মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত বছর জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের এয়ারস্ট্রাইকে কেউ নিহত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া না গেলেও সেই ঘটনাকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে দারুণভাবে ব্যবহার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর মাধ্যমে তিনি নিজের একটি অতিমানবীয় ভাবমূর্তি সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তার দল নির্বাচনী প্রচারণায় জনগণকে বিশ্বাস করাতে পেরেছিল যে, মোদি দেশের শত্রুকে দারুণ শিক্ষা দিতে পারেন।
কিন্তু, পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সাথে সংঘর্ষের পরে সেই মোদিকেই দেখা গেছে একেবারে চুপসে যেতে। এ ঘটনা মোদির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরাজয় বললে ভুল হয় না। এর ফলে বড় ধরণের উভয় সংকটের মধ্যে পড়ে গিয়েছেন তিনি। চীনে যে বালাকোটের মতো কোন নাটক করা সম্ভব নয়, সেটি ভালোমতোই জানেন তিনি। আবার, এতদিন যেই সেনাবাহিনীর বড়াই করে ৫৬ ইঞ্চি বুকের ছাতি দেখিয়ে বেড়িয়েছেন, শত্রুকে গুড়িয়ে দেয়ার কথা বলেছেন, তা নিয়ে যে চীনের সামনে দাঁড়ানো যাবে না তা জনগণের কাছে প্রকাশও করতে পারছেন না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এখন পুঁচকে নেপালও ভারতকে পরোয়া করছে না। প্রমাণ হয়ে গেছে, তার প্রশাসন রাজনীতিতে যতটা পাকা, পররাষ্ট্র নীতিতে ততটাই কাঁচা। ফলে, নিজের ইমেজ বাঁচাতে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মোদি।
এমন পরিস্থিতিতেই, গতকাল আকস্মিক সফরে লাদাখে যান মোদি। তার সঙ্গে ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং সেনা প্রধান জেনারেল এমএম নারাভানে। গলওয়ানে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাতের পরে এই প্রথম লাদাখে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সেখানে তাকে যেমন নমনীয় রূপে দেখা গেল, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। লাদাখে যেয়ে তিনি শান্তির বার্তা শুনিয়ে বলেন, ‘দুর্বলেরা নয়, শান্তির কথা বলতে পারেন বীরেরাই।’ চীনের উদ্দেশ্যে তার বক্তব্য, ‘আমরা শান্তি চাই, তবে প্রয়োজনে দেশের সুরক্ষায় হাতিয়ার ব্যবহারেও পিছপা হই না।’
পাশাপাশি, সেনাবাহিনীকে তুষ্ট করতে তাদের অকুন্ঠ প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় সেনার সাহস ও দেশমাতৃকার প্রতি তাদের আত্মনিবেদনের কোনও তুলনা হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরে বসবাসকারী প্রত্যেক ভারতীয় এই কথা বিশ্বাস করেন যে আপনারা দেশকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম। যে প্রাকৃতিক পরিবেশে আপনারা এই অসম সাহসের পরিচয় দিচ্ছেন, তা সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। আপনারা বারবার প্রমাণ করেছেন যে ভারতীয় সেনাবাহিনীই পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সাহসী এবং ক্ষমতাশালী।’
তবে চীনের কাছে হারানো ভূ-খন্ড কিভাবে উদ্ধার করবেন, ভারত যে এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে, সেখান থেকে চীন যে সেনা না সড়িয়ে উল্টো নতুন নতুন স্থাপণা নির্মাণ করে নিজেদের অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করে চলেছে, তার বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নেয়া হবে, সে সমস্ত বিষয় বরাবরের মতোই এড়িয়ে গেলেন তিনি। শুধু জানিয়েছেন, সীমান্তে পরিকাঠামো নির্মাণে খরচ তিনগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে সেখানে আরও দ্রুত সড়ক ও সেতু তৈরি হবে।
এদিকে, মোদির সফর নিয়ে একই দিনে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, ‘ভারত ও চীন আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এমন সময়ে কোনও পক্ষেরই উচিত নয় এমন কোনও পদক্ষেপ নেয়া, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।’ পাশাপাশি ৫৯টি চীনা অ্যাপের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত যে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে সেই ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের স্বার্থই ক্ষুন্ন করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্তে শান্তি ফেরাতে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। চীনা ব্যবসায়ীদের অধিকার ভারতে নিশ্চিত করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে বেইজিং।’
লাদাখে বিতর্কিত এলাকার প্রায় পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে চীন। সেখান থেকে তাদেরকে সরাতে হলে ক‚টনৈতিক সমঝোতা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই ভারতের সামনে। কিন্তু, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে এটি স্পষ্ট যে, নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত থেকে ভারত সরে না আসলে কোন ছাড়ই দেবে না তারা। সূত্র : টাইমস নাউ, ডিএনএ ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।