নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নারীর প্রতি সহিংসতা বাংলাদেশে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার! তবে সিলেটে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ আর নোয়াখালীতে গৃহবধ‚কে নির্যাতনের পর প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ। তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও। নারীর জন্য নিরাপদ একটি বাংলাদেশ গড়তে মানসিকতা পরিবর্তনের পাশাপাশি সকলকে জেগে ওঠার আহŸান তারা করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গতকাল বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার স্ট্যাটাস, ‘আপনার মেয়ে যখন আপনার কোলে বসে থাকে, তখন আপনার সেই অনুভ‚তি হয় না। যখন আপনার বোন আপনার পাশের রুমে থাকে, তখনও সেই অনুভ‚তি আসে না। আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যখন আপনি ঘুরতে বেরোন, তখন তার দিকে বাঁকাভাবে তাকালে আপনার খারাপ লাগে। কিন্তু অন্যকে দেখার ক্ষেত্রে কি আমার, আপনার অনুভ‚তি একই রকম আছে? তা না হলে বুঝে নিতে হবে, সমস্যা অনেকের মগজেই। হয়তো পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে সবারটা প্রকাশ পায় না। আসুন মানসিকতা পরিবর্তন করি। নারীকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিই। আর ধর্ষক কোনো পরিচয় বহন করে না। সে কুৎসিত, হয়তো চেহারায় নয়, মানসিকতায়।’
আগের দিন উইকেটরক্ষক ও দেশসেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ধর্ষণ কিংবা যে কোনো যৌন নির্যাতন কখনো সহ্য করা হবে না। সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। জেগে ওঠো বাংলাদেশ। ধর্ষণকে না বলো। না মানে না।’ ফেসবুকে জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনের স্ট্যাটাস, ‘কিছু মানুষরূপী পশুদের কী দুর্ভাগ্য! নারীর পেটে জন্ম নিয়েও নারীকে সম্মান করতে শিখল না। মা-বোনেরা তোমরা সাবধানে থেকো। এই শহরে মানুষ নামের কিছু পশু আছে। কী লিখব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। ধর্ষণমুক্ত বাংলাদেশ চাই।’ তারকা বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার লিখেছেন, ‘কোনো নারীকে যেন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে না হয়। নারীদের অনুভব করতে হবে যে, তারা একা নয়। নিপীড়নকারীদের কোনো ক্ষমা নেই।’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে তিনি যোগ করেছেন, ‘স্টপ রেপ (ধর্ষণ বন্ধ হোক)।’
জাতীয় ফুটবল দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন,‘দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারী নির্যাতন ও সহিংসতার হার। প্রতিদিনই ঘটছে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা। সবার মতো আমিও এ নিয়ে শঙ্কিত। নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে এখনই সময় রুখে দাঁড়ানোর।’ এ জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহŸান জানিয়েছেন তিনি লিখেন, ‘সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এমন ঘৃণিত অপরাধ দমন করা সম্ভব। আসুন সবাই মিলে রুখে দাঁড়াই, নারী ও শিশুর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করি।’
জাতীয় দলের মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদ বাবু লিখেছেন, ‘সমাজে এক শ্রেণির বর্বরোচিত মানুষ বিরাজ করছে, যারা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শিশু ও নারীদের প্রতি প্রতিনিয়তই জঘন্য অত্যাচার করছে, তা দেখে আমি আর চুপ থাকতে পারি না। আমি এসব ঘৃণিত ও অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান করছি।’ ইমন সবাইকে এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহŸান জানিয়ে আরো লিখেন, ‘এই দুঃসময়ে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নৈতিক অবক্ষয়, ঘৃণিত অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আসুন সবাই মিলে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি।’ এর আগে ঘৃণ্য এই মানসিকতার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ার আহŸান জানিয়েছিলেন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।