পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শ্রম দিতে গিয়ে কতজন বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন সেই তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদেরকে তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রিটের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। হাইকোর্ট তার রুলে কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনে কাজ করতে গিয়ে যদি সাড়ে ৪শ’ শ্রমিক নিহত হয়ে থাকেন তাদের পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, জানতে চেয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন প্রধান, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার বাংলাদেশ অফিস, ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা), কাতারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টেরিয়র), কাতারের শ্রমমন্ত্রীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাসুদ রেজা সোবহান। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
প্রসঙ্গত, কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল আসরের আয়োজনকে কেন্দ্র করে মানবেতর পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অন্তত ৪৫০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে মর্মে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ বছর আগে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাওয়ার পর-এর প্রস্তুতিতে সেখানে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি দক্ষিণ এশিয়ান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিশ্বকাপ আয়োজনের গৌরব অর্জনের পর থেকে কাতারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
পাকিস্তান ছাড়া ৪টি দেশে ইংরেজি পত্রিকা গার্ডিয়ানের নির্ভরযোগ্য সূত্র ও দেশগুলোর সরকারি হিসাব অনুযায়ী ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯২৭ জন প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মৃত বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ১ হাজার ১৮ জন। কাতারে পাকিস্তানের দূতাবাস থেকে সরবরাহ করা তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ে ৮২৪ জন পাকিস্তানি শ্রমিক মারা গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে। ২০২০– এর শেষ ভাগের তথ্য এ হিসেবে নেই। কাতারে শ্রমিক সরবরাহে অনেক এগিয়ে থাকা ফিলিপাইন ও কেনিয়ার নাগরিকদের মৃতের সংখ্যা অবশ্য জানা যায়নি। এ কারণেই কাতারে প্রবাসী শ্রমিক মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাটি আরো অনেক বড় বলেই সন্দেহ গার্ডিয়ানের। গত ১০ বছরে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য অভাবনীয় সব প্রকল্প হাতে নেয় কাতার। সাতটা নতুন স্টেডিয়াম বানানো হয়। এর সঙ্গে আরো অনেকগুলো বড় বড় প্রকল্প নিয়ে কাজ করে দেশটি। নতুন একটি বিমানবন্দরসহ রাস্তাঘাট ও আধুনিক গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা হয়। এত বড় বড় সব স্থাপনা ও উন্নয়নকাজের জন্য প্রচুর জনশক্তির দরকার হয় দেশটির। মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে ফেয়ার স্কোয়ার প্রজেক্টস।
এ প্রতিবেদন সংযুক্ত করে নিহত শ্রমিক পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবির নির্দেশনা চেয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর রিট করেন এই আইনজীবী। ব্যারিস্টার মাসুদ আর. সোবহান বলেন, ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে কাতারে মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে বাধ্য করা হয় তাদের। শ্রম অধিকারের আন্তর্জাতিক কোনো রীতিনীতি তারা মানেনি। এজন্য বহু শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এর প্রতিকার চেয়ে রিট করেছি আমরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।