নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জানতেন সামনে আসছে খারাপ কোন খবর। আইসিসির তদন্তকারী কর্মকর্তা আর তিনি ছাড়া বুঝতে পারেননি আর কেউই। বুকের উপর অনেক বড় এক ভার বয়ে নিয়ে গত বিশ্বকাপে খেলেছিলেন সাকিব আল হাসান। অথচ সব সামলে বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬০৬ রান করে ফেলেন তিনি। যা ছিল তার কাছে ভীষণ কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। এমনকি বিশ্বকাপের আগেও নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা ছিল তার!
ক্রিকেট থেকে এক বছরের নির্বাসন শেষ করে সাকিব জানালেন, ভীষণ অস্বস্তি নিয়ে বিশ্ব আসরে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটের তদন্তের জালে ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকেই আটকা পড়েন সাকিব। জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করছেন, তদন্তে বেরিয়ে আসার পর তার জেরা চলছিল লম্বা সময় ধরে। বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন যেকোনো সময় নিষেধাজ্ঞা আসার শঙ্কা নিয়ে। অবশ্য বিশ্বকাপ শেষের অনেকটা পরে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর আইসিসির রায়ে নিষিদ্ধ হন তিনি।
সেই খারপ সময় হয়েছে অতীত। গতপরশু রাতে দেশে ফিরার আগে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ভক্ত ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাকিব জানান কতটা অস্বস্তিতে ছিলেন গেল বিশ্বকাপে, ‘আমার তো মনে হয় খুবই চ্যালেঞ্জিং (সব জেনে বিশ্বকাপ খেলা)। কারণ অনেক দিন থেকেই এটার তদন্ত চলছিল। নিয়মিত ওরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছিল, স্বাভাবিকভাবে আমার জন্য খুব অস্বস্তিকর ছিল। এটা কখনই একজন খেলোয়াড়ের সুন্দর একটা অনুভ‚তি না। সেদিক থেকে অবশ্যই অনেক কঠিন সময় ছিল।’
অথচ অমন কঠিন পরিস্থিতিতেও তার ব্যাটিং ও বোলিং ছিল বিস্ময়কর সাফল্যে রাঙানো। গোটা বিশ্বকাপে তারচেয়ে বেশি রান করেছেন কেবল রোহিত শর্মা ও ডেভিড ওয়ার্নার। তারা তার থেকে ম্যাচও খেলেছেন বেশি। ৮ ম্যাচে করেছেন ৫ ফিফটি আর ২ সেঞ্চুরি। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন, এটা জেনেই কি তার অমন বিস্ফোরক পারফরম্যান্স? অনেকেরই কৌত‚হল ছিল তা। তবে সাকিব জানান, বিশ্বকাপের আগেও নিষিদ্ধ হতে পারতেন। বিশ্বকাপে পারফর্ম করেছেন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে, ‘ওই ঘটনা বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের প্রভাবক, এরকম না। তবে তদন্ত শুরু হয়েছিল নভেম্বর ডিসেম্বরের (২০১৮ সালের) দিকে। বিশ্বকাপের আগেও আমি নিষিদ্ধ হতে পারতাম। সেটা হয়নি। কিন্তু ওটা কখনই মাথায় কাজ করেনি যে ওটার (নিষেধাজ্ঞা আসছে) জন্য ভাল করতেই হবে। বিশ্বকাপে আমার ভাল কিছু করা দরকার ছিল। কারণ এর আগে যতগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি বলার মত কিছু করিনি। নিজের নামের পাশে যেহেতু একটা রেপুটেশন আছে। কখনই মনে হয়নি বিশ্ব পর্যায়ে সেই রেপুটেশন তুলে ধরতে পারছিলাম। বয়সটাও আমার পক্ষে ছিল। যে বয়সে মানুষ সেরা ছন্দে থাকে।’
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার জন্য মুখিয়ে সাকিব। সে লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করতে গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুশীলন সেশন করেছেন সাকিব। নিষিদ্ধ থাকায় তখনও বিসিবির সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের অনুমতি তার ছিল না। তাই অনুশীলনের জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন তার বেড়ে ওঠার প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিকে। সেখানে তার ঘনিষ্ঠ দুই কোচ নাজমুল আবেদীন ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের তত্ত্বাবধানে কঠিন সূচি মেনে অনুশীলন করেন সাকিব। ক্রিকেটের ফিটনেস ও স্কিল ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি বিকেএসপির বক্সিং কোচ, সুইমিং কোচ, অ্যাথলেটিকস কোচের সঙ্গেও কাজ করেন নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে। তখনকার সূচি অনুযায়ী, বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফরে দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে ফেরার কথা ছিল সাকিবের। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর অনুশীলন অসমাপ্ত রেখেই যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে ফিরে যান তিনি।
এখন নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত সাকিব, অনুশীলনের এই ঘাটতিটুকু পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা তার আছে। সামনেই বিসিবির বঙ্গবন্ধু টি-২০ টুর্নামেন্ট। এই আসরকেই পাখির চোখ করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, ‘বিকেএসপির অনুশীলন খুবই ভালো ছিল। ওই ট্রেনিং আমার খুব দরকার ছিল। যদিও আমার ইচ্ছে ছিল আরও ১৫-২০ দিন করার। যেহেতু শ্রীলঙ্কা সিরিজটি হয়নি, ওটা আর চালিয়ে যাওয়া হয়নি। চলে এসেছি যুক্তরাষ্ট্রে। আরও ১৫-২০ দিন করতে পারলে পরের ১-২ বছরের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি হয়ে যেত। তবে যেহেতু সামনে সময় আছে, সামনে একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আছে, ওই ১৫-২০ দিনের ট্রেনিংয়ের যে গ্যাপটি ছিল, আমার ধারণা আমি প‚রণ করতে পারব।”
পাঁচটি দল নিয়ে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে হওয়ার কথা বিসিবির এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তার আগে হতে পারে প্লেয়ার্স ড্রাফট। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটে ফিরবেন সাকিব। তার আগে অবশ্য আগামী সোমবার আরও ১১২ ক্রিকেটারের সঙ্গে ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হবে এই অলরাউন্ডারকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে গতকাল রাতেই দেশে ফিরেছেন সাকিব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।