পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সবার দৃষ্টি এখন কক্সবাজারের দিকে। মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ডে রিমান্ডে থাকা আসামিরা কী স্বাকারোক্তি দেন, তা জানার আগ্রহ সবার। একই সঙ্গে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা রুট হিসেবে পরিচিত টেকনাফ রুটের দিকে খবরও রাখছে মানুষ। ইয়াবার চালান আটক ও ইয়াবা চোরাকারবারি বন্ধে বন্দুকযুদ্ধে এই এলাকায় ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে প্রায় তিন শতাধিক। আইন ও বিচার বহিভর্‚ত ‘ক্রসফায়ার’ নিয়ে বিতর্ক চলছে। মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে অনেকগুলো ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। অথচ এক মাস ধরে ক্রসফায়ার নেই। ১৭, ২৩, ২৪ আগস্টসহ এই এক মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় শত কোটি টাকার ইয়াবা উদ্ধার করেছে।
ইয়াবা চালান রোধে বন্দুকযুদ্ধের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নেহাল করিম বলেন, পৃথিবীব্যাপী মাদক চোরাকারবারি হচ্ছে। এখানে শুধু লোক দেখানো ক্রসফায়ার দিয়ে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয় আর আসল মাদক কারবারিদের সুযোগ করে দেয়া হয়। আন্তরিকতা থাকলে দেশ থেকে মাদক বন্ধ করা খুব কঠিন হবে না। বন্দুকযুদ্ধের প্রয়োজন পড়বে না।
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর থেকে প্রায় এক মাস মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কক্সবাজারে বন্দুকযুদ্ধের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবুও উদ্ধার হয়েছে প্রায় শত কোটি টাকার অধিক মূল্যের ইয়াবার চালান।
ইয়াবাসহ মাদকপাচার বন্ধে দুই বছর আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইয়াবা উদ্ধারের নামে জোরেশোরে চলে কথিত বন্দুকযুদ্ধও। এ সময় বিশেষ নজর দেয়া হয় ইয়াবা পাচারের রুটখ্যাত কক্সবাজার টেকনাফ কেন্দ্রিক। এতে ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছে ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪, বিজিবির সঙ্গে ৬২ ও র্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। অবশ্য এমন অভিযানের পরও কমেনি মাদকের চোরাচালান।
পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার পর মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানের নামে কথিত ক্রসফায়ারের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এমন প্রশ্নের পর থেকে গত ৩০ দিনে মাদক উদ্ধারে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধের একটি ঘটনাও ঘটেনি। তবুও উদ্ধার হয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবার চালান।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সিনহা হত্যকারী প্রদীপ, লিয়াকত, নন্দসহ অভিযুক্তদের দফায় দফায় রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। ওই হত্যাকান্ড ঘটনাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি। এর মধ্যেও কক্সবাজারে মাদকের সরবরাহ কমেনি। সর্বশেষ ২৪ আগস্ট কক্সবাজারের সমুদ্র থেকে ১৩ লাখ পিস ইয়াবা আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। আটক না হলে এসব ইয়াবা প্রায় ৬৫ কোটি টাকায় বিক্রি হতো বলে জানিয়েছেন র্যাব।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে র্যাব-১৫ এর কক্সবাজারের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদি হাসান বলেন, মাদক পাচারকারীরা ভেবেছিল সাগরে সিগন্যাল থাকায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকবে না। তাই তারা বড় একটি চালান নিয়ে রওনা হয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাগরে অভিযান শুরু করে মাদকবাহী নৌকাটি আটক করি। সেখান থেকে ১৩ লাখ পিস ইয়াবা করা উদ্ধার করা হয়।
এর একদিন আগে ২৩ আগস্ট টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) ২০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করে এবং ২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে। যার বাজার মূল্য ৬০ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান সাংবাদিকদের বলেন, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ হোয়াইক্যং চেকপোস্টে তল্লাশি করে ইয়াবা জব্দ করা হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সুযোগ নেই এখানে।
তারও আগে ১৭ আগস্ট কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি) এক লাখ ৪০ হাজার পিস বার্মিজ ইয়াবা উদ্ধার করে। যার বাজার মূল্য ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩নং ঘুমধুম ইউপির দক্ষিণ রেজুআমতলী মসজিদের পার্শ্বে পাহাড়ের ঢালুতে সেখানে গুলি বিনিময়েরও ঘটনা ঘটে কিন্তু কোনো পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তারও আগে আগস্ট মাসেই টেকনাফে অভিযান চালিয়ে ১ আসামিসহ ৪ কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ ৪০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।