Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাদাখে দশকের বৃহত্তম কর্মকান্ড চালাচ্ছে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা কমার আপাতত কোনও লক্ষণ নেই। তাই আসন্ন শীতকালেও লাদাখে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ইতোমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সেনা সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনী চার থেকে পাঁচ মাসের জন্য রসদ মজুত করেছে পূর্ব লাদাখ সেক্টরের উচ্চ এলাকাগুলোয়। খাবার, জ্বালানি, গোলাবারুদ, ট্যাঙ্কসহ ভারী অস্ত্রও মজুত করা হয়েছে।
আগস্ট মাস থেকেই পূর্ব লাদাখ সীমান্তের বেশ কয়েকটি এলাকায় আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই পরিস্থিতি প্রতিক‚ল হয়ে পড়ে। আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই ভারতীয় সেনাবাহিনী জুলাই মাস থেকেই পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রয়োজনীয় রসদ মজুত করার ওপর জোর দিয়েছিল। সেনা সূত্রের খবর, এ কাজ বিশেষভাবে তদারকি করেছিলেন সেনাপ্রধান এমএম নরাভানে। লজিস্টিক অপারেশনের অংশ হিসেবে টি-৯০ ও টি-২২ ট্যাঙ্ক, আর্টিলারি বন্দুক চুশুল, ডেমচেক সেক্টরের সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে পাঠানো হয়েছে। ১৬ হাজার ফুট উচ্চতায় ফরওয়ার্ড এলাকাগুলিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার, পোষাক, তাঁবু, যোগাযোগ সরঞ্জাম, জ্বালানি, হিটার পাঠানো হয়েছে। এক সেনা কর্মকর্তা জানান, স্বাধীনতার পর চলতি বছর লাদাখে সবথেকে বেশি লজিস্টিক অপারেশন হয়েছে।
প্রবল শীতকালে চীনের মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই লাদাখে ৩০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত লাদাখে বেশ কয়েকটি এলাকার তাপমাত্রা মাইনাস ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছে যায়। কনকনে সেই ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বিশেষ পোষাক আমদানি করা হয়েছে। সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস আর সি-১৭ গেøাবমাস্টারসহ ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রায় সমস্ত পরিবহণ বিমান ও হেলিকপ্টার কয়েক হাজার টন খাবার জ্বালানি আর অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়ে এসেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমারেখা সংলগ্ন বিমানঘাঁটিগুলোও আগামী চার মাসের জন্য সতর্ক থাকবে বলে সেনা সূত্রে খবর।
ট্যাঙ্ক ও অন্যান্য যুদ্ধযান, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রতিক‚ল আবহাওয়ায় বসবাসের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত কাঠামোসহ যাবতীয় সরঞ্জামে সম্পূর্ণ বাহিনীকে সেনার পরিভাষায় বলা হয় ‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি’ বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী। পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিস্তৃত সিন্ধু নদের ধার বরাবর নদী পার হওয়া, যে কোনও প্রতিবন্ধকতার মোকাবিলা করাসহ মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি পূর্ণ রেজিমেন্টের প্রদর্শন ও মহড়া চলছে।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধের পুরো প্রস্তুতির দায়িত্বভার রয়েছে ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’-এর উপর। এ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা মেজর জেনারেল অরবিন্দ কাপুর বলেন, ‘শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীতে একমাত্র ভারতীয় সেনার ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি কোর’ এ রকম চরম প্রতিক‚ল আবহাওয়ার মোকাবিলা করেও যুদ্ধ করতে সক্ষম। এসব ট্যাঙ্ক, যুদ্ধযান ও অস্ত্রশস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ করা এখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ। অস্ত্রশস্ত্র ও সেনা দুই তরফেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রি বা সংগঠিত পদাতিক বাহিনী ভারতীয় সেনার মধ্যেই আরও এক ধাপ উন্নত বাহিনী। দ্রুত বহনযোগ্য গোলাবারুদ ও মিসাইল ভান্ডার থাকায় এ বাহিনী অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় বেশি সময় ধরে যুদ্ধ করতে পারে। সংগঠিত বাহিনীর সদস্যরা প্রায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে সক্ষম।’ তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ শীতের পোশাকসহ যাবতীয় প্রশিক্ষণের পর বাহিনীর মনোবল তুঙ্গে। খুব অল্প সময়ের নির্দেশেও দ্রুত দায়িত্ব পালনে তারা প্রস্তুত।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তীব্র ঠান্ডার মধ্যেও বসবাসের উপযোগী অস্থায়ী বাসস্থান তৈরিতেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। আনা হয়েছে আগে থেকে তৈরি করে রাখা কাঠামো, যা খুব কম পরিমাণ সিমেন্ট বালি ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে। বাথরুম, রান্নাঘরসহ আধুনিক বসবাসের মতো প্রায় সব কিছুই থাকছে। বিনোদনের জন্য প্রতিটি কোম্পানির জন্য থাকছে সেট টপ বক্স কানেকশনসহ একটি করে টিভি। সূত্র : টিওআই।



 

Show all comments
  • Jack Ali ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১১:১৯ এএম says : 0
    May Allah destroy all their Army. ameen
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ