Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিজেপির হিন্দুত্বনীতি না মানলে ‘দেশদ্রোহী’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

সম্প্রতি বলিউডের জনপ্রিয় তারকা আমির খান তুরস্ক গিয়েছিলেন তার ছবি লাল সিং চাড্ডার শুটিং এর লোকেশন ঠিক করতে। অক্টোবর থেকে ছবিটির শুটিং হবে সেখানে। সফরে ইস্তাম্বুলের প্রাসাদে গিয়ে তিনি দেখা করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এবং ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোগানের সঙ্গে।

তাদের এই সফরের ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে এই অভিনেতা চারদিক থেকে ট্রোলের শিকার হচ্ছেন। দু’দেশের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ না হওয়ায়, অনেকেই তুরস্কের ফার্স্ট লেডির সাথে দেখা করার জন্য মুসলিম এই তারকা নিন্দা করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তিনি তার কাজ বিক্রি করার জন্য ভারতে থাকেন, তবে একটি দেশ হিসাবে ভারতের প্রতি তার কী কোন প্রতিশ্রুতি নেই? এখনকার মতো আগে কখনও মানুষ তাকে এত অপছন্দ করেনি।’ তবে আমির খান এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

বিজেপি’র রাজনীতির সাথে তাল মিলিয়ে না চলায় এর আগেও বলিউড তারকাদেরকে সমালোচিত হতে হয়েছে। বলিউড তারকাদেরকে কীভাবে টিকে থাকার জন্য বিজেপি’কে তুষ্ট করে চলতে হয়, তা ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম গাল্ফ নিউজের প্রতিনিধি স্বাতী চতুর্বেদী। যখনই খানরা দলটির চরমপন্থী স্লোগানে সুর না মিলায়, তখনই বিতর্কের সৃষ্টি হয় যে, কেন তারা স্লোগান দিচ্ছে না। তাদেরকে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য মাধ্যমে কোনঠাসা করে ফেলা হয়।

‘বিজেপির এজেন্ডা স্পষ্ট,’ চতুর্বেদী বলেন, ‘সুপারস্টারদের আদর্শগতভাবে বিজেপির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এবং নির্বাচনী প্রচারে তাদের হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অন্যথায়, সরকার এবং তার ট্রোল বাহিনীর অবিরাম আক্রমণের মুখে পড়তে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুম্বাই চলচ্চিত্র জগত এখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে, বি এবং সি গ্রেডের কিছু শিল্পী, যারা সরাসরি বিজেপি’র সাথে যোগ দিয়েছে। অন্যদিকে, তিন খান- আমির, শাহরুখ এবং সালমানের মতো যারা আসল সুপারস্টার, তারা বিজেপি এবং মোদির কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন।’

বিজেপির ‘উদ্দেশ্যমূলক ও নিয়ন্ত্রিত ট্রলিং’ নিয়ে চতুর্বেদী ‘আই এম এ ট্রোল’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। ‘থ্রি ইডিয়টস’ খ্যাত তারকা আমির খান যে এই প্রথম নয়, এর আগেও সমালোচিত হয়েছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির ট্রল বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন, বইটিতে তা তুলে ধরা হয়েছে। চতুর্বেদী বলেন, ‘বিজেপির সিক্রেট ডিজিটাল আর্মি কীভাবে কাজ করে, তা আমি আমার অনুসন্ধানমূলক বই ‘আই এম এ ট্রোল’-এ ব্যাখা করেছি। ২০১৫ সালে ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলায় আমির খানকে একটি পরিকল্পিত এবং নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং সংগঠিত প্রচারণা চালিয়ে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের পদ থেকে বাদ দিেেতই-কমার্স সংস্থা স্ন্যাপডিলকে বাধ্য করেছিল।’

চতুর্বেদী দাবি করেন, ‘তুরস্ক নিয়ে তার দেশবাসীর কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখে আমির খান হতবাক ও আহত হয়েছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে। তিনি সেখানে শুধুমাত্র স্বাভাবিক সৌজন্য দেখিয়েছেন। বিজেপি এভাবেই রাজনীতি করে এবং এটি তারা অনেকদিন ধরেই করে আসছে। আমির বিতর্কে যোগ দেয়া পছন্দ করেন না।’ তিনি জানান, বিজেপির ম্যান্ডেট একদম পরিস্কার। যতক্ষণ তারকারা ‘হিন্দুত্ববাদ’ এর জন্য বিজেপির প্রশংসা করছেন, হাসিমুখে তাদের সাথে ছবি তুলছেন, ততক্ষণ সব ঠিক আছে। বিজেপির ইচ্ছামতো না চললে কী হতে পারে, বলিউড অভিনেতারা এখন তা ভালমতোই বুঝতে পারছেন।

এর আর একজন উদাহারন হচ্ছে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার জন্য বেশ কয়েকজন বলিউড শিল্পীকে অভিযুক্ত করেছিলেন তিনি। এই কারণেও তাকে সমালোচনা ও ট্রলের মুখে পড়তে হয়েছে। বিষয়টি আসলে অন্য কিছু নয়, মূলধারার রাজনীতিকে সমর্থন করার কারণে, তিনি যে বিষয় নিয়েই কথা বলুন, তাকে সমালোচনার শিকার হতে হবে। এ থেকেই স্পষ্ট হয়, বিজেপি কীভাবে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করে। চতুর্বেদীর ভাষায়, ‘যারা বিজেপি’র রাজনৈতিক চিত্রনাট্যে অভিনয় করবেন না, চলচ্চিত্র জগতে তাদের জায়গা হবে না।’ সূত্র : পাকিস্তান ট্রিবিউন।



 

Show all comments
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৪ আগস্ট, ২০২০, ৬:৪২ এএম says : 0
    মোদি লন্ডন এসেছিলো সেখানে আমাকেও invite করা হইয়াছিলো পরে আমাকে আর যাওয়ার জন্য বলা হয় নি। আমি মোদিকে পাইলে জুতা দিয়া কয়েকটি বারি, এই খোনিকে দিতাম। ইনশাআল্লাহ। আর ভারতীয় খান ওরা খান নামের কলংক। একতো ওদের মাঝে ইসলাম নাই, আরতো ওরা আছে ....... ভারতে। ভারতে মানুষের কোন মূল্য নাই। অমানুষের নেতৃত্ব। চি ওদের চি। ইনশাআল্লাহ। ভারতীয় লন্ডন হাইকমিশন হইতে ফোন করিয়া আমাকে বলেছিলো যে ওরা মামলা করিবে। ওরা কি মনে করে? মামলা করিলে আমাদের জয় হইবে। ওরা খোনি। ওরা মিত্যাবাদী। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • কামরুল ইসলাম ২৪ আগস্ট, ২০২০, ৮:১৫ এএম says : 0
    এই হলো গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের আসল চিত্র
    Total Reply(0) Reply
  • Unit chief ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১০:৪৩ এএম says : 0
    করোনার সময় শত কোটি টাকা দিয়ে সাহায্য করলো তখন আমির খান ভাল ছিলে। মুসলিম কারো আমন্ত্রণে দেখা করলে সেটা নিয়ে চুলকানি।
    Total Reply(0) Reply
  • Jaker ali ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১০:৪৩ এএম says : 0
    Copying Bangladeshi style!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Habib ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১০:৪৩ এএম says : 0
    এমনটিই হচ্ছে ভারতে
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১২:০৯ পিএম says : 0
    মোদি লন্ডন এসেছিলো সেখানে আমাকেও invite করা হইয়াছিলো পরে আমাকে আর যাওয়ার জন্য বলা হয় নি। আর ভারতীয় খান ওরা খান নামের কলংক। একতো ওদের মাঝে ইসলাম নাই। ভারতে মানুষের কোন মূল্য নাই। অমানুষের নেতৃত্ব। চি ওদের চি। ইনশাআল্লাহ। ভারতীয় লন্ডন হাইকমিশন হইতে ফোন করিয়া আমাকে বলেছিলো যে ওরা মামলা করিবে। ওরা কি মনে করে? মামলা করিলে আমাদের জয় হইবে। ওরা মিত্যাবাদী। ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ