-এ নেমে যায়।
সৌমিত্রর চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ১৬ সদস্যের চিকিৎসা দলের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। ফুসফুসে আরো বেশি করে অক্সিজেন পৌঁছানোর জন্য গতকাল শনিবার বাড়ানো হয় অক্সিজেনের মাত্রা। এ সময় তার চিকিৎসা দলের প্রধান ক্রিটিক্যাল বিশেষজ্ঞ অরিন্দম কর জানান, এই চেতনা স্তর ৩-এ নেমে গেলে চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্রেন ডেথ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাকে বিভিন্ন ধরনের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আজ বেলভিউ হাসাপতালে থেকে সৌমিত্রকন্যা পৌলমী বোস। বাবাকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘বাবা ভালো নেই। বাবাকে এই অবস্থায় আর দেখতে পারছি না’। এ সময় ডাক্তাররা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে। সৌমিত্রর দাদার আমল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন।
সৌমিত্র পড়াশোনা করেন- হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চকলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন সৌমিত্র। পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র। মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। কবি ও খুব উচ্চমানের আবৃত্তিকার হিসেবে তার দারুণ খ্যাতি রয়েছে।
২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। ২০১৮ সালে তিনি ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ পুরস্কার পান। তাছাড়া ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন এ শিল্পী।



 

Show all comments
  • মু:ওয়াসিউল হক ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৯:৫৭ এএম says : 0
    সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কে নিয়ে বাংলাদেশের শিল্পী মহলের এত অাদিক্ষেতা কেন? বাংলাদেশর হুমায়ুন আহম্মেদ, আলমাহামুদ, নায়োক রাজ রাজ্জাক,আব্দুল জাব্বার, আব্দুল আলিম,সৈয়দ শামসুল হক,শামসুর রাহমান,এদেঁর মৃত্যুর সময়তো ইন্ডিয়ান শিল্পী সমাজতো শোকবাণীতো দুরের কথা তারা টুশব্দটিও করে নাই!
    Total Reply(0) Reply
  • মু:ওয়াসিউল হক ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ১১:০৭ এএম says : 0
    সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কে নিয়ে বাংলাদেশের শিল্পী মহলের এত অাদিক্ষেতা কেন? বাংলাদেশর হুমায়ুন আহম্মেদ, আলমাহামুদ, নায়োক রাজ রাজ্জাক,আব্দুল জাব্বার, আব্দুল আলিম,সৈয়দ শামসুল হক,শামসুর রাহমান,এদেঁর মৃত্যুর সময়তো ইন্ডিয়ান শিল্পী সমাজতো শোকবাণীতো দুরের কথা তারা টুশব্দটিও করে নাই!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ