রিপাবলিকান দলীয় সম্মেলনে স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করে ভাষণ দিলেন মেলানিয়া ট্রাম্প। করোনা সঙ্কট ও বর্ণবাদ-বিরোধী প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি সহানুভ‚তি দেখালেন তিনি।

আড়ালে-অন্তরালেই তাঁকে বেশি দেখা যায়। এবার স্বামীর জন্য প্রচার করতে প্রকাশ্যে ভাষণ দিলেন অ্যামেরিকার ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবার আবেদন জানালেন তিনি। রিপাবলিকান দলের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে দেওয়া ভাষণে মেলানিয়া সেইসঙ্গে করোনা মহামারি ও বর্ণবাদের মতো কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ও তুলে ধরলেন।নির্বাচনের আর ৭০ দিন বাকি। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী ট্রাম্প কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটিক দলের জো বাইডেন জনপ্রিয়তার বিচারে তার তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। রিপাবলিকান দল তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবার দ্বিতীয় কার্যকালের জন্য মনোনীত করেছে। দলের সম্মেলনে একের পর এক বক্তা ট্রাম্পের পক্ষে ভাষণ দিচ্ছেন এবং বাইডেনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলে দেশ কীভাবে রসাতলে যাবে, সে বিষয়ে তারা সতর্ক করে দিচ্ছেন। কিন্তু মেলানিয়া ট্রাম্প সেই পথে না গিয়ে অনেক নরম সুরে স্বামীর পক্ষে সওয়াল করলেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বার বিভাজনের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিলেও মেলানিয়া খোলাখুলি ঐক্যের পক্ষে সওয়াল করলেন। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে তিনি মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চান না। কারণ এমন কথা দেশের মধ্যে বিভাজন আরও বাড়িয়ে তোলে, যেমনটা গত সপ্তাহে দেখা গেছে। তিনি করোনা মহামারির কারণে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। এ সঙ্কট মোকাবিলায় স্বামীর আন্তরিকতা তুলে ধরতে মেলানিয়া বলেন, ‘এমন ভয়াবহ মহামারির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সব মানুষের দেখাশোনা করা পর্যন্ত ডোনাল্ড বিশ্রাম নেবে না’। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ন্যয়বিচারের নামে হিংসা ও লুটপাট বন্ধ করারও আবেদন জানান তিনি। তার মতে, মানুষের ত্বকের রং দেখে কোনো অনুমান করা উচিত নয়।

২০১৬ সালে রিপাবলিকান দলের কনভেনশনে ভাষণ দিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন মেলানিয়া ট্রাম্প। ২০০৮ সালে প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার ভাষণের বেশ কিছু অংশ ‘চুরি’-র অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

করোনা সংকট ও তার পরিণাম হিসেবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে ট্রাম্প ব্যর্থ হয়েছেন, এমন অভিযোগ খÐন করতে একের পর এক বক্তা প্রেসিডেন্টের সাফল্য তুলে ধরেন। তারা মনে করিয়ে দেন, ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট› নীতি সামনে রেখে ট্রাম্প অনেক অর্থনৈতিক বিধিনিয়ম শিথিল করেছেন। হোয়াইট হাউসের অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ল্যারি কাডলো বলেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সুযোগ ও আশাবাদ চাইলে ভোটারদের ট্রাম্পকেই বেছে নিতে হবে। তা না হলে স্থবিরতা, মন্দা ও নৈরাশ্যের দিন আবার ফিরে আসবে।

দলীয় প্রচারের জন্য হোয়াইট হাউসকে বেছে নেওয়ার জন্য ট্রাম্প-দম্পতি ও রিপাবলিকান দলের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইসরাইল সফরে গিয়ে জেরুজালেম শহরের একটি বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে যেভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের ক‚টনৈতিক সাফল্য তুলে ধরেছেন, সেই বিষয়টিকেও দৃষ্টিকটু মনে করছেন সমালোচকরা। উল্লেখ্য, স¤প্রতি ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্তকে বড় সাফল্য হিসেবে তুলে ধরছে হোয়াইট হাউস। সূত্র : রয়টার্স, ডিপিএ।