মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিসরে নতুন ইলেক্টোরাল আইনের অধীনে পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে গতকাল শনিবার। প্রথম ধাপে আজ রোববারও ভোট দেবেন ভোটাররা। এবারের নির্বাচনেও প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সমর্থকরা প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েকটি ধাপে হবে পার্লামেন্ট নির্বাচন। দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর। অপরদিকে নভেম্বরের শেষ ও ডিসেম্বরের শুরুতে শেষ ধাপের ভোট হবে।
মিসরের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ রয়েছে। কারণ দেশটিতে টাকা দিয়ে ভোট কেনা, বিরোধী প্রার্থীদের বন্দি করার মতো ঘটনা খুবই সাধারণ। গ্রেফতার, ভয় দেখানো এবং ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকার তার বেশিরভাগ সমালোচককে সরিয়ে দেয়ার পুরনো অভিযোগ তো রয়েছেই। নির্বাচনে অংশ নেওয়াদের বেশিরভাগই সিসির সমর্থক। ধনী ব্যবসায়ীরা সরকার সমর্থিত দলগুলোর পেছনে কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করেন। কিন্তু এভাবে নির্বাচন হওয়াটা মোটেও গণতান্ত্রিক নয়।
ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তা জানতে আপাতত ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু এবারের নির্বাচনেও আগের প্রতিফলন থাকবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এ আইনের অধীনে মোট ৫৬৮টি আসনের মধ্যে ৫০ শতাংশ আসন আগে থেকেই বাছাইকৃতদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। এর মাধ্যমে সিসির সমর্থকরা বিশেষ সুবিধা পাবেন বলে সমালোচকরা জানিয়েছেন। বাকি ৫০ শতাংশ আসনের জন্য প্রার্থীরা লড়বেন। প্রেসিডেন্ট সিসি সর্বোচ্চ ২৮ জন আইনপ্রণেতাকে সরাসরি নিয়োগ দিতে পারবেন।
২০১৩ সালের অভ্যুত্থানে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুসলিম ব্রাদারহুডের মুহাম্মদ মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। তিনি ছিলেন একজন সাবেক জেনারেল।
নির্বাচিত হওয়ার পর দেশজুড়ে সব ধরনের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন সিসি। ফলে দেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হয়। ২০১৮ সালেও অবৈধ পন্থায় নির্বাচনে জয়ী হন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদের পর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেননি সিসি। ২০১৯ সালে মিসরের সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় থাকার পথ পাকাপোক্ত করেন এই প্রেসিডেন্ট।
রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে তিনি নিজেকে মিসরীয়দের নেতা হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। ২০১৮ সালে এক ঘোষণা তিনি বলেন, তারা সবাই বলে থাকে কিন্তু আমি কোনো রাজনীতিবিদ নই।
তার মন্ত্রিসভার অধিকাংশই টেকনোক্র্যাটস মন্ত্রী। আঞ্চলিক গভর্নর হিসেবে প্রেসিডেন্ট যাদের নিযুক্ত করেছেন তাদের বেশিরভাগই সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিজ্ঞ ব্যক্তি।
সিসি এমন আচরণ করেন যেন তিনি সব ধরনের বিরোধের ঊর্ধ্বে। কিন্তু তার দলের লোকেরা আসলে কাদায় নিমজ্জিত। তাদের ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। দেশটির সবচেয়ে বড় দল ন্যাশনস ফিউচার পার্টি মূলত সামরিক গোয়েন্দাদের হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, লাখ লাখ টাকায় আগেই ভোট কিনে নিচ্ছে সরকারের সমর্থন পাওয়া ব্যক্তিরা। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে এক আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে, যারাই অর্থ ব্যয় করতে পারবেন তারাই নিজেদের আসন কিনে নিতে পারবেন। এমন অভিযোগের পর ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে ভোট কেনার অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করা হয়।
মিসরের রাজনীতিতে ব্যবসায়ীদের একটি বড় প্রভাব রয়েছে। দেশটির পূর্ববর্তী স্বৈরশাসক হোসনি মোবারক ১৯৮১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করেছেন। কিন্তু সে সময় দেশটির জনগণ যে কোনো বিষয়ে অভিযোগের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা পেয়েছিল।
আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি হয়তো হোসনি মোবারকের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছেন। স্বৈরশাসকদের ধারণা জনগণকে বেশি স্বাধীনতা দিলে তারাই হয়তো ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে। তবে জনগণের ওপর এতো প্রভাব বিস্তারের পরেও গত আগস্টে ভোটারদের কাছ থেকে আশঙ্কাজনক বার্তা পেয়েছেন সিসি। সূত্র : ইকোনমিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।