Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজনাথ সিংয়ের দাবি প্রত্যাখ্যান ইসলামাবাদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধ তৈরি করছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর (এফও) তার এই দাবি ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

এফও’র পক্ষ থেকে দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ভারত শুধু প্রতিবেশীদের সাথে বিরোধই সৃষ্টি করে না, শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের প্রচেষ্টা থেকেও তারা দূরে থাকে।’ এফও আরও বলেছে যে, ‘সিংয়ের বক্তব্য পাকিস্তানের প্রতি ভারত সরকারের অসমর্থ মনোভাবের আর একটি প্রকাশ।’ তারা পাকিস্তান ও চীনের বন্ধুত্বের বিরুদ্ধে ‘ভারতের দূষিত অপপ্রচার’ এর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘যে দেশ নিজেই সম্প্রসারণবাদ এবং রাষ্ট্রীয়-সন্ত্রাসবাদের অনুশীলন করে, অন্যের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ করা তাদের মানায় না।’ এফও ভারত সরকারকে ‘আক্রমণাত্মক এজেন্ডা ছেড়ে এবং প্রতিবেশীদের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে ভুল সংশোধন করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার’ পরামর্শ দিয়েছে।

এর আগে একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাজনাথ সিং অভিযোগ করেছেন যে, পাকিস্তান ও চীন ‘একটি মিশনের আওতায়’ ভারতের সাথে ‘সীমান্ত বিরোধ’ তৈরি করতে কাজ করছে। পাকিস্তানের ও চীনের সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, উত্তরাখন্ড ও পাঞ্জাবসহ দখলকৃত কাশ্মীর, লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় ৪৪ টি সেতুর উদ্বোধনের জন্য আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল ইভেন্টে এই মন্তব্য করেছিলেন। সেতুগুলি সেনা চলাচল ও অস্ত্র পরিবহনের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। সিং অরুণাচল প্রদেশে নেচিফু টানেলও উদ্বোধন করেন।

রাজনাথ তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা সবাই বুঝতে পারছে। প্রথম পাকিস্তান, এবং এখন চীনও যেন একটি মিশনের অধীনে সীমান্ত বিরোধ তৈরি করছে। আমাদের এই দেশগুলির সাথে প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যেখানে উত্তেজনা রয়ে গেছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘দূরদর্শী’ নেতৃত্বে তার সীমান্তে চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে এবং ‘বিরাট ও ঐতিহাসিক পরিবর্তন আনছে’। রাজনাথ সদ্য নির্মিত সেতুর তাৎপর্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘যে অঞ্চলগুলিতে সারা বছর পরিবহন পাওয়া যায় না সেখানে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রচুর সংখ্যায় মোতায়েন রয়েছে। এই সড়কগুলি কেবল কৌশলগত প্রয়োজনের জন্যই নয়, তারা জাতির উন্নয়নে সমস্ত অংশীদারদের সমান অংশগ্রহণকেও প্রতিফলিত করে।’ এক সপ্তাহ আগেই হিমাচল প্রদেশের সাথে লাদাখের সীমান্তবর্তী অঞ্চল সংযোগকারী একটি টানেল উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

লাদাখ অঞ্চলে ভারত চীনের সাথে একটি নতুন সীমান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ অচলাবস্থা মে মাসে শুরু হয়েছিল এবং জুন মাসে দুই পক্ষের মধ্যে মারাত্মক সহিংসতা হয়, যাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়। চীনের সেনারাও হতাহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তবে তারা কোনও বিবরণ দেয়নি। এদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী চলতি বছরে পাকিস্তানের সাথেও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কমপক্ষে ২ হাজার ৩৪০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, যার ফলশ্রুতিতে ১৮ জন সেনা নিহত এবং ১৮৭ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে। পাকিস্তান বেশ কয়েকবার ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে, তবে ভারত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ