পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আব্দুস ছাত্তার, নজরুল ইসলাম ও শেখ ফরিদ নামে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে আব্দুস ছাত্তার ও বিকালে বাকি দুইজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট ৩১ জনের মৃত্যু হলো।
এছাড়া শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন বাকিদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে সুস্থ্য হয়ে একজন বাড়ি ফিরেছেন। হাসপাতালে যারা ভর্তি রয়েছেন, তারা সবার আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে। তাদের কেউ শঙ্কামুক্ত না। এদিকে, দগ্ধদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নিতে গতকাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদশর্ন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডা. জুলফিকার লেলিন। পরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্যই এ বার্ন ইনস্টিটিউটি করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের মসজিদে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে দগ্ধদের অধিকাংশ ৯০ শতাংশ পোড়া ছিলেন। তাদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সাপোর্টই, এ হাসপাতালের রয়েছে। প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রী তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। ওষুধ থেকে শুরু করে সবকিছুই সরকারি ভাবে ব্যবস্থা করে দেওয়ার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আমি আজ এখানে চিকিৎসায় ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনো ঘাটতি রয়েছে কিনা, এটি দেখার জন্য এসেছি। তবে এমন কোনো ঘাটতি দেখতে পাইনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসকরা সবকিছুরই ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, তবে রোগীর স্বজনদের আবেগের জায়গায় হয়তো কিছুটা সমস্যা রয়েছে যে, তারা রোগীদের দেখতে পারছেন না, আইসিইউর ভেতরে ঢুকতে পারছেন না। ইনফেকশনের ভয়ে রোগীদের কাছে বারবার স্বজনদের যেতে না দেওয়ায় বিভিন্ন অভিযোগ থাকতে পারে। তবে দিনে দু-একবার যাওয়ার সুযোগ দেন চিকিৎসকরা। এখানে কোনো চিকিৎসার ঘাটতি রয়েছে এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। এখান থেকে রোগীকে বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করবে, এমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বরং বাইরে থেকে রোগী এখানে আসবে। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সব তথ্য নিচ্ছেন। আরও যা যা প্রয়োজন সে বিষয়ে ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৫০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়াহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নির্ধারিত সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। গতকাল প্রতিবেদন দেয়ার দিন ধার্য করা হলেও প্রতিবেদন দাখিল না করে আরও সাতদিনের সময় চেয়েছে তদন্ত কমিটি। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, মসজিদে বিস্ফোরনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে মডেল গ্রæপ কর্তৃক আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। নিহত ২৮টি পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা ও আহত ৯টি পরিবারকে ৩০ হাজার করে টাকা প্রদান করেন মডেল গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামান। এ সময় হতাহত পরিবারদের পাশে থাকার ব্যক্ত করেন মডেল গ্রæপের এমডি। গতকাল মডেল গ্রæপের সভাকক্ষে হতাহত পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই অনুদান প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- মডেল গ্রæপের পরিচালক কানাই সরকার, ডিজিএম (এডমিন, এইচ আর কমপ্লায়েন্স) অরুপ কুমার সাহা ও জিএম (উন্নয়ন) মনিরুজ্জামান মনির।
মাসুদুজ্জামান বলেন, তল্লা মসজিদের যে মর্মান্তিক দুঘর্টনা ঘটেছে এটা কারো কাম্য ছিল না। যারা ভয়াবহ বিস্ফোরনে মারা গেছে ও যারা হসপিটালে চিকিৎসাধীণ রয়েছে তাদের পাশে আছে, থাকবে মডেল গ্রæপ। নিহতে একটি পরিবার মডেল গ্রæপের রয়েছে। তিনি আমাদের শ্রমিক, তার স্বামী ও ছেলে মারা গেছে। হতাহাতদের পরিবারদের জন্য কিছু করার চেস্টা করলাম, ভবিষ্যতে করবো। এই অনুদান ঘটনার পরের দিন এলাকা ঘোষনা দিয়ে ছিলাম, যাহা আজ প্রদান করা হল। এলাকার সন্তান হিসেবে দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ববোধ থেকেই হতাহতদের অসহায় পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছেন। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারগুলোর সক্ষম ব্যক্তিদের তার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথাও জানান তিনি। এ সময় নগদ আর্থিক সহায়তা পেয়ে আবেগে আপ্লæত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনদের অনেকেই। মডেল গ্রæপ থেকে সহায়তা বাবদ পাওয়া এই অর্থ দিয়ে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, ধার-দেনা শোধ করাসহ নিহতদের পরিবারের কিছুদিনের খরচ চালানোর ব্যবস্থা হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে তাদের মধ্যে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।