মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানের সীমান্তে দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের একটি মূল রেল প্রকল্প থেকে ‘বাদ পড়ার’ পর গত দশ বছর ধরে পাইপলাইনে থাকা এ দেশের একটি উচ্চাকাক্সক্ষী গ্যাস ক্ষেত্র প্রকল্পও হারাতে বসেছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তেহরান পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে ফরজাদ-বি গ্যাস ক্ষেত্রটি ‘নিজস্বভাবে’ গড়ে তুলবে এবং পরবর্তীকালে যথাযথভাবে ভারতকে জড়িত করতে পারে।
গত সপ্তাহে ন্যাশনাল ইরানি অয়েল কোম্পানির (এনআইওসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসউদ কার্বাসিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারতের ওএনজিসির পরিবর্তে গ্যাস ক্ষেত্রটি বিকাশের জন্য একটি নতুন অপারেটর নিয়োগ করা হয়েছে।
২১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ, ১২.৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ২১২ মিলিয়ন ব্যারেল গ্যাসের কনডেনসেটের এ ক্ষেত্রটি ২০০৮ সালে ওএনজিসি, অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন -এই তিনটি ভারতীয় সংস্থার কনসোর্টিয়াম আবিষ্কার করেছিল। চুক্তি অনুসারে ভারতীয় পক্ষের ফিল্ডটি উন্নয়নের কথা ছিল, কিন্তু তারা ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তীব্র করার পরে ২০১২ সালে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান ও পাশ্চাত্য দেশগুলির মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর ২০১৫ সালে নিষেধাজ্ঞা সহজ হওয়ার পর ভারত এ প্রকল্পে ফিরে আসতে রাজি হয়েছিল।
যাইহোক, ২০১৮ সালের মে মাসে ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মধ্যে পরিস্থিতি আবারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, যা ভারতকে এ প্রকল্পে অগ্রসর হওয়া থেকে আরও নিরুৎসাহিত করে বলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধকারী এ ইস্যুটির সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। সূত্রগুলো জানায়, ২০১৮ সালের মে মাসের মধ্যেই উভয়পক্ষ অসাধারণ অগ্রগতি করে এবং প্রকল্পের মূল বিবরণে একমত হয়েছে। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ধ্বংসাত্মক ভ‚মিকা পালন করেছে’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষত কতকগুলো পাইপলাইন স্থাপন করা হবে এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় আর্থিক বিনিয়োগের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মতভেদ ছিল।
২০১৯ সালের মে মাসে ইরানের তেলমন্ত্রী বিজান নামদার জাঙ্গানেহে বলেছিলেন, তার মন্ত্রণালয় ফরজাদ-বি গ্যাস ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য অর্থায়নের পরিকল্পনা করেছে। এনআইওসি ভারতীয় পক্ষকে এ ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য একটি আর্থিক পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছিল। তবে তেহরান এ পরিকল্পনা নিয়ে ‘মুগ্ধ হয়নি’ এবং নতুন একটি পরিকল্পনা চেয়েছিল বলে সূত্র জানিয়েছে। ভারতের ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গেছে।
২০১৯ সালের আগস্টে ভারতীয় পক্ষের একটি নতুন পরিকল্পনা জমা দেয়ার ধীরগতির পর কার্বাসিয়ান বলেছিলেন যে, এ প্রকল্পের জন্য ইরান অন্য অপারেটরের দিকে এগিয়ে যাবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বলেছে, ইরানের পক্ষ থেকে নীতিগত পরিবর্তনের কারণে ‘ফলো-আপ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা’ প্রভাবিত হয়েছিল।
তেহরান-ভিত্তিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্লেষকরা আনাদোলু এজেন্সিকে বলেছেন, যেহেতু ফরজাদ-বি গ্যাস ক্ষেত্র এবং চাবাহার বন্দর দুটি দ্বিপাক্ষিক সাফল্য ছিল, তাই প্রকল্প দু’টি থেকে ভারতকে বাদ দেয়া দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ‘বড় ধাক্কা’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় পক্ষ কাজ শুরু করতে অনীহা দেখানোর পরে ইরান একটি রেল প্রকল্প থেকে ভারতকে ‘বাদ দিয়েছে’। বন্দর শহর চাবাহার থেকে জাহেদান পর্যন্ত ৬২৮ কিলোমিটার রেলপথটি নির্মাণের সমঝোতা স্মারকটি ২০১৬ সালের মে মাসে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথম আলোচনা হয়েছিল।
এটি দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের চাবাহার বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত পরিবহন ও বাণিজ্য করিডোর বিকাশের জন্য ভারত, ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরের এক পর্যায়ে এসেছিল। বন্দরটি ২০১৬ সাল থেকে চালু হয়েছে এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।